image

কোরআনের ফর্মুলায় না চললে ফেরেশতাও শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে না: জামায়াত নেতা আবু তাহের

শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

‘কোরআনের ফর্মুলায় না চললে ফেরেশতাও বাংলাদেশে শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবু তাদের মোহাম্মদ মাসুম।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা যেই মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই, সেই মানবিক বাংলাদেশ দুনিয়ার কোনো মন্ত্র-তন্ত্র দিয়ে গড়া সম্ভব নয়। মানুষের গড়া কোনো আইন, মতবাদ, দফা দিয়ে এটা সম্ভব নয়। এটা সম্ভব একমাত্র মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে আসা মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের ফর্মুলা অনুযায়ী যদি আমরা চলি।’

শুক্রবার, (১২ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শিমলাইল এলাকায় এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় এ জামায়াত নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের ঘোষণার পরদিন আজকে রাজপথের একজন লড়াকু সৈনিক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এর দ্বারা কী আমাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা প্রমাণিত হয়নি? আমরা এটাই আশঙ্কা করেছিলাম।’

দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও সাংবিধানিক মর্যাদা নিশ্চিত’ করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ জামায়াত নেতা বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সাংবিধানিক মর্যাদা আগেই নিশ্চিত করতে হবে। এরপর জাতীয় নির্বাচন হবে।’

আবু তাহের মোহাম্মদ মাসুম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ১২ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা করেছেন। একই দিনে জুলাই সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি দেয়ার জন্য গণভোটের আয়োজনের কথাও তারা বলেছেন। আমরা এই দাবিগুলো অনেকদিন থেকে করে এসেছিলাম। সব রাজনৈতিক দল এই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য সব রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করেছিল। তারপরও আমরা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছিলাম আট দলের পক্ষ থেকে। কেউ কেউ বলেছিলেন যে, এগুলো তো আলোচনার টেবিলে আছে আপনারা রাজপথে কেন নামলেন?’

জুলাই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় দায়ীদের বিচার নিশ্চিত না করে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না বলেও উল্লেখ করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল।

‘গণহত্যাকারীদের দোসরদেরও’ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আবু তাহের বলেন, ‘তারা যদি সেদিন গৃহপালিত বিরোধী দল না হতো তাহলে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এতদিন কন্টিনিউ করতে পারতো না। আমরা তাদেরকে নিষিদ্ধ করার কথা বলেছি। আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের দাবি জানিয়ে এসেছিলাম। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। এখানে পরমতসহিষ্ণুতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনীতি নিশ্চিত করতে হবে। কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির রাজনীতি নয়, সন্ত্রাসের ভাষায় কথা নয়। এক দল আরেক দলের ওপরে মিথ্যাচার চালিয়ে নির্বাচনী পরিবেশকে নষ্ট করবে, এগুলো থেকে বেরিয়ে এসে একটি সুন্দর, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর নির্বাচন দিতে হবে।’

‘কিন্তু এগুলোর সমাধান না করেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করেছে। আমরা এটাকে স্বাগত জানিয়েছি। আমরা এখনও এই সরকারের ওপর বিশ্বাস রাখতে চাই।’

নির্বাচন কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে এ জামায়াত নেতা বলেন, ‘আপনারা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন শুক্রবার নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে। সুতরাং এই চ্যালেঞ্জে আপনাদেরকে বিজয়ী হতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেয়া এখন আপনাদের নৈতিক, মানবিক ও গণতান্ত্রিক দায়িত্ব হয়ে গিয়েছে। যদি আপনারা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে না পারেন তাহলে আপনাদের বেলায় ভিন্ন ইতিহাস এই বাংলাদেশে লিখা হবে।’ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে দলটির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী ও মহানগর শাখার আমীর মুহাম্মদ আবদুল জব্বার, জেলা কমিটির আমীর মুহাম্মদ মমিনুল হক সরকার, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির আমীর মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল এবং সঞ্চালনা করেন সাইফুল ইসলাম রনি।

‘রাজনীতি’ : আরও খবর

» বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা

সম্প্রতি