বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার প্রতিবাদে যমুনা অভিমুখে বাম জোটের মিছিল লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ -সংবাদ
বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি অপারেটরদের দেয়ার প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখী মিছিল আটকে দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার, (০৪ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাকরাইল মোড়ে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের কয়েক দফা ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা কয়েকজনকে লাঠিচার্জ করেন। পরে বিক্ষোভকারীরা কাকরাইল মোড়েই বসে পড়লে সড়কের দু’পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী যমুনা ঘেরাও করতে আন্দোলনকারীরা প্রেসক্লাব থেকে মিছিল নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন। তারা কাকরাইল পৌঁছালে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে।
বিক্ষোভকারীরা এ সময় ‘আমার দেশের মোহনা, বিদেশিদের দেবো না’, ‘বাংলাদেশের প্রবেশদ্বার, বিদেশিদের হবে না’, ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’সহ নানান স্লোগান দিতে থাকেন। সেখানেই বাম জোটের কয়েকজন নেতারা বক্তব্য দেন। তারা বলেছেন, বিদেশি কোম্পানির কাছে চট্টগ্রামসহ দেশের বন্দরগুলো সরকার ইজারা দিয়ে দিয়েছে। এর ফলে দেশের ‘সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হলো’। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ করে দুপুর সোয়া ১টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিয়ে তারা মিছিল নিয়ে চলে যান। এরপর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচিতে পুলিশের হামলায় কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।’ পুলিশি হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (গত) বিকেল ৪টায় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি দেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দাবি না মানলে আগামীতে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেয়া হবে।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘তারা কর্মসূচি করতে চেয়েছে, কাকরাইলে তারা অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দিয়ে চলে গেছে।’ গত ২৩ নভেম্বর বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে দেশের বন্দরগুলো নিয়ে করা চুক্তি বাতিল করতে সরকারকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে যমুনা ঘেরাও করা হবে বলে সেদিনই ঘোষণা দেয়া হয়।
চট্টগ্রামের লালদিয়ার চরে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনিশ কোম্পানি এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে গত ১৭ নভেম্বর চুক্তি করে সরকার। একইদিন পানগাঁওয়ের নৌ-টার্মিনাল নির্মাণের বিষয়ে চুক্তি হয় সুইজারল্যান্ডের কোম্পানি মেডলগের সঙ্গে। গত ২৫ মে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিন দেশের তিন কোম্পানির সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলার বিষয়টি সামনে আনেন। এরপর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবিসহ বিভিন্ন বাম দল ও সংগঠন, বিএনপি, শ্রমিক সংগঠন অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগের বিরোধিতায় নামে। বিদেশিদের হাতে বন্দর ছেড়ে দিলে দেশের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও অর্থনীতির বিশ্লেষকদের কেউ কেউ এ উদ্যোগের বিরুদ্ধে মত দিচ্ছেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার প্রতিবাদে যমুনা অভিমুখে বাম জোটের মিছিল লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি অপারেটরদের দেয়ার প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখী মিছিল আটকে দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার, (০৪ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাকরাইল মোড়ে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের কয়েক দফা ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা কয়েকজনকে লাঠিচার্জ করেন। পরে বিক্ষোভকারীরা কাকরাইল মোড়েই বসে পড়লে সড়কের দু’পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী যমুনা ঘেরাও করতে আন্দোলনকারীরা প্রেসক্লাব থেকে মিছিল নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন। তারা কাকরাইল পৌঁছালে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে।
বিক্ষোভকারীরা এ সময় ‘আমার দেশের মোহনা, বিদেশিদের দেবো না’, ‘বাংলাদেশের প্রবেশদ্বার, বিদেশিদের হবে না’, ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’সহ নানান স্লোগান দিতে থাকেন। সেখানেই বাম জোটের কয়েকজন নেতারা বক্তব্য দেন। তারা বলেছেন, বিদেশি কোম্পানির কাছে চট্টগ্রামসহ দেশের বন্দরগুলো সরকার ইজারা দিয়ে দিয়েছে। এর ফলে দেশের ‘সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হলো’। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ করে দুপুর সোয়া ১টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিয়ে তারা মিছিল নিয়ে চলে যান। এরপর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচিতে পুলিশের হামলায় কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।’ পুলিশি হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (গত) বিকেল ৪টায় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি দেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দাবি না মানলে আগামীতে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেয়া হবে।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘তারা কর্মসূচি করতে চেয়েছে, কাকরাইলে তারা অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দিয়ে চলে গেছে।’ গত ২৩ নভেম্বর বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে দেশের বন্দরগুলো নিয়ে করা চুক্তি বাতিল করতে সরকারকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে যমুনা ঘেরাও করা হবে বলে সেদিনই ঘোষণা দেয়া হয়।
চট্টগ্রামের লালদিয়ার চরে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনিশ কোম্পানি এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে গত ১৭ নভেম্বর চুক্তি করে সরকার। একইদিন পানগাঁওয়ের নৌ-টার্মিনাল নির্মাণের বিষয়ে চুক্তি হয় সুইজারল্যান্ডের কোম্পানি মেডলগের সঙ্গে। গত ২৫ মে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিন দেশের তিন কোম্পানির সঙ্গে সরকারের আলোচনা চলার বিষয়টি সামনে আনেন। এরপর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবিসহ বিভিন্ন বাম দল ও সংগঠন, বিএনপি, শ্রমিক সংগঠন অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগের বিরোধিতায় নামে। বিদেশিদের হাতে বন্দর ছেড়ে দিলে দেশের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও অর্থনীতির বিশ্লেষকদের কেউ কেউ এ উদ্যোগের বিরুদ্ধে মত দিচ্ছেন।