alt

ইসি আইন বিল সংসদে, বিরোধিতা বিএনপির

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : রোববার, ২৩ জানুয়ারী ২০২২

জাতীয় সংসদে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ বিল-২০২২ উপস্থাপনের বিরোধিতা করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপি দলীয় এমপি হারুনুর রশিদ। তবে তার বক্তব্যকে গুরুত্ব না দিয়ে এই আইন হলে কারচুপির পথ বন্ধ হয়ে যাবে, যার জন্য বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) আইনমন্ত্রী প্রধান সিইসি এবং ইসি নিয়োগ বিল-২০২২ জাতীয় সংসদে উত্থাপনের প্রস্তাব করলে বিএনপির এমপি হারুনুর রশিদ এর বিরোধিতা করেন। এ সময় আইনমন্ত্রী বিলের বিষয়ে ব্যাখা দেন। পরে বিলটি উপস্থাপিত হয় এবং সেটি ৭ দিনের মধ্য রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলটি সংসদে ওঠানোর বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বিএনপির হারুনুর রশিদ বলেন, যে বিলটি উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা জনগণের, এদেশে রাজনৈতিক দল ও সুধী সমাজের যে প্রত্যাশা তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আমরা দীর্ঘদিন দিন ধরে, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য একটি আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে আসছিলাম। আজকে আইনমন্ত্রী যে বিলটি উত্থাপন করেছেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলা হয়েছে- ‘যাহা লাউ তাহাই কদু’। অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে বলতে চাই- সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিগত যে দুটি নির্বাচন কমিশন, নকিব ও হুদা কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে এত প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

হারুন বলেন, আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৬ সালে বলেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে যাবেন না। ১৯৯৫-৯৬ সালে দীর্ঘ ১৭২ দিন হরতালের মধ্যদিয়ে আজকের প্রধানমন্ত্রী সেই সময় দাবি করেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছাড়া কোনো নির্বাচনে যাবেন না। বর্তমান সার্চ কমিটির মধ্য দিয়ে যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে মেয়াদ শেষ হবে। ওনাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস ও দুর্নীতির যে অভিযোগ রয়েছে তার জন্য ওনাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা খুবই জরুরি। আজকে যে আইনটি তোলা হয়েছে তাতে ধরে নিতে পারি ইতোপূর্বে সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত দুটি কমিশনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য আনা হয়েছে। এখানে নতুনত্ব কিছু নেই। ইতোপূর্বে যে কমিশন গঠিত হয়েছে তার অনুরূপ বিল এখানে তোলা হয়েছে। এই আইনটি প্রশ্নবিদ্ধ। এই আইন দিয়ে বর্তমান সঙ্কটের নিরসন হবে না। সঙ্কট থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব না। আমি দাবি করব- আইনটি প্রত্যাহার করুন। আইনমন্ত্রী কিছুদিন আগে বলেছিলেন এরকম একটি আইন তৈরির জন্য রাজনৈতিক দল ও সুধীসমাজের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এই কথা বলার পর তিনি কী করে এই আইনটি আনেন।

এরপর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এবং হারুনের বক্তব্যের খণ্ডন করে তার বক্তব্য রাখেন। খসড়া আইনের বিভিন্ন ধারা পড়ে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে, ওনাদের ইতিহাস বলতে হয়। নিজেরা নিজেরা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য যতরকম কারসাজি- বিচারপতি আজিজ সাহেবকে দিয়ে কমিশন গঠন, এক কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি, একজন ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার জন্য বিচারকদের বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ করেছিলেন। এটা ওনারা কার সঙ্গে আলোচনা করে করেছিলেন? ওনারা এখানে বসে নিজেরা নিজেরা করে ফেলেছিলেন। ওনারা কারো সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন মনে করেননি। কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার জন্য ওনারা নিরবচ্ছিন্ন নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। মানে নিরবচ্ছিন্ন কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার জন্য এটা করেছিলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে বলা আছে, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করতে হবে। আমরা সেই আইন করেছি। ওনারা বুঝে বলুক, না বুঝে বলুক, বলছেন এটা সার্চ কমিটির আইন। ওনারা বলছেন আইনটা আমরা ঠিক করিনি। ওনাদের সঙ্গে আলোচনা করিনি। কিছু দিন আগে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এই আইনের জন্য একটি খসড়া আমার কাছে দিয়েছিলেন। তখন আমি বলেছিলাম কোভিডের কারণে হয়তো এটি নাও করা যেতে পারে। তখন ওনারা বলেছিলেন, অধ্যাদেশ করে হলেও করতে হবে। আমি বলেছিলাম এই আইন সংসদে না এনে করা ঠিক হবে না। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সংসদে তার পরে করা উচিত।

