নির্বাচনকে ‘সবচেয়ে কঠিন লড়াই’ বললেন ফখরুল

বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সবচেয়ে কঠিন লড়াই হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রাক্কালে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরবেন বলেও নতুন করে জানালেন মির্জা ফখরুল।

নির্বাচনের আগে ‘খুব শিগগিরই’ তারেক রহমানের দেশে ফেরার বার্তা আবারও

নির্বাচনে বিজয়ী হতে হলে ভালোবাসা দিয়ে, মন জয় করে মানুষকে ভোট কেন্দ্রে এনে বিএনপির পক্ষে ভোট দেয়াতে হবে

আমাদের অস্তিত্ব ১৯৭১ সালকে নিকৃষ্টতম প্রজন্ম বলার ঔদ্ধত্য ও দুঃসাহস পান কোথায় তারা

দিন-ক্ষণ-সময় উল্লেখ না করে তিনি আবারও বলেছেন নির্বাচনের আগে ‘খুব শিগগিরই’ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফিরবেন। ফখরুল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, তারেক রহমান যেদিন বাংলাদেশে পা দেবেন, সেদিন যেনো সারা বাংলাদেশ কেঁপে উঠে। সেদিন বিএনপি গোটা বাংলাদেশের চেহারা বদলে দিতে চায়।

বৃহস্পতিবার, (১১ ডিসেম্বর ২০২৫) রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালার ৫ম দিনের উদ্বোধনীতে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা খুব শিগগিরই আমাদের মাঝে আসবেন।’ তিনি আরও বলেন, দেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ আসনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তারেক রহমানের চিন্তাভাবনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিএনপি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায়। তিনি উল্লেখ করেন, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি ও প্রতিনিধিত্বশীল সংসদ গঠনের সুযোগ এসেছে, যার নেতৃত্বে থাকবেন তারেক রহমান।

আসন্ন নির্বাচনকে কঠিন লড়াই হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, এখন সংগ্রাম ও লড়াই হচ্ছে এই নির্বাচনে জয়লাভ করবার সংগ্রাম। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সতর্ক করে তিনি বলেন, অনেক বাধা, বিপত্তি ও প্রচারণা আসবে এবং চলতে থাকবে। কিন্তু এসব কিছুকে কাটিয়ে উঠে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। বিএনপি কোনোদিনই পরাজিত হয়নি, পরাজিত হবে না। বিএনপি হচ্ছে এ দেশের জনগণের দল, মুক্তিযুদ্ধের দল এবং গণতন্ত্রের সংগ্রামের দল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই লড়াই পেছনে টেনে নেয়ার শক্তির বিরুদ্ধে সামনে এগুনোর শক্তিকে জয়ী করার লড়াই। আগামী নির্বাচনের জন্য কে মনোনয়ন পেলেন, আর কে পেলেন না, তা নিয়ে এখন চিন্তার দরকার নেই; বরং জনগণকে বিএনপি কী দেবে, সেটি সামনে নিয়ে আসতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচন সত্যিকারের অর্থে নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে। এটি আওয়ামী লীগ আমলের নির্বাচন নয়। এই নির্বাচনে বিজয়ী হতে হলে জনগণের ভালোবাসা আদায় করতে হবে। মানুষের মন জয় করে তাদের ভোট কেন্দ্রে এনে বিএনপির পক্ষে ভোট দেয়াতে হবে।

## ‘৭১ আমাদের অস্তিত্ব ও সংস্কার

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা কথা আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, ১৯৭১ সাল আমাদের অস্তিত্ব। এ কথাটা খুব জোরে সোরে মনে রাখবেন।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আজকে আমি পত্রিকায় দেখলাম, ১৯৭১ সালের প্রজন্ম নাকি নিকৃষ্টতম প্রজন্ম। কোন সাহসে এই কথা বলার দুঃসাহস দেখান তারা? ঔদ্ধত্য দেখান তারা?’

তিনি দাবি করেন, নতুন দলের একটি জোট বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী হিসেবে দাঁড় করালেও, দেশে যত সংস্কার এসেছে তার সবই বিএনপির হাত ধরে এসেছে। দেশের যা কিছু ভালো অর্জন, সব অর্জনই বিএনপির হাত ধরে হয়েছে। বিএনপির সময়ে আনা সংস্কারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে মুক্ত গণমাধ্যম সৃষ্টি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, খালেদা জিয়ার সময়ে নারীদের শিক্ষা, যুবকদের কর্মসংস্থান এবং অর্থনীতির আধুনিকায়নসহ বেশ কিছু বিষয়।

### অপশক্তিকে রুখতে হবে

মির্জা ফখরুল সতর্ক করে বলেন, পেছন থেকে অন্ধকারের মধ্য দিয়ে একটা কালো থাবা বেরিয়ে আসছে কিনা, বা আরেক ফ্যাসিবাদ অন্যদিক থেকে চেপে বসতে চাইছে কিনা সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রিয় ধর্মকে ব্যবহার করে বাংলাদেশকে বিভ্রান্ত করার অপশক্তিকে রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি নেতাকর্মীদের এই অপশক্তিকে রুখে দেয়ার লড়াই এবং দেশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় অবস্থানে দাঁড় করাবার লড়াই এই দুটি নিয়েই এগুতে হবে বলে মন্তব্য করেন।

‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই কর্মশালাটি বিজয়ের মাস উপলক্ষে গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে। এতে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা এবং বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর হাজারের বেশি নেতা অংশ নিয়েছেন।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেছেন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং সঞ্চালনা করছেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

‘রাজনীতি’ : আরও খবর

» নির্বাচনী তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো

সম্প্রতি