নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কথিত ‘আওয়ামীপন্থী’ ডিনদের আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে পদত্যাগের জন্য সময় বেধে (আলটিমেটাম) দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার।
বৃহস্পতিবার ( ১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ও ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামের গ্রুপে পোস্ট দিয়ে তিনি এ আলটিমেটাম দেন। ‘আওয়ামীপন্থী’ ডিনদের আগামীকাল চেয়ারে দেখলে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য ও ‘বাকিটা বুঝিয়ে দেব’ বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর শিক্ষক সমিতি, ডিন, সিন্ডিকেট, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি এবং শিক্ষা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১২টি অনুষদের ডিন (অধিকর্তা) নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী হলুদ প্যানেল থেকে ছয়জন প্রার্থী নির্বাচিত হন। গতকাল বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ডিনদের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে উপাচার্য গত ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী চলতি ডিনদের পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত স্বপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
দায়িত্বে থাকা ডিনরা হলেন: আইন অনুষদে আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, বিজ্ঞান অনুষদে নাসিমা আখতার, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে এ এস এম কামরুজ্জামান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে এস এম একরাম উল্ল্যাহ, প্রকৌশল অনুষদে বিমল কুমার প্রামাণিক এবং ভূ-বিজ্ঞান অনুষদে এ এইচ এম সেলিম রেজা।
রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার তার ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী ডিনদের অপসারণ করানো হয় নাই। নির্বাচিত বলে পুরো ১.৫ বছর স্টে করাইছেন প্রশাসন। গতকাল ১৭ ডিসেম্বর ডিনদের মেয়াদ শেষ হইছে, শুনেছি এই ডিনদের আবার সময় বাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন।’
পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমার আল্টিমেটাম আমি ফিলআপ করে তারপর ছাড়ি এটা প্রশাসন ভালোমতো জানেন। আওয়ামীপন্থী ডিনরা আগামীকাল ডিন অফিসের চেয়ারে দেখলে শাউয়া কেটে কাউয়া দিয়ে খাওয়াবো। আজ সময় দিলাম রিজাইন দেওয়ার জন্য সম্মানের সাথে। আগামীকাল অফিসে গিয়ে বাকিটা বুঝিয়ে দিবো।’
রাকসুর এই জিএস আরও লিখেছেন, ‘নমনীয়তা আমাদের জন্য কাল হয়ে গেছে, আগামীকাল আল্লাহর ওয়াস্তে কোনো শিক্ষার্থীকে যেনো না দেখি এদের পক্ষ নিতে। তাদের পদত্যাগের সময় দিলাম এই কর্মদিবস। সাথে সাথে রাবিয়ানদের অনুরোধ জানাবো আগামীকাল রাকসু ভবনের সামনে সকাল ১০টায় চলে আসবেন।’
তবে দায়িত্বে থাকা ডিনরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ডিনরা কিংবা উপাচার্য সেই দায়িত্ব পালন করেন। এটা নির্বাচিত পদ। এই পদ থেকে ‘পদত্যাগের অধিকার’ ডিনদের ‘নেই’। ফলে ‘ইচ্ছা করলেই’ তারা পদত্যাগ করতে ‘পারছেন না’। এ বিষয়ে ‘উপাচার্যকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে’।
এ বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম একরাম উল্ল্যাহ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ডিনদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত উপাচার্যকে সকল ডিনের দায়িত্ব নিতে হবে কিংবা ওইসব ডিনকে স্বপদে দায়িত্বে রাখতে হবে। উপাচার্য আমাদেরকে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে যেহেতু আমাদের মেয়াদ গতকাল শেষ হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে এই পদে থাকার ইচ্ছা নাই।’
রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে এই ডিন আরও বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার পদত্যাগের কোনো অধিকার নেই। উপাচার্য যেহেতু দায়িত্ব দিয়েছেন, উপাচার্যকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি চাইলে আরেকটি চিঠি ইস্যু করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন।’
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধিকর্তা এ এস এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘এটা নির্বাচিত পদ। এই পদ থেকে পদত্যাগের অধিকার ডিনদের নেই। ফলে ইচ্ছা করলেই তারা পদত্যাগ করতে পারছেন না। এ বিষয়ে উপাচার্যকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। করোনার সময়ও ডিনদের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়ছিল।’ রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিনের হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাদেরকে এ ধরনের কথা বলা ঠিক না। উনি উপাচার্যকে এ বিষয়ে নির্বাচন দেওয়ার জন্য বলতে পারেন।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: টেইক অফ ইস্তাম্বুল ২০২৫ এ বাক্কো’র অংশগ্রহণ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: টিএমজিবি সদস্যদের জন্য কনটেন্ট তৈরির কর্মশালা আয়োজন