ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায় ঘোষণা প্রসঙ্গে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিচার প্রক্রিয়া যেন প্রতীকী পর্যায়ে সীমাবদ্ধ না থাকে, এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। বুধবার, (১৯ নভেম্বর ২০২৫) দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, অপরাধ যেই করুক না কেন তাকে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে এবং বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও প্রশ্নমুক্ত হতে হবে। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচারের ক্ষেত্রে সবকিছু সেরূপ আকাক্সক্ষানুসারে না হলেও সেই বিচারের সূচনা হয়েছে এবং তার প্রথম রায় ঘোষণা হয়েছে। তবে একথা মনে রাখতে হবে, বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। প্রদত্ত রায় সম্পর্কে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল ও তার রায় পাওয়া পর্যন্ত বিচার প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়েছে বলা যায় না। বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে কেউ যেন কোনো প্রশ্ন না তুলতে পারে এবং তা যেন ‘প্রতিহিংসা’ অথবা ‘ফাইল ঠিক রাখার’ উদ্দেশ্যে একটি প্রতীকী পদক্ষেপ না হয়, বিচার প্রক্রিয়ার অবশিষ্ট পর্বগুলো কোনো অজুহাতেই যেন কোনো মহল দ্বারা যেন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত বা প্রভাবিত না হয়, সে বিষয়ে বিশেষভাবে হুঁশিয়ার থাকতে হবে।
নেতারা বলেন, এ মামলার পরবর্তী ধাপগুলোই শুধু নয়, অন্য যারা অপরাধ করেছে তাদের সকলের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। যেহেতু ন্যায়বিচার পেতে হলে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বহাল থাকাটা অত্যাবশ্যক, তাই সব অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য প্রতিশ্রুতি অনুসারে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অবিলম্বে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ও তফসিল ঘোষণা অপরিহার্য।
সরকারের সব কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকলে ‘ন্যায়বিচারের’ বিষয়ে তার আন্তরিকতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। যেমন, মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে যে ট্রাইব্যুনালের বিচার সরাসরি টেলিভিশনে দেখানো হলেও, চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও তার নিয়ন্ত্রণ আমেরিকাকে দিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে সরকার, লুকোচুরির আশ্রয় নিয়ে, বলতে গেলে প্রায় সংগোপনে, চুক্তি স্বাক্ষর করল কেন? এ থেকে মানুষের মাঝে সন্দেহ জেগেছে, সরকারের আসল এজেন্ডা হয়তো অন্যকিছু। ন্যায়বিচারের বিষয়টি তার কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়, ট্রাইব্যুনালের বিচার চলছে ‘প্রতিহিংসার’ জন্য অথবা লোক দেখানো ‘প্রতীকী’ পদক্ষেপ হিসেবে। এরকম হলো বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে মানুষের আস্থাহীনতা বাড়বে এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের শিকার ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি কঠিন হবে।
নেতারা বিবৃতিতে শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ফাইয়াজ, সিপিবি নেতা কমরেড প্রদীপ ভৌমিক, ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী রিজভী, তাহের জামান প্রিয়, সাপ্তাহিক একতার কর্মী আতিক, হকারনেতা ইউসুফ সানোয়ার, গার্মেন্টস শ্রমিকনেতা আশরাফুলসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সব শ্রমজীবী, শিক্ষার্থী, শিশু ও নারী হত্যাকাণ্ডের দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
তারা বিবৃতিতে আরও বলেন, দণ্ডপ্রাপ্তদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কি আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে সেটা জনগণকে জানাতে হবে। বিচার যেন প্রতীকী না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায় ঘোষণা প্রসঙ্গে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিচার প্রক্রিয়া যেন প্রতীকী পর্যায়ে সীমাবদ্ধ না থাকে, এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। বুধবার, (১৯ নভেম্বর ২০২৫) দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, অপরাধ যেই করুক না কেন তাকে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে এবং বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও প্রশ্নমুক্ত হতে হবে। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচারের ক্ষেত্রে সবকিছু সেরূপ আকাক্সক্ষানুসারে না হলেও সেই বিচারের সূচনা হয়েছে এবং তার প্রথম রায় ঘোষণা হয়েছে। তবে একথা মনে রাখতে হবে, বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। প্রদত্ত রায় সম্পর্কে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল ও তার রায় পাওয়া পর্যন্ত বিচার প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়েছে বলা যায় না। বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে কেউ যেন কোনো প্রশ্ন না তুলতে পারে এবং তা যেন ‘প্রতিহিংসা’ অথবা ‘ফাইল ঠিক রাখার’ উদ্দেশ্যে একটি প্রতীকী পদক্ষেপ না হয়, বিচার প্রক্রিয়ার অবশিষ্ট পর্বগুলো কোনো অজুহাতেই যেন কোনো মহল দ্বারা যেন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত বা প্রভাবিত না হয়, সে বিষয়ে বিশেষভাবে হুঁশিয়ার থাকতে হবে।
নেতারা বলেন, এ মামলার পরবর্তী ধাপগুলোই শুধু নয়, অন্য যারা অপরাধ করেছে তাদের সকলের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। যেহেতু ন্যায়বিচার পেতে হলে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বহাল থাকাটা অত্যাবশ্যক, তাই সব অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য প্রতিশ্রুতি অনুসারে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অবিলম্বে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ও তফসিল ঘোষণা অপরিহার্য।
সরকারের সব কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকলে ‘ন্যায়বিচারের’ বিষয়ে তার আন্তরিকতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। যেমন, মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে যে ট্রাইব্যুনালের বিচার সরাসরি টেলিভিশনে দেখানো হলেও, চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও তার নিয়ন্ত্রণ আমেরিকাকে দিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে সরকার, লুকোচুরির আশ্রয় নিয়ে, বলতে গেলে প্রায় সংগোপনে, চুক্তি স্বাক্ষর করল কেন? এ থেকে মানুষের মাঝে সন্দেহ জেগেছে, সরকারের আসল এজেন্ডা হয়তো অন্যকিছু। ন্যায়বিচারের বিষয়টি তার কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়, ট্রাইব্যুনালের বিচার চলছে ‘প্রতিহিংসার’ জন্য অথবা লোক দেখানো ‘প্রতীকী’ পদক্ষেপ হিসেবে। এরকম হলো বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে মানুষের আস্থাহীনতা বাড়বে এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের শিকার ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি কঠিন হবে।
নেতারা বিবৃতিতে শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ফাইয়াজ, সিপিবি নেতা কমরেড প্রদীপ ভৌমিক, ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী রিজভী, তাহের জামান প্রিয়, সাপ্তাহিক একতার কর্মী আতিক, হকারনেতা ইউসুফ সানোয়ার, গার্মেন্টস শ্রমিকনেতা আশরাফুলসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সব শ্রমজীবী, শিক্ষার্থী, শিশু ও নারী হত্যাকাণ্ডের দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
তারা বিবৃতিতে আরও বলেন, দণ্ডপ্রাপ্তদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কি আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে সেটা জনগণকে জানাতে হবে। বিচার যেন প্রতীকী না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।