image

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, চিকিৎসা নিতে পারছেন: ডা. জাহিদ

বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, খালেদা জিয়া তা নিয়মিতভাবে গ্রহণ করতে পারছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “উনার অবস্থা স্থিতিশীল আছে। উনি এখন পর্যন্ত চিকিৎসকদের পরামর্শ মোতাবেক যে চিকিৎসা উনাকে দেওয়া হচ্ছে, সেই চিকিৎসা উনি ঠিকমতো গ্রহণ করতে পারছেন। উনার শারীরিক অবস্থা গত কয়েকদিন পূর্বেও যে অবস্থায় ছিল; আলহামদুলিল্লাহ উনি সেটি মেইনটেইন করতে পারছেন।”

গত ২৩ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। এর তিন দিন পর তার ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিলে তাকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নেওয়া হয়। বর্তমানে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসা তত্ত্বাবধান করছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তার শারীরিক অবস্থা উপযোগী না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তার বড় ছেলে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তারেকের স্ত্রী জুবাইদা রহমান দেশে এসে শাশুড়ির চিকিৎসার দেখভাল করছেন।

খালেদা জিয়ার সুস্থতা নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জাহিদ হোসেন বলেন, “উনার সাথে সম্পৃক্ত আমরা যারা এবং এই হাসপাতালের চিকিৎসকরা অত্যন্ত আশাবাদী। ইনশাআল্লাহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে যাবেন।”

তিনি আরও বলেন, “তবে মনে রাখতে হবে, উনার বয়সের চেয়েও বেশি উনার অসুস্থতা এবং বিগত সময়ে পরিকল্পিতভাবে যেরকম অসুস্থ অবস্থার মধ্যে উনাকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে—যখন চিকিৎসা দেওয়া যায়নি অথবা দিতে দেওয়া হয়নি—সেই কারণেই উনার শারীরিক জটিলতা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। এ কারণেই এবার উনি বেশি সময় হাসপাতালে পার করছেন।”

চিকিৎসার সার্বিক তদারকি প্রসঙ্গে জাহিদ বলেন, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিণী জুবাইদা রহমান সবসময় উনার চিকিৎসার ব্যাপারে সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি করছেন।”

তিনি জানান, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিণী সৈয়দ শামিলা রহমান, খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার, বড় বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরাও নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। তবে খালেদা জিয়া বর্তমানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে থাকায় পরিবারের সদস্যরা তার পাশে সরাসরি থাকতে পারছেন না। তারা হাসপাতালের ভেতরে কিংবা বাইরে অবস্থান করে চিকিৎসার অগ্রগতি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় সহযোগিতার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটি, এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জাহিদ হোসেন।

বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই হাসপাতালে আরও অনেক রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের চিকিৎসা যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহযোগিতা করছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই হাসপাতাল সবার জন্য উন্মুক্ত। এখানে সেবা গ্রহণ করার সুযোগ সবারই আছে। কাজেই যারা এখানে সেবা নিতে আসবেন, তাদের চিকিৎসায় কোনো অবস্থাতেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার কারণে ব্যাঘাত ঘটবে না। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের কোনো নেতাকর্মী কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি করবেন না—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

‘রাজনীতি’ : আরও খবর

সম্প্রতি