জামায়াতে ইসলামী এখন ‘পতিত ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে’ কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘এখন আবার তারা স্বরূপে বেরিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চাচ্ছেন, ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাচ্ছেন। কিন্তু এটাও আমাদের মনে রাখতে হবে, ওই দেশটি শেখ হাসিনার মতো রক্তপিপাসু দানবকে প্রশ্রয় দিয়েছে নিজ দেশের মানুষকে হত্যা করার জন্য।’
গতকাল রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ সন্দেহের কথা জানান রুহুল কবির রিজভী।
জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি দীর্ঘদিন জোটবদ্ধ হয়ে রাজনীতি করেছে। তবে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর থেকে দুই দলে নেতাদের নানা বক্তবে ব্যবধান স্পষ্ট হয়েছে।
জামায়াত আওয়ামী লীগের ‘পুনর্বাসন চাচ্ছে’ মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘এ দেশের মানুষ মধ্যপন্থি, এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু গণতন্ত্রপ্রিয়। তারা কথা বলতে চায় নির্ভয়ে, তারা এক-দুই বেলা কম খেলেও কণ্ঠের আওয়াজ তীব্র করতে চায়। সে দেশের মানুষকে জোর করে ফ্যাসিবাদের নতুন ধারায় কেউ যদি মনে করে যে নিয়ে আসতে চাইবে, এটা জনগণ হতে দেবে না।’
বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দেশে ইসলামপন্থি একটি রাজনৈতিক দল বরাবরই আমার মনে হয়েছে আওয়ামী লীগকে সন্তুষ্ট করার জন্য কাজ করছে। তারা এ দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে শহীদ জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে। তারা নিষিদ্ধ দল ছিল।’
শহীদ জিয়া তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু এমন কোনো তাদের মিটিং নাই, এমন কোনো তাদের কর্মসূচি নাই যে, তারা স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন নাই। এরপরে আমরা দেখেছি, প্রতিটি ঘটনায় তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে, আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করেছেন।’
নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে এইচএম এরশাদের সময়ে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দেন রিজভী। বিএনপি ওই নির্বাচন বর্জন করলেও আওয়ামী লীগ ও জামায়াত তাতে অংশ নিয়েছিল।
জামায়াতে ইসলামীর অতীত তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘৮৬ সালে নির্বাচনে যাওয়া, সেটায় আওয়ামী লীগ গেছে। মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এক, আর কাজ করেছে আরেক। ঠিক একইভাবে তারাও (জামায়াতে ইসলামী) করেছে। এরপরে আমরা দেখেছি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ যে আন্দোলন করলো, জ্বালাও-পোড়াও যে আন্দোলন হয়েছিল, সেই আন্দোলন আওয়ামী লীগের সঙ্গে তারাও করেছে।’
নব্বই দশকের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রিজভী বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় ওই সময়ে তারা (জামায়াত) হত্যাও করেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র টিটোকে শিবির গুলি করে হত্যা করেছিল, ১৯৯৫-৯৬ সালে যে আন্দোলন হয়েছিল, এটা তো কারও ভুলে যাওয়ার কথা নয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) যেতে চাননি, তাদের (জামায়াত) নেতারা বাধ্য করেছিল, না হলে তারা স্বতন্ত্রভাবে করবে।’
‘উপদেষ্টা-আমলার কর্মকাণ্ড
নিয়ে প্রশ্ন’:
অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টার কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘আজকে গণমাধ্যমে এসেছে, উপদেষ্টা সজীব ভূঁইয়া (আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া) তার নিজ এলাকায় সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ নিয়েছেন। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।’
এটাকে এক ধরনের ‘বৈষম্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ কাজ মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের এলাকা উন্নয়নের নামে ভবিষ্যতে এমপি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।’
একজন উপদেষ্টা কিংবা একজন সরকারি উচ্চ পর্যায়ের আমলা কি নিজের এলাকায় হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারি বরাদ্দ নিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাতে পারেন- এমন প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ‘সারাদেশকে বঞ্চিত রেখে এটি করা সম্পূর্ণরূপে অনৈতিক এবং নীতিবিরোধী। আমরা শুনেছি, কেবিনেট সচিব একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুগত। তিনি হয়তো অবসরের পরে নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেন। এটি দুঃখজনক এবং সরকারি শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতার পরিপন্থী।’
বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জামায়াতে ইসলামী এখন ‘পতিত ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে’ কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘এখন আবার তারা স্বরূপে বেরিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চাচ্ছেন, ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাচ্ছেন। কিন্তু এটাও আমাদের মনে রাখতে হবে, ওই দেশটি শেখ হাসিনার মতো রক্তপিপাসু দানবকে প্রশ্রয় দিয়েছে নিজ দেশের মানুষকে হত্যা করার জন্য।’
গতকাল রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ সন্দেহের কথা জানান রুহুল কবির রিজভী।
জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি দীর্ঘদিন জোটবদ্ধ হয়ে রাজনীতি করেছে। তবে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর থেকে দুই দলে নেতাদের নানা বক্তবে ব্যবধান স্পষ্ট হয়েছে।
জামায়াত আওয়ামী লীগের ‘পুনর্বাসন চাচ্ছে’ মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘এ দেশের মানুষ মধ্যপন্থি, এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু, কিন্তু গণতন্ত্রপ্রিয়। তারা কথা বলতে চায় নির্ভয়ে, তারা এক-দুই বেলা কম খেলেও কণ্ঠের আওয়াজ তীব্র করতে চায়। সে দেশের মানুষকে জোর করে ফ্যাসিবাদের নতুন ধারায় কেউ যদি মনে করে যে নিয়ে আসতে চাইবে, এটা জনগণ হতে দেবে না।’
বিএনপির জেষ্ঠ্য যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দেশে ইসলামপন্থি একটি রাজনৈতিক দল বরাবরই আমার মনে হয়েছে আওয়ামী লীগকে সন্তুষ্ট করার জন্য কাজ করছে। তারা এ দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে শহীদ জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে। তারা নিষিদ্ধ দল ছিল।’
শহীদ জিয়া তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু এমন কোনো তাদের মিটিং নাই, এমন কোনো তাদের কর্মসূচি নাই যে, তারা স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন নাই। এরপরে আমরা দেখেছি, প্রতিটি ঘটনায় তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে, আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করেছেন।’
নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে এইচএম এরশাদের সময়ে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দেন রিজভী। বিএনপি ওই নির্বাচন বর্জন করলেও আওয়ামী লীগ ও জামায়াত তাতে অংশ নিয়েছিল।
জামায়াতে ইসলামীর অতীত তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘৮৬ সালে নির্বাচনে যাওয়া, সেটায় আওয়ামী লীগ গেছে। মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এক, আর কাজ করেছে আরেক। ঠিক একইভাবে তারাও (জামায়াতে ইসলামী) করেছে। এরপরে আমরা দেখেছি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ যে আন্দোলন করলো, জ্বালাও-পোড়াও যে আন্দোলন হয়েছিল, সেই আন্দোলন আওয়ামী লীগের সঙ্গে তারাও করেছে।’
নব্বই দশকের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রিজভী বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় ওই সময়ে তারা (জামায়াত) হত্যাও করেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র টিটোকে শিবির গুলি করে হত্যা করেছিল, ১৯৯৫-৯৬ সালে যে আন্দোলন হয়েছিল, এটা তো কারও ভুলে যাওয়ার কথা নয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) যেতে চাননি, তাদের (জামায়াত) নেতারা বাধ্য করেছিল, না হলে তারা স্বতন্ত্রভাবে করবে।’
‘উপদেষ্টা-আমলার কর্মকাণ্ড
নিয়ে প্রশ্ন’:
অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টার কর্মকাণ্ডে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘আজকে গণমাধ্যমে এসেছে, উপদেষ্টা সজীব ভূঁইয়া (আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া) তার নিজ এলাকায় সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ নিয়েছেন। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।’
এটাকে এক ধরনের ‘বৈষম্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ কাজ মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের এলাকা উন্নয়নের নামে ভবিষ্যতে এমপি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।’
একজন উপদেষ্টা কিংবা একজন সরকারি উচ্চ পর্যায়ের আমলা কি নিজের এলাকায় হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারি বরাদ্দ নিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাতে পারেন- এমন প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ‘সারাদেশকে বঞ্চিত রেখে এটি করা সম্পূর্ণরূপে অনৈতিক এবং নীতিবিরোধী। আমরা শুনেছি, কেবিনেট সচিব একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুগত। তিনি হয়তো অবসরের পরে নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেন। এটি দুঃখজনক এবং সরকারি শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতার পরিপন্থী।’