জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী আসন সমঝোতায় যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), এমন দাবি করেছেন জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের। বৃহস্পতিবার, (২৫ ডিসেম্বর ২০২৫) সকালে নিজের ফেইসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল শুক্রবার (আজ) এই জোটের ঘোষণা আসতে পারে।
এনসিপি ভুল পথে আছে দাবি করে যুগ্ম সদস্যসচিব ও চট্টগ্রাম মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী মীর আরশাদুল হকের দল ছাড়ার ঘোষণা আসার দিনেই ফেইসবুক পোস্টে দলটির সঙ্গে জামায়াতের জোট বাঁধার খবর পাওয়ার দাবি করলেন আবদুল কাদের।
আবদুল কাদের আনুষ্ঠানিকভাবে এনসিপিতে যুক্ত না হলেও তার জুলাই অভ্যুত্থানের সহযোদ্ধারাই এই রাজনৈতিক দল গড়ে তোলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার মতোই সমন্বয়ক ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ শীর্ষ নেতারা। গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে এনসিপি সমর্থিত প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রার্থী হয়েছিলেন আবদুল কাদের।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সমর্থক হিসেবে পরিচিত আবদুল কাদের। অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দেয়া আসিফ মাহমুদ উপদেষ্টার পদ ছেড়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন। তিনি এনসিপিতে যোগ না দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন।
আবদুল কাদের পোস্টে লিখেছেন, ‘তারুণ্যের রাজনীতির কবর রচিত হতে যাচ্ছে। এনসিপি অবশেষে জামায়াতের সঙ্গেই সরাসরি জোট বাঁধতেছে। সারাদেশের মানুষের ও নেতাকর্মীদের আশা-আকাক্সক্ষাকে জলাঞ্জলি দিয়ে গুটিকয়েক নেতার স্বার্থ হাসিল করতেই এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামীকাল (আজ) এই জোটের ঘোষণা আসতে পারে। আর এর মধ্য দিয়ে কার্যত এনসিপি জামায়াতের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।’
তার এই পোস্ট নিয়ে এনসিপি তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। জামায়াতে ইসলামীও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা হয়েছে। এনসিপি শাপলা কলি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছে, শতাধিক আসনে প্রার্থীও ঘোষণা করেছে। তারা এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে নিয়ে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ গঠন করলেও আরও দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আবদুল কাদেও পোস্টে দাবি করেছেন, জামায়াতের কাছে এনসিপি ৫০টি আসন চেয়েছিল, দর কষাকষির পর ৩০ আসনে রফা হয়েছে। এই শর্ত অনুযায়ী এনসিপি বাকি ২৭০ আসনে কোনো প্রার্থী দিতে পারবে না। পোস্টে তিনি আরও দাবি করেন, নির্বাচনে জিতলে নাহিদ প্রধানমন্ত্রী হবেন, আর জিততে না পারলে বিরোধীদলীয় নেতা হবেন, এমন আলোচনাও রয়েছে।