তিনি বলেন, আইন না থাকায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সব রাজনৈতিক দলকে দাওয়াত দিয়ে তাদের মতামত নেন। তখন একটি কনসেসাস হয়েছিল। সার্চ কমিটির মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপরেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। তখন ওনাদের আপত্তি ছিল না। এখন এটি আইনের আওতায় আনার জন্য এই বিলটি আনা হয়েছে, সেটি ওনারা না পড়ে আপত্তি করছেন। উইদাউট প্রেজুডিস বলছি, যদি কোনো নির্বাচন কমিশনার কোনো অন্যায় করে থাকে, তাহলে কী তাকে এই আইনের নয় দফায় দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে? রাষ্ট্রপতি যে দুবার সার্চ কমিটি করেছেন, সেটাও আইনসিদ্ধ ছিল। সেটাও আইনের আওতায় আনা হল। এটা কনসেনশাসের ভিত্তিতে করা হয়েছিল। ওনাদের কথা হচ্ছে, যা করেন করেন, তালগাছ আমার। তালগাছ ওনাদের না। তালগাছ জনগণের। ওনারা না বুঝে বলছেন। আইনটা যখন করে ফেললাম পালের হাওয়া চলে গেছে। বলছেন এটা নেই, ওটা নেই। ওনারা তো অনেক আন্দোলনের কথা বলেছেন, আন্দোলনের পালে হাওয়া লাগেনি, এবারও সেটা হবে না।

আইনমন্ত্রী বলেন, ওনারা বিচারের কথা বলেছেন। আগে আজিজ সাহেবের (সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার) করতে হবে। এক কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার করার বিচার করতে হবে। এই আইন হলে ওনারা আর ভোট চুরি করতে পারবেন না, এটা তারা বুঝে গেছেন। এজন্য তাদের গাত্রদাহ। তাদের এগুলো ধর্তব্যে নিলে ওনারা বাংলাদেশকে যে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে চেয়েছিল সেটাই হবে।

ছবি

নরসিংদী বিএনপিতে সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১, আহত ৫

ছবি

প্রবাসী ভোটারদের জন্য ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ আসছে, ১৫তম সংসদ নির্বাচনে ডাকযোগে ভোটের ব্যবস্থা

ছবি

১৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসম্মেলনের ডাক তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াতের

ছবি

রাজনৈতিক সরকার না আসা পর্যন্ত অস্থিতিশীলতা কাটবে না: আমীর খসরু

ছবি

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে ক্ষুব্ধ ফয়জুল করীম

ছবি

প্রত্যাশা অনুযায়ী গণমাধ্যম সংস্কার হয়নি, বললেন নাহিদ

ছবি

ঢাকায় আজ জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোট প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক দলগুলো

ছবি

রাজশাহীতে এনসিপি নেত্রীর আকস্মিক পদত্যাগ

ছবি

জামায়াতসহ কয়েক দলের যুগপৎ আন্দোলনের জবাব রাজপথেই দেবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন

ছবি

খালেদা জিয়ার ভাগ্নে শাহরিনকে আহ্বায়ক করে এইবির নতুন কমিটি

ছবি

নাশকতার দুই মামলা থেকে ফখরুল ও আব্বাসসহ ১০৬ জনকে অব্যাহতি

ছবি

এখন কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি

অভিন্ন দাবিতে তিন ইসলামী দলের যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

যুগপতে পাঁচ দাবিতে জামায়াতের তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫ সনাতন যোগ দিলেন জামায়াতে

ছবি

তারেকের নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বাবরের আলোচনা

ছবি

যুগপতে কারা থাকছে ঠিক হয়নি, তবে খেলাফতের কর্মসূচি ঘোষণা

জামায়াতের আযাদ: মুক্তিযুদ্ধ না মানলে ‘বাংলাদেশ অস্বীকার করা হবে’

