image

ট্রাভেল পাস হাতে পেয়েছেন তারেক রহমান, ৩০০ ফিটে সংবর্ধনার প্রস্তুতি

শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও মেয়ে ব্যারিস্টার

জাইমা রহমান

জনদুর্ভোগ এড়াতে বিমানবন্দর ও এভারকেয়ারের মধ্যবর্তী এলাকা সংবর্ধনার ভেন্যু

রাজনৈতিক কারণে পাসপোর্ট নবায়ন না হওয়ায় ‘ট্রাভেল পাস’ বা ভ্রমণ অনুমতির মাধ্যমে তিনি দেশে ফিরছেন, যা তিনি ইতোমধ্যে হাতে পেয়েছেন। তার এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে দলটির পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে নজিরবিহীন প্রস্তুতি। রাজধানী ঢাকার পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় ‘ঐতিহাসিক’ গণসংবর্ধনা দেয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে বিএনপি।

পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকায় তারেক রহমান দেশে ফেরার জন্য লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে ট্রাভেল পাসের আবেদন করেছিলেন। শুক্রবার,(১৯ ডিসেম্বর ২০২৫) সেই ট্রাভেল ডকুমেন্ট হাতে পেয়েছেন বলে তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান ফেইসবুক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করে লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, বাবা আজ (শুক্রবার) কিছুক্ষণ আগে ট্রাভেল ডকুমেন্ট হাতে পেয়েছেন।’

বিএনপি জানিয়েছে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে দুপুর ১২টার দিকে তারেক রহমান ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে তিনি ঢাকায় ফিরবেন। তার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমান। ডা. জুবাইদা রহমান বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করলেও স্বামীর সঙ্গে ফিরতে তিনি আজ ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ২৫ ডিসেম্বর পুনরায় দেশে ফিরবেন বলে বিএনপি সূত্র জানিয়েছে।

দলীয় সূত্র জানিয়েছে, তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফিট এলাকা পর্যন্ত বিশাল জনসমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। জনদুর্ভোগ এড়াতে এবং বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট সড়ককে সংবর্ধনার ভেন্যু হিসেবে বেছে নেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। এজন্য বিএনপির অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন আহমদ ও সদস্য সচিব রুহুল কবির রিজভীসহ শীর্ষ নেতারা ৩০০ ফিট এলাকার (বিমানবন্দর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতাল পর্যন্ত) রুট সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা চাই তার এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসকে ছাড়িয়ে যাক এবং আগামী ৫৫ বছরেও যেন এমন কোনো ঘটনা না ঘটে, সেভাবেই স্মরণীয় করে রাখার আয়োজন চলছে।’

ঢাকায় অবতরণের পর তারেক রহমান বিমানবন্দর থেকে সরাসরি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। সেখানে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসাধীন আছেন তার মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মাকে দেখার পর তিনি গুলশানে তার জন্য প্রস্তুতকৃত ১৯৬ নম্বর বাসা অথবা ‘ফিরোজা’ বাসভবনে উঠবেন।

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিএনপির শীর্ষ নেতারা সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার তাকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) প্রটোকল দিতে পারে। এছাড়া দলের পক্ষ থেকেও নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং বুলেটপ্রুফ গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

দলটির এই শীর্ষ নেতার দেশে ফেরাকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যেও নতুন করে রাজনৈতিক উত্তাপ, উচ্ছ্বাস ও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। তাকে স্বাগত জানাতে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনার আগেই তৃণমূল নেতাকর্মীরা নিজেরাই যানবাহনও ভাড়া করেছেন। শুধু ঢাকা নয়, দেশের সবগুলো জেলা, উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় থেকে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সংবর্ধনায় যোগ দেবেন। তারা বাস, ট্রাক, মাইক্রো, লঞ্চ, ট্রেন ও বিমানযোগে আসবেন। এদিকে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসা নিশ্চিত করতে বিএনপি ৭টি রুটে বিশেষ ট্রেন ভাড়ার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। রুটগুলো হলো- কক্সবাজার, সিলেট, জামালপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, পঞ্চগড়, নীলফামারী, পার্বতীপুর এবং কুড়িগ্রাম ও রংপুর থেকে ঢাকা। আগামী ২৪ ডিসেম্বর রাতে এই ট্রেনগুলো চালানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।

২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান এবং ১৮ মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডনে পাড়ি জমান। দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি সময় পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পটপরিবর্তনের ফলে তার দেশে ফেরার পথ সুগম হলো।

‘রাজনীতি’ : আরও খবর

» তারেক রহমানের দেশে ফেরা: ট্রাভেল পাস পেয়েছেন, নির্ধারিত তারিখে ফিরবেন বলে বিএনপি নিশ্চিত

» সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জোরেশোরে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি

সম্প্রতি