ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, শেষ পর্যন্ত সবাইকে জনগণের কাছে যেতে হবে নির্বাচনের জন্য। কারণ আমরা গত ১৫/১৬ বছর আন্দোলন করেছি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। দেশের মানুষ ভোটের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে এমন একটি জাতি ও দেশ তৈরি করতে হবে যাতে কোনো ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারের উত্থান না ঘটে। স্বাধীন বিচার বিভাগ, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। তবে স্বৈরাচারের দোসরদের বহাল রেখে স্বাধীন বিচার বিভাগ সম্ভব নয়।
সোমবার, (১৭ নভেম্বর ২০২৫) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষার রূপান্তর: একটি কৌশলগত রোডম্যাপ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে কিছু মহল উঠে পড়ে লেগেছে। এদের যত দাবি-দাওয়া সব নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য। তবে এসব দলের মনে যেটাই ভেসে বেড়াক না কেন, শেষমেষ সবাইকে নির্বাচনে আসতে হবে।
জুলাই সনদ ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যমত্যের নামে অনৈক্য তৈরির চেষ্টা হয়েছে। তবে আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিষয়টিকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। জাতীয় সার্বভৌমত্বকে কখনো কোনো আদেশ দিয়ে বাধ্য করা যায় না। কারণ দেশের সর্বোচ্চ সার্বভৌমত্ব হলো জাতীয় সংসদ। মানুষ ভোট দিয়ে তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করে। জুলাই সনদে গণভোট নিয়ে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে তাতে মনে হয় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা লোকেরাও সেটি পড়তে অনেক সময় লাগবে।
তিনি বলেন, যাহোক দেশে একটি আদেশ জারি হয়েছে। দেশে আদেশ জারির কোনো ইতিহাসও নেই এবং এ ধরনের আদেশের ভবিষ্যৎ নেই। এ বিষয়ে সাংবিধানিক আইনী বৈধতা নেই। এদের (সরকার) উদ্দেশ্যে হলো- একটি লিগ্যাল কেওয়াজ তৈরি করা।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতি গঠনে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। ৩১ দফা রুপরেখা সেটিরই উদ্যোগ। আমরা একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ নেব। দেশের অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থা সব কিছুকেই পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
দেশকে বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন যেভাবে করা হয়েছে। আমরা প্রায় বলে থাকি যদি কোনো দেশকে ধ্বংস করতে চাও তবে তার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করো। গণহারে জিপিএ ফাইভ দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা ধংস করা হয়েছে। এদেশে যেভাবে কালচারাল হেজিমনি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলো তার সঙ্গে ব্রিটিশদের মিল রয়েছে। আমাদের দেশে এমন জাতি তৈরি করা হয়েছে যে, তারা রক্তে ও মাংসে বাংলাদেশি কিন্তু চিন্তা ভাবনায় ভারতীয়। খুব সুক্ষ্মভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে। দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় তারা সেটি করেছে। অথচ শেখ হাসিনা যেভাবে জোরপূর্বক গুম খুন করে একটি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলো সে বিষয়ে কিন্তু ওই বুদ্ধিজীবীরা লেখেন না, বলেন না। সেই বুদ্ধিজীবীরা কিন্তু দেশেই আছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা সব কিছুর সমন্বয়ে দেশ পরিচালনার স্বপ্ন দেখি। একটি সম্মিলিত ক্যানভাস তৈরির জন্য কাজ করতে হবে। সেই পরিকল্পনার মধ্যে অবশ্যই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও আধুনিক বিজ্ঞানকে ধারণ করতে হবে। আমরা শুধু অন্যের থেকে নেব সেটি যেন না হয় বরং আমার সেলার বা বিক্রয় করতে পারি সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য শিক্ষকদের কাজ করতে হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে প্রয়োজন ভিত্তিক সিলেবাস তৈরি করতে হবে। সবাইকে মাস্টার ডিগ্রি পাশ হতে হবে এটি যেন নিয়ম হয়ে গেছে। অথচ বিদেশে কিন্তু তা নয়। আমাদের মানসিক সংস্কার দরকার। তাই না হলে তো যত সংবিধান বা আইনের সংস্কার করি না কেনো কাজ হবে না।
ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সেমিনার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এমএ কাউসার ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান প্রমুখ।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, শেষ পর্যন্ত সবাইকে জনগণের কাছে যেতে হবে নির্বাচনের জন্য। কারণ আমরা গত ১৫/১৬ বছর আন্দোলন করেছি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। দেশের মানুষ ভোটের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে এমন একটি জাতি ও দেশ তৈরি করতে হবে যাতে কোনো ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারের উত্থান না ঘটে। স্বাধীন বিচার বিভাগ, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। তবে স্বৈরাচারের দোসরদের বহাল রেখে স্বাধীন বিচার বিভাগ সম্ভব নয়।
সোমবার, (১৭ নভেম্বর ২০২৫) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষার রূপান্তর: একটি কৌশলগত রোডম্যাপ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে কিছু মহল উঠে পড়ে লেগেছে। এদের যত দাবি-দাওয়া সব নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য। তবে এসব দলের মনে যেটাই ভেসে বেড়াক না কেন, শেষমেষ সবাইকে নির্বাচনে আসতে হবে।
জুলাই সনদ ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যমত্যের নামে অনৈক্য তৈরির চেষ্টা হয়েছে। তবে আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিষয়টিকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। জাতীয় সার্বভৌমত্বকে কখনো কোনো আদেশ দিয়ে বাধ্য করা যায় না। কারণ দেশের সর্বোচ্চ সার্বভৌমত্ব হলো জাতীয় সংসদ। মানুষ ভোট দিয়ে তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করে। জুলাই সনদে গণভোট নিয়ে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে তাতে মনে হয় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা লোকেরাও সেটি পড়তে অনেক সময় লাগবে।
তিনি বলেন, যাহোক দেশে একটি আদেশ জারি হয়েছে। দেশে আদেশ জারির কোনো ইতিহাসও নেই এবং এ ধরনের আদেশের ভবিষ্যৎ নেই। এ বিষয়ে সাংবিধানিক আইনী বৈধতা নেই। এদের (সরকার) উদ্দেশ্যে হলো- একটি লিগ্যাল কেওয়াজ তৈরি করা।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতি গঠনে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। ৩১ দফা রুপরেখা সেটিরই উদ্যোগ। আমরা একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ নেব। দেশের অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থা সব কিছুকেই পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
দেশকে বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন যেভাবে করা হয়েছে। আমরা প্রায় বলে থাকি যদি কোনো দেশকে ধ্বংস করতে চাও তবে তার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করো। গণহারে জিপিএ ফাইভ দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা ধংস করা হয়েছে। এদেশে যেভাবে কালচারাল হেজিমনি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলো তার সঙ্গে ব্রিটিশদের মিল রয়েছে। আমাদের দেশে এমন জাতি তৈরি করা হয়েছে যে, তারা রক্তে ও মাংসে বাংলাদেশি কিন্তু চিন্তা ভাবনায় ভারতীয়। খুব সুক্ষ্মভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে। দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় তারা সেটি করেছে। অথচ শেখ হাসিনা যেভাবে জোরপূর্বক গুম খুন করে একটি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলো সে বিষয়ে কিন্তু ওই বুদ্ধিজীবীরা লেখেন না, বলেন না। সেই বুদ্ধিজীবীরা কিন্তু দেশেই আছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা সব কিছুর সমন্বয়ে দেশ পরিচালনার স্বপ্ন দেখি। একটি সম্মিলিত ক্যানভাস তৈরির জন্য কাজ করতে হবে। সেই পরিকল্পনার মধ্যে অবশ্যই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও আধুনিক বিজ্ঞানকে ধারণ করতে হবে। আমরা শুধু অন্যের থেকে নেব সেটি যেন না হয় বরং আমার সেলার বা বিক্রয় করতে পারি সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য শিক্ষকদের কাজ করতে হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে প্রয়োজন ভিত্তিক সিলেবাস তৈরি করতে হবে। সবাইকে মাস্টার ডিগ্রি পাশ হতে হবে এটি যেন নিয়ম হয়ে গেছে। অথচ বিদেশে কিন্তু তা নয়। আমাদের মানসিক সংস্কার দরকার। তাই না হলে তো যত সংবিধান বা আইনের সংস্কার করি না কেনো কাজ হবে না।
ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সেমিনার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এমএ কাউসার ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান প্রমুখ।