ছবি

জুলাই সনদের গেরো: এবার আদালতের মত নিতে বলল বিএনপি

ছবি

‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরে রাজি বিএনপি, তবে আইনি ভিত্তি নিয়ে মতভেদ

ছবি

ডাকসু-জাকসু নির্বাচনে ‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রশ্ন তুললেন রিজভী

ছবি

মৌলবাদীরা ‘বেহেশতের টিকেট’ বিক্রি করছে: বিএনপির গয়েশ্বর

ছবি

সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিসের তিন দিনের কর্মসূচি

ছবি

সাবেক প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এবার তুহিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

ছবি

রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে বাস্তুতন্ত্রও নিরাপদ থাকবে: তারেক রহমান

ছবি

সরকার ও উপদেষ্টারা মাহফুজদের যথেচ্ছ ব্যবহার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে: নাহিদ ইসলাম

ছবি

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে পশু-পাখি ও বাস্তুতন্ত্রের অধিকার নিশ্চিত হবে: তারেক রহমান

ছবি

বসুন্ধরায় গোপন বৈঠক: ময়মনসিংহ জেলা আ.লীগ নেতার দোষ স্বীকার

ছবি

ঢাকার আগারগাঁওয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ‘নিষিদ্ধ’ আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

আওয়ামী লীগ লুটপাট করে দেশকে দেউলিয়া করে দিয়েছে: মঈন খান

ছবি

ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তারেকের আহ্বান

ছবি

বাংলাদেশের সংবিধানে শ্রমিক, জনতার অধিকার নিশ্চিত করা হয়নি: এনসিপি

ছবি

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মিন্টু

ছবি

জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: বিএনপি

tab

ইসি আইন বিল সংসদে, বিরোধিতা বিএনপির

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রোববার, ২৩ জানুয়ারী ২০২২

জাতীয় সংসদে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ বিল-২০২২ উপস্থাপনের বিরোধিতা করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপি দলীয় এমপি হারুনুর রশিদ। তবে তার বক্তব্যকে গুরুত্ব না দিয়ে এই আইন হলে কারচুপির পথ বন্ধ হয়ে যাবে, যার জন্য বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) আইনমন্ত্রী প্রধান সিইসি এবং ইসি নিয়োগ বিল-২০২২ জাতীয় সংসদে উত্থাপনের প্রস্তাব করলে বিএনপির এমপি হারুনুর রশিদ এর বিরোধিতা করেন। এ সময় আইনমন্ত্রী বিলের বিষয়ে ব্যাখা দেন। পরে বিলটি উপস্থাপিত হয় এবং সেটি ৭ দিনের মধ্য রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলটি সংসদে ওঠানোর বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বিএনপির হারুনুর রশিদ বলেন, যে বিলটি উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা জনগণের, এদেশে রাজনৈতিক দল ও সুধী সমাজের যে প্রত্যাশা তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আমরা দীর্ঘদিন দিন ধরে, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য একটি আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে আসছিলাম। আজকে আইনমন্ত্রী যে বিলটি উত্থাপন করেছেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলা হয়েছে- ‘যাহা লাউ তাহাই কদু’। অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে বলতে চাই- সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিগত যে দুটি নির্বাচন কমিশন, নকিব ও হুদা কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে এত প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

হারুন বলেন, আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৬ সালে বলেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে যাবেন না। ১৯৯৫-৯৬ সালে দীর্ঘ ১৭২ দিন হরতালের মধ্যদিয়ে আজকের প্রধানমন্ত্রী সেই সময় দাবি করেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছাড়া কোনো নির্বাচনে যাবেন না। বর্তমান সার্চ কমিটির মধ্য দিয়ে যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে মেয়াদ শেষ হবে। ওনাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস ও দুর্নীতির যে অভিযোগ রয়েছে তার জন্য ওনাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা খুবই জরুরি। আজকে যে আইনটি তোলা হয়েছে তাতে ধরে নিতে পারি ইতোপূর্বে সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত দুটি কমিশনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য আনা হয়েছে। এখানে নতুনত্ব কিছু নেই। ইতোপূর্বে যে কমিশন গঠিত হয়েছে তার অনুরূপ বিল এখানে তোলা হয়েছে। এই আইনটি প্রশ্নবিদ্ধ। এই আইন দিয়ে বর্তমান সঙ্কটের নিরসন হবে না। সঙ্কট থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব না। আমি দাবি করব- আইনটি প্রত্যাহার করুন। আইনমন্ত্রী কিছুদিন আগে বলেছিলেন এরকম একটি আইন তৈরির জন্য রাজনৈতিক দল ও সুধীসমাজের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এই কথা বলার পর তিনি কী করে এই আইনটি আনেন।

