ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট হলে ‘জেনোসাইড হওয়ার সম্ভাবনা আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, একইদিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়টি জামায়াত ভালোভাবে দেখছে না। শনিবার,(২২ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের প্যারেড গ্রাউন্ডে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’র ৫৪ বছর; জনগণ উপকারভোগী হতে পারেনি
জামায়াত ‘কনভেনশনাল’ জোট করবে না; অনেক দল এবং শক্তির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নির্বাচনের দিন গণভোট হওয়ার বিষয়টি জামায়াতের আমির কীভাবে দেখছেন? জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা ভালোভাবে দেখছি না। আমরা আগেই বলেছি, নির্বাচনের দিন গণভোট হলে, নির্বাচনে জেনোসাইড (গণহত্যা) হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’জামায়াত আমির হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে নামেন। এরপর বিকেলে তিনি নগরীর ফিরোজ শাহ বড় মাদ্রাসার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দস্তারবন্দী ও ইসলামী মহাসম্মেলনে যোগ দেন। পরে সন্ধ্যায় নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে নির্বাচনে দলের দায়িত্বশীলদের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধের মধ্যে গত ১৩ নভেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একইদিনে আয়োজনের ঘোষণা দেন। আসছে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রোজার আগেই এই নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। বিএনপি ও তাদের মিত্ররা জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোটের পক্ষে।
তবে জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামপন্থি বেশকিছু দল নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দাবিতে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, গণমিছিল করেছে।
ক্ষমতায় গেলে পিআর
সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি নিয়ে এখন জামায়াতের অবস্থান কী, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দলটি আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের অবস্থান আপনাদের সামনে পরিষ্কার। আমাদের দাবি অব্যাহত। এই দাবি বাস্তবায়ন হবে, জনগণের স্বার্থে। এমনকি আমরা ক্ষমতায় গেলেও কথা দিচ্ছি, সেই পিআর আমরা বাস্তবায়ন করবো ইনশাল্লাহ।’
নির্বাচনের ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নির্বাচনের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নাই, কিন্তু এই ‘ফিল্ড’ আমাদের তৈরি করতে হবে। আমাদের মানে সবাইকে মিলে। আপনারা তৈরি থাকুন। এই নির্বাচন হতে হবে। এই নির্বাচন না হলে এদেশে সংকট দেখা দেবে। আমরা কোনো সংকট তৈরি হতে দিবো না।”
নির্বাচনে জোট করবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াত প্রধান বলেন, “আমরা ‘কনভেনশনাল’ কোনো জোট করবো না। কিন্তু অনেকগুলো দল এবং শক্তির সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী সমঝোতা হবে।”
চট্টগ্রামে সব আসনে জামায়াতের প্রার্থীর বিজয়ের জন্য কোনো বার্তা দেবেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ‘সব আসনে জামায়াতের বিজয়ের কোনো বার্তা দিবো না। আমি জনগণের বিজয়ের বার্তা দিয়েছি। আমি জামায়াতের বিজয় চাচ্ছি না, জনগণের বিজয় চাচ্ছি। দেখেন আমাদের এত পজেটিভ এজেন্ডা। কী করবো জনগণের জন্য, কী ভাবছি- সেগুলো বলতে বলতে আমাদের সময় চলে যায়। কাউকে খোঁচা দেয়া বা কারও খোঁচার জবাব দেয়ার ভাই, আমাদের কোনো সময় নাই।’
*ইসলামের গেইটওয়ে*
তার আগে শফিকুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের জন্য ইসলামের ‘গেইটওয়ে’ চট্টগ্রাম। আবার মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার ঘোষণাটাও হয়েছে এ জায়গা থেকে এবং এখানেই প্রথম ‘কনভেনশাল’ লড়াই শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশ এখন ইতিহাসের একটা বাঁকে এসে দাঁড়িয়েছে। আমরা ’৪৭, ’৫২, ’৭১ পার হয়ে এসেছি। এখন আমরা দাঁড়িয়েছি চব্বিশের কূলে। বারবার এ জাতির সামনে সুযোগ এসেছে। কিন্তু সুযোগের উত্তম ব্যবহার যাদের করার কথা ছিল, তারা সে ব্যবহার না করে অপব্যবহার করেছে।”
*দুইবার স্বাধীনতা*
তিনি বলেন, ‘যার কারণে এই অঞ্চল দুই দুইবার স্বাধীনতার আলো দেখার পরেও সে আলো অনেকটা নিভু নিভু হয়ে গেল। দ্বিতীয় স্বাধীনতার আজকে ৫৪ বছর। এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় একটা জাতি বহুদূর এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। আল্লাহতালা আমাদের বহুবিধ সম্পদও দান করেছেন। সম্পদের একটা লীলাভূমি হচ্ছে এই চট্টগ্রাম, বিশেষভাবে বাংলাদেশের মধ্যে। কিন্তু আমরা সেই সম্পদের উপকারভোগী হতে পারলাম না, জনগণ। কিছু লোক জনগণের সম্পদকে লুণ্ঠন করে, তারা তাদের পকেটকে ভারী করেছে। তাদের কপাল-কিসমত বড় করেছে। কিন্তু জনগণ কার্যত সেরকম কোনো উন্নয়নের মুখ দেখেনি।’
জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘জাতি সবার, কোনো বিশেষ দলের নয়, কোনো গোষ্ঠীর নয়। তিনি বলেন, ‘কারও কাছে আমরা আমাদের দেশের রাজনীতি ইজারা দিতে চাই না। কোনো পরিবার নয়, কোনো দল নয়। এদেশের মালিক এদেশের জনগণ। আমরা জনগণের হাতে জনগণের অধিকার তুলে দিতে চাই।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট হলে ‘জেনোসাইড হওয়ার সম্ভাবনা আছে’ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, একইদিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়টি জামায়াত ভালোভাবে দেখছে না। শনিবার,(২২ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের প্যারেড গ্রাউন্ডে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’র ৫৪ বছর; জনগণ উপকারভোগী হতে পারেনি
জামায়াত ‘কনভেনশনাল’ জোট করবে না; অনেক দল এবং শক্তির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নির্বাচনের দিন গণভোট হওয়ার বিষয়টি জামায়াতের আমির কীভাবে দেখছেন? জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা ভালোভাবে দেখছি না। আমরা আগেই বলেছি, নির্বাচনের দিন গণভোট হলে, নির্বাচনে জেনোসাইড (গণহত্যা) হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’জামায়াত আমির হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে নামেন। এরপর বিকেলে তিনি নগরীর ফিরোজ শাহ বড় মাদ্রাসার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দস্তারবন্দী ও ইসলামী মহাসম্মেলনে যোগ দেন। পরে সন্ধ্যায় নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে নির্বাচনে দলের দায়িত্বশীলদের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধের মধ্যে গত ১৩ নভেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একইদিনে আয়োজনের ঘোষণা দেন। আসছে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রোজার আগেই এই নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। বিএনপি ও তাদের মিত্ররা জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোটের পক্ষে।
তবে জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামপন্থি বেশকিছু দল নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দাবিতে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, গণমিছিল করেছে।
ক্ষমতায় গেলে পিআর
সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি নিয়ে এখন জামায়াতের অবস্থান কী, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দলটি আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের অবস্থান আপনাদের সামনে পরিষ্কার। আমাদের দাবি অব্যাহত। এই দাবি বাস্তবায়ন হবে, জনগণের স্বার্থে। এমনকি আমরা ক্ষমতায় গেলেও কথা দিচ্ছি, সেই পিআর আমরা বাস্তবায়ন করবো ইনশাল্লাহ।’
নির্বাচনের ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নির্বাচনের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নাই, কিন্তু এই ‘ফিল্ড’ আমাদের তৈরি করতে হবে। আমাদের মানে সবাইকে মিলে। আপনারা তৈরি থাকুন। এই নির্বাচন হতে হবে। এই নির্বাচন না হলে এদেশে সংকট দেখা দেবে। আমরা কোনো সংকট তৈরি হতে দিবো না।”
নির্বাচনে জোট করবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াত প্রধান বলেন, “আমরা ‘কনভেনশনাল’ কোনো জোট করবো না। কিন্তু অনেকগুলো দল এবং শক্তির সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী সমঝোতা হবে।”
চট্টগ্রামে সব আসনে জামায়াতের প্রার্থীর বিজয়ের জন্য কোনো বার্তা দেবেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ‘সব আসনে জামায়াতের বিজয়ের কোনো বার্তা দিবো না। আমি জনগণের বিজয়ের বার্তা দিয়েছি। আমি জামায়াতের বিজয় চাচ্ছি না, জনগণের বিজয় চাচ্ছি। দেখেন আমাদের এত পজেটিভ এজেন্ডা। কী করবো জনগণের জন্য, কী ভাবছি- সেগুলো বলতে বলতে আমাদের সময় চলে যায়। কাউকে খোঁচা দেয়া বা কারও খোঁচার জবাব দেয়ার ভাই, আমাদের কোনো সময় নাই।’
*ইসলামের গেইটওয়ে*
তার আগে শফিকুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের জন্য ইসলামের ‘গেইটওয়ে’ চট্টগ্রাম। আবার মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার ঘোষণাটাও হয়েছে এ জায়গা থেকে এবং এখানেই প্রথম ‘কনভেনশাল’ লড়াই শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশ এখন ইতিহাসের একটা বাঁকে এসে দাঁড়িয়েছে। আমরা ’৪৭, ’৫২, ’৭১ পার হয়ে এসেছি। এখন আমরা দাঁড়িয়েছি চব্বিশের কূলে। বারবার এ জাতির সামনে সুযোগ এসেছে। কিন্তু সুযোগের উত্তম ব্যবহার যাদের করার কথা ছিল, তারা সে ব্যবহার না করে অপব্যবহার করেছে।”
*দুইবার স্বাধীনতা*
তিনি বলেন, ‘যার কারণে এই অঞ্চল দুই দুইবার স্বাধীনতার আলো দেখার পরেও সে আলো অনেকটা নিভু নিভু হয়ে গেল। দ্বিতীয় স্বাধীনতার আজকে ৫৪ বছর। এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় একটা জাতি বহুদূর এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। আল্লাহতালা আমাদের বহুবিধ সম্পদও দান করেছেন। সম্পদের একটা লীলাভূমি হচ্ছে এই চট্টগ্রাম, বিশেষভাবে বাংলাদেশের মধ্যে। কিন্তু আমরা সেই সম্পদের উপকারভোগী হতে পারলাম না, জনগণ। কিছু লোক জনগণের সম্পদকে লুণ্ঠন করে, তারা তাদের পকেটকে ভারী করেছে। তাদের কপাল-কিসমত বড় করেছে। কিন্তু জনগণ কার্যত সেরকম কোনো উন্নয়নের মুখ দেখেনি।’
জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘জাতি সবার, কোনো বিশেষ দলের নয়, কোনো গোষ্ঠীর নয়। তিনি বলেন, ‘কারও কাছে আমরা আমাদের দেশের রাজনীতি ইজারা দিতে চাই না। কোনো পরিবার নয়, কোনো দল নয়। এদেশের মালিক এদেশের জনগণ। আমরা জনগণের হাতে জনগণের অধিকার তুলে দিতে চাই।’