প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত কর্মকতাদের’ আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।
বৃহস্পতিবার সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান মঈন খান।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখ লোকবল প্রয়োজন হয়। তাই যারা বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ, তাদের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে—এটাই ছিল তাদের আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয়।
বৈঠকে ভোটের পরিবেশ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ইসির প্রতি আস্থা এবং গণভোট নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান তিনি।
বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ ও ইসির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ জকরিয়া। তারা তিনজনই বিএনপির নির্বাচন কমিশন বিষয়ক কমিটির সদস্য।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করে। বুধবার এনসিপির সঙ্গে বৈঠকের পর সন্ধ্যায় জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেন।
বিএনপি ওই বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানায়। অপরদিকে, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এনসিপি জানায়, তারা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা পোষণ করে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা জানায়।
এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়।
বৈঠক শেষে আবদুল মঈন খান বলেন, “বিগত তিনটি নির্বাচন ছিল প্রহসন। ১৫ বছর ধরে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা ১৫ মাসে পরিবর্তিত হবেন না। বাস্তবতা বিবেচনা করেই এগোতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি। সেই গুরু দায়িত্ব আজকের নির্বাচন কমিশনের ওপর বর্তায়। কেবল এই পাঁচজন কমিশনারই নয়, প্রায় ১০ লাখ জনবল লাগবে নির্বাচনে।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, অতীতের তিনটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
“এই বিশাল জনবল কারা হবেন, তা বিবেচনায় রাখতে হবে। গত ১৭ বছরে প্রশাসনিক বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করা হয়েছে। সেই কর্মকর্তারাই নির্বাচনের দিন নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কমিশনের সামনে তুলেছি।”
রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারসহ মোট ৯–১০ লাখ লোক ভোটের দায়িত্বে থাকেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে যুক্ত থাকেন আরও ৭–৮ লাখ সদস্য।
মঈন খান বলেন, “গত ১৫ মাসে সবকিছু একেবারে বদলে যাবে—এমনটা আশা করা বাস্তবসম্মত নয়। তাই নির্বাচন কমিশনকে অত্যন্ত সতর্কভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিশেষ করে যেসব কর্মকর্তা বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ, তারা যেন কোনোভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে না পারেন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ বছর প্রশাসনিক কাঠামো একটি নির্দিষ্টভাবে পরিচালিত হয়েছে। তাদের সবাইকে বাদ দিয়ে নতুন করে সিস্টেম তৈরি করা অবাস্তব। বাস্তবতা কঠিন, সেটিই বিবেচনায় নিতে হবে।”
আইনশৃঙ্খলা ও ইসির প্রতি আস্থা
বিএনপি প্রতিনিধি দল আশা প্রকাশ করেছে, নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে এবং ভোটের দিন উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হবে।
আবদুল মঈন খান বলেন, “সরকার ও নির্বাচন কমিশন যদি দৃশ্যমানভাবে প্রমাণ করতে পারেন যে তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান, তাহলে জনগণের ভয় কেটে যাবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের দিন বিশৃঙ্খলা বা অস্থিরতার আশঙ্কা থাকলেও আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন এমন ব্যবস্থা নেবে যাতে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হয়।”
সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে আয়োজনের বিষয়ে বিএনপির অবস্থানও বৈঠকে তুলে ধরা হয় বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত কর্মকতাদের’ আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।
বৃহস্পতিবার সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান মঈন খান।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখ লোকবল প্রয়োজন হয়। তাই যারা বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ, তাদের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে—এটাই ছিল তাদের আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয়।
বৈঠকে ভোটের পরিবেশ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ইসির প্রতি আস্থা এবং গণভোট নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান তিনি।
বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ ও ইসির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ জকরিয়া। তারা তিনজনই বিএনপির নির্বাচন কমিশন বিষয়ক কমিটির সদস্য।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করে। বুধবার এনসিপির সঙ্গে বৈঠকের পর সন্ধ্যায় জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেন।
বিএনপি ওই বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানায়। অপরদিকে, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এনসিপি জানায়, তারা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা পোষণ করে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা জানায়।
এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়।
বৈঠক শেষে আবদুল মঈন খান বলেন, “বিগত তিনটি নির্বাচন ছিল প্রহসন। ১৫ বছর ধরে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা ১৫ মাসে পরিবর্তিত হবেন না। বাস্তবতা বিবেচনা করেই এগোতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি। সেই গুরু দায়িত্ব আজকের নির্বাচন কমিশনের ওপর বর্তায়। কেবল এই পাঁচজন কমিশনারই নয়, প্রায় ১০ লাখ জনবল লাগবে নির্বাচনে।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, অতীতের তিনটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
“এই বিশাল জনবল কারা হবেন, তা বিবেচনায় রাখতে হবে। গত ১৭ বছরে প্রশাসনিক বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করা হয়েছে। সেই কর্মকর্তারাই নির্বাচনের দিন নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কমিশনের সামনে তুলেছি।”
রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারসহ মোট ৯–১০ লাখ লোক ভোটের দায়িত্বে থাকেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে যুক্ত থাকেন আরও ৭–৮ লাখ সদস্য।
মঈন খান বলেন, “গত ১৫ মাসে সবকিছু একেবারে বদলে যাবে—এমনটা আশা করা বাস্তবসম্মত নয়। তাই নির্বাচন কমিশনকে অত্যন্ত সতর্কভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিশেষ করে যেসব কর্মকর্তা বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ, তারা যেন কোনোভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে না পারেন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ বছর প্রশাসনিক কাঠামো একটি নির্দিষ্টভাবে পরিচালিত হয়েছে। তাদের সবাইকে বাদ দিয়ে নতুন করে সিস্টেম তৈরি করা অবাস্তব। বাস্তবতা কঠিন, সেটিই বিবেচনায় নিতে হবে।”
আইনশৃঙ্খলা ও ইসির প্রতি আস্থা
বিএনপি প্রতিনিধি দল আশা প্রকাশ করেছে, নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে এবং ভোটের দিন উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হবে।
আবদুল মঈন খান বলেন, “সরকার ও নির্বাচন কমিশন যদি দৃশ্যমানভাবে প্রমাণ করতে পারেন যে তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান, তাহলে জনগণের ভয় কেটে যাবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের দিন বিশৃঙ্খলা বা অস্থিরতার আশঙ্কা থাকলেও আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন এমন ব্যবস্থা নেবে যাতে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হয়।”
সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে আয়োজনের বিষয়ে বিএনপির অবস্থানও বৈঠকে তুলে ধরা হয় বলে জানান তিনি।