এরপর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এবং হারুনের বক্তব্যের খণ্ডন করে তার বক্তব্য রাখেন। খসড়া আইনের বিভিন্ন ধারা পড়ে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে, ওনাদের ইতিহাস বলতে হয়। নিজেরা নিজেরা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য যতরকম কারসাজি- বিচারপতি আজিজ সাহেবকে দিয়ে কমিশন গঠন, এক কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি, একজন ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার জন্য বিচারকদের বয়স ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ করেছিলেন। এটা ওনারা কার সঙ্গে আলোচনা করে করেছিলেন? ওনারা এখানে বসে নিজেরা নিজেরা করে ফেলেছিলেন। ওনারা কারো সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন মনে করেননি। কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার জন্য ওনারা নিরবচ্ছিন্ন নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। মানে নিরবচ্ছিন্ন কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার জন্য এটা করেছিলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে বলা আছে, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করতে হবে। আমরা সেই আইন করেছি। ওনারা বুঝে বলুক, না বুঝে বলুক, বলছেন এটা সার্চ কমিটির আইন। ওনারা বলছেন আইনটা আমরা ঠিক করিনি। ওনাদের সঙ্গে আলোচনা করিনি। কিছু দিন আগে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এই আইনের জন্য একটি খসড়া আমার কাছে দিয়েছিলেন। তখন আমি বলেছিলাম কোভিডের কারণে হয়তো এটি নাও করা যেতে পারে। তখন ওনারা বলেছিলেন, অধ্যাদেশ করে হলেও করতে হবে। আমি বলেছিলাম এই আইন সংসদে না এনে করা ঠিক হবে না। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সংসদে তার পরে করা উচিত।

তিনি বলেন, আইন না থাকায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সব রাজনৈতিক দলকে দাওয়াত দিয়ে তাদের মতামত নেন। তখন একটি কনসেসাস হয়েছিল। সার্চ কমিটির মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপরেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। তখন ওনাদের আপত্তি ছিল না। এখন এটি আইনের আওতায় আনার জন্য এই বিলটি আনা হয়েছে, সেটি ওনারা না পড়ে আপত্তি করছেন। উইদাউট প্রেজুডিস বলছি, যদি কোনো নির্বাচন কমিশনার কোনো অন্যায় করে থাকে, তাহলে কী তাকে এই আইনের নয় দফায় দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে? রাষ্ট্রপতি যে দুবার সার্চ কমিটি করেছেন, সেটাও আইনসিদ্ধ ছিল। সেটাও আইনের আওতায় আনা হল। এটা কনসেনশাসের ভিত্তিতে করা হয়েছিল। ওনাদের কথা হচ্ছে, যা করেন করেন, তালগাছ আমার। তালগাছ ওনাদের না। তালগাছ জনগণের। ওনারা না বুঝে বলছেন। আইনটা যখন করে ফেললাম পালের হাওয়া চলে গেছে। বলছেন এটা নেই, ওটা নেই। ওনারা তো অনেক আন্দোলনের কথা বলেছেন, আন্দোলনের পালে হাওয়া লাগেনি, এবারও সেটা হবে না।

আইনমন্ত্রী বলেন, ওনারা বিচারের কথা বলেছেন। আগে আজিজ সাহেবের (সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার) করতে হবে। এক কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার করার বিচার করতে হবে। এই আইন হলে ওনারা আর ভোট চুরি করতে পারবেন না, এটা তারা বুঝে গেছেন। এজন্য তাদের গাত্রদাহ। তাদের এগুলো ধর্তব্যে নিলে ওনারা বাংলাদেশকে যে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে চেয়েছিল সেটাই হবে।

back to top