বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশবাসীকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। দীর্ঘ দেড় যুগ পর তিনি রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে এ কথা বলেন।
তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, "আমাদের যার যতটুকু অবস্থান আছে সেখান থেকে আসুন, আমরা আমাদের দেশটাকে নতুন গড়ে তোলার চেষ্টা করি। যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব আমরা সচেষ্ট হই। কোথাও যদি রাস্তায় এমনি কাগজ পড়ে থাকে, ময়লা হয়ে থাকে তখনই সেটাকে আমরা সরিয়ে দেবো। এভাবে ছোট ছোট কাজ করার মাধ্যমে দেশটাকে গড়ে তুলি।"
বেলা ৩টায় গুলশান এভিনিউয়ের বাসা থেকে যাত্রা শুরু করে বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে তিনি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছান। তার আগমন উপলক্ষ্যে আগে থেকেই নয়াপল্টনে নেতা-কর্মীদের ঢল নামে। মানুষের ভিড়ে তারেকের গাড়ি কার্যালয়ের সামনে আনতে নিরাপত্তা কর্মীদের বেগ পেতে হয়। নেতা-কর্মীরা মুর্হুমুহু করতালি দিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান, তিনি হাত নেড়ে তার জবাব দেন।
কার্যালয়ের গেইটে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা তাকে অভ্যর্থনা জানান। কার্যালয়ে প্রবেশ করে তিনি দোতলার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আবারও নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান।
সেখানে থেকে তিনি উপস্থিতদের দ্রুত রাস্তা খালি করার অনুরোধ করে বলেন, "এখন সকলকে অনুরোধ করব, দ্রুত আমরা রাস্তাটাকে খালি করে দিন যাতে সাধারণ মানুষ চলাফেরা করতে পারে। সকলে ভালো থাকবেন। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করবেন।"
তিনি আরও বলেন, "আজকে এখানে আমাদের কোনো অনুষ্ঠান নেই। আমরা যদি এই রাস্তা বন্ধ করে রাখি তাহলে সাধারণ মানুষের চলাচলের অসুবিধা হবে। সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব আমরা যেন এখান থেকে চলে যাই। ইনশাল্লাহ কর্মসূচি যখন নেব তখন আপনাদের সামনে বক্তব্য রাখব।"
এরপর তিনি দোতলায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য নতুনভাবে তৈরি করা চেম্বারে যান। বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসের পাশেই এই কক্ষটি তৈরি করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে দেড় যুগ নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফেরার পর থেকে তারেক রহমানের সময় ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে কাটছে। প্রথম দিন সংবর্ধনা ও বক্তৃতা শেষে তিনি মা খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। সেখান থেকে রাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে পৌঁছান। তার বাবা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তার মাকে এই বাড়িটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কয়েক মাস আগে এ বাড়ির দলিলপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গুলশান অ্যাভেনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়ির পাশের ‘ফিরোজা’ নামের বাড়িটিতে খালেদা জিয়া বসবাস করেন।
শুক্রবার বিকেলে তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শনিবার সকালে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্ববায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদির কবর জিয়ারত ও মোনাজাত শেষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর তিনি আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে গিয়ে আঙুলের ছাপ, আইরিশের প্রতিচ্ছবি ও বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়ে ভোটার হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। সেখান থেকে বনানী কবরস্থানে গিয়ে ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেন। এছাড়া বনানীর সামরিক কবরস্থানে তার শ্বশুর সাবেক নৌপ্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের কবরও জিয়ারত করেছেন। পিলখানায় হত্যার শিকার সেনা কর্মকর্তাদের কবরও জিয়ারত করেন তিনি।
রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রথম অফিস করেন তারেক রহমান। এক এগারোর পর এই কার্যালয় খোলা হলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে এটিই তার প্রথম সেখানে উপস্থিতি।
এদিকে, এদিন ঢাকা-১৭ আসন থেকে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তারেক রহমান মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: ইউটিউবে নতুন ফিচার ‘ইয়োর কাস্টম ফিড’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: চ্যাটজিপিটিতে ভয়েস ব্যবহার
সারাদেশ: শ্রীমঙ্গলে অবৈধ মাটি কাটায় জরিমানা