alt

বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান সম্পর্কে মির্জা ফখরুল

এটা কোনো সভ্য দেশে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করতে পারে, এটা আমাদের ধারণার বাইরে

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশের বাধায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি। তাকে কার্যালয়ে ঢুকতে না দেয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশের এমন অভিযানকে ‘জঘন্য’ বলে অভিহিত করেন। পুলিশের বাধা পেয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনের ফুটপাতে বসে পড়েন ফখরুল। তিনি তখন সাংবাদিকদের বলেন, “এটা একটা বর্বরোচিত, পৈশাচিক, নারকীয় ও মর্মান্তিক ঘটনা। আমি মনে করি যে, কোনো সভ্য দেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এইভাবে রেইড,এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য না।”

বুধবার বিকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে দুজন নিহত হয় বলে বিএনপির দাবি; তবে পুলিশ একজনের কথা স্বীকার করেছে। সংঘর্ষের পর বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে পুলিশ; সেখান থেকে বিএনপির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ বহু নেতা-কর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। এসময় ফখরুল ভেতরে ঢুকতে চাইলেও পুলিশ তাকেও আটকে দেয়।

সরকারের বিরুদ্ধে অধিকার হরণের অভিযোগ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এধরনের ঘটনা ঘটিয়ে তারা সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে, আমাদের অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। এটা গণতন্ত্রকে ধবংস করা, মানবাধিকার লঙ্ঘন করার শামিল। এটা গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত। এর থেকে খারাপ কাজ কিছু হতে পারে না। আমার ভাষা নাই বলার। আই্ অ্যাম শকড।”

বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বানচাল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

ফুটপাতে অবস্থান নেওয়া ফখরুলকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “আপনি কি সারা রাত থাকবেন এখানে?” জবাবে তিনি বলেন, “ইটস ডিপেন্ডস …. তারা কখন এই অভিযান শেষ করে তার উপর।”

বিকাল ৫টায় মির্জা ফখরুল দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। কলাপসিবল গেইট বন্ধ করে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা এই অভিযান শুরু করে। ফখরুল একাধিকবার পুলিশ কর্মকর্তাদের তাকে তার কার্যালয়ে ঢুকতে দিতে বললেও তারা কর্ণপাত করেননি। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এটা ক্রাইম জোন। স্যার একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমি উপরের সাথে কথা বলে নিই।”

বিএনপি মহাসচিব তখন বলেন, “আমি পুলিশ কমিশনারের সাথে বলে এসেছি। আপনি কথা বলুন। আমাকে যেতে দিন।” পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে বলেন, “স্যার, দেখছি স্যার।”

এক পর্যায়ে বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে থেকে পুলিশ দলীয় চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান খান শিমুল বিশ্বাসকে ধরে বের করে নিয়ে আসে। ফখরুল তখন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তারা তা না শুনে শিমুল বিশ্বাসকে নিয়ে যায়। এরপরই বিএনপি মহাসচিব ফুটপাতে বসে পড়েন।

পরে পুলিশ ভ্যান আসার পর নেতা-কর্মীদের লাইন দাঁড় করায় পুলিশ এবং কর্মীদেরকে হাত উচু করে ভ্যানে তুলতে থাকে। রাত ৭টা পর্যন্ত দুটি ভ্যানে করে পর্যায়ক্রমে চার দফায় নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। নেওয়ার আগে দলীয় কার্যালয়ের নিচতলায় নেতা-কর্মীদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রাখে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করে ফখরুল বলেন, “আপনারা এই অসহায় মানুষগুলোকে এভাবে ধইরেন না। এটা ঠিক নয়। দিস ইজ টু মাচ। ইন মাই প্রেজেন্টস, আপনারা একদম ঠিক করছেন না।”এই সময়ও বিএনপিকর্মীদের হাত উঁচু করে নিয়ে যাওয়া থামায়নি পুলিশ।

এক পর্যায়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে অনুরোধ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। আমাকে অফিসে যেতে দিন। এভাবে আপনারা রেইড করতে পারেন না।”তবে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কেউ তার কথা শোনেননি।

পুলিশের অভিযানের পর অফিসের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তিনি বলেন, “আমার সামনে যেটা দেখলাম অফিসের সমস্ত কম্পিউটার, যতরকম ডকুমেন্ট, সব তারা নিয়ে গেছে। সমস্ত সিসি ক্যামেরাগুলো তারা ভেঙে দিয়েছে। বিদ্যুতের লাইট ভেঙে দিয়েছে, যাতে কোনো এভিডেন্স না থাকে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। আই টক টু ডিএমপি কমিশনার, আই টক টুক হোম মিনিস্টার। কোনো লাভ নেই। ইনফেক্ট এখানে দেয়ার ইজ নো গভার্নমেন্ট, দেয়ার ইজ নো স্টেট হিয়ার।”

ফখরুল বলেন, “আমরা পরিস্কারভবে বলতে চাই, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাস করি এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে কর্মসূচি আমরা পালন করে আসছি।

“দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকারের মন্ত্রীরা উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখতে শুরু করে। তাদের সাধারণ সম্পাদক পরিষ্কার করে বলেন, ‘খেলা হবে’। আারেকজন মন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতের মতো সাফ করে দেওয়া হবে’। এই যে ভয়াবহ সমস্ত উক্তি, সমস্ত কথা তখন থেকে যেটা আশঙ্কা করেছিলাম যে ২০১৩/১৪/১৫ এর মতো নীলনকশা করছে জনগণের ন্যায়সঙ্গত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমন করে দিতে।”

তিনি বলেন, “এই অভিযান শুধু বিএনপিকে ক্ষতি করে নাই, সমস্ত বাংলাদেশে মানুষের বুকে আঘাত হেনেছে। একই সঙ্গে তারা গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সেই ব্যবস্থাকে তারা পুরোপুরি ধবংস করে দেওয়ার জন্য তারা পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে।

“এটা কোনো সভ্য দেশে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করতে পারে, এটা আমাদের ধারণার বাইরে। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপা্র সরকার কাজ করছে কি না, সন্দেহ আছে। আমরা বার বার তাদেরকে অনুরোধ করেছি এখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হচ্ছে, কোনো ঝামেলা করবেন না। কিন্তু তারা কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি।”

ছবি

বিএনপি অন্যায়ভাবে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে: জামায়াত নেতা তাহের

ছবি

বিদেশে যেতে দেয়া হলো না কেন, সরকারের ব্যাখ্যা চান মিলন

ছবি

ঝটিকা মিছিল থেকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ৪৬ জন গ্রেপ্তার: ডিএমপি

ছবি

সরকারে তিন দলের প্রভাব, জামায়াতের কর্তৃত্ব সবচেয়ে বেশি: আনু মুহাম্মদ

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার ও ঐক্যমত্য কমিশন ‘সংকট সৃষ্টি’ করেছে: মির্জা ফখরুল

ছবি

বিএনপি সরকারের ওপর ‘অন্যায়ভাবে চাপ সৃষ্টি’ করছে: জামায়াত নেতা তাহের

ঢাকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলে পুলিশের অভিযান, আটক ৩০ নেতা-কর্মী

ছবি

বিদেশে যেতে না দেওয়ায় সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চাইলেন বিএনপি নেতা মিলন

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে: মির্জা ফখরুল

ছবি

সনদ বাস্তবায়নে প্রথম প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে হবে: সরকারকে এনসিপি

ছবি

ক্ষমা চাইতে নারাজ, সমর্থকদের ভোট বর্জনের হুঁশিয়ারি হাসিনার

ছবি

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ: হতাশ বিএনপি, বললো ‘প্রতারণা’

ছবি

উখিয়া-টেকনাফে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ হোন

ছবি

জুলাই সনদে সইয়ে যেসব শর্ত দিলো এনসিপি

ছবি

গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবসহ নির্বাচন কমিশনকে জামায়াতের ১৮ দফা সুপারিশ

ছবি

আইসিসিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর ‘সহিংসতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অভিযোগ

ছবি

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের সুযোগ নেই: আমীর খসরু

ছবি

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ‘বহির্ভূত বিষয়’ যুক্তের অভিযোগ বিএনপির সালাহউদ্দিনের

ছবি

বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট: নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে

ছবি

এনসিপির শর্তে জুলাই সনদে সইয়ের ঘোষণা

ছবি

গণভোটে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ, সাংবিধানিক আদেশ চায় ঐকমত্য কমিশন

ছবি

অস্ত্র মামলায় যুবলীগের সাবেক নেতা সম্রাটের যাবজ্জীবন

ছবি

নির্বাচন: ভোটকেন্দ্রে থাকবে ১৩ জন আনসার, প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নিরাপত্তায় থাক‌বে একজন সশস্ত্র আনসার

ছবি

ইসলামী ব্যাংক কর্মীদের নির্বাচনী দায়িত্ব না দিতে ‘বিএনপির আহ্বানে’ জামায়াতের উদ্বেগ

ছবি

সমাবেশে বক্তাদের হুঁশিয়ারি, বিদেশিদের বন্দর দেয়ার সিদ্ধান্ত না পাল্টালে তীব্র আন্দোলন

ছবি

রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে তারেকের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

ছবি

রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির শতাধিক নেতা কর্মীর বিএনপিতে যোগদান

ছবি

নির্বাচনী জোট নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি এনসিপি: সারজিস

ছবি

বিএনপি যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সুযোগ্য করে গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ : ডঃ মঈন খান

ছবি

বিএনপি ক্ষমতায় এলে বিলুপ্ত হবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ: আমীর খসরু

ছবি

ঘিওরে বিএনপির ৩১ দফা প্রচারে পথসভা

ছবি

বিএনপির লক্ষ্য ‘বৃহৎ জোট গঠন’, বললেন সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

মাহফুজ আলমের বক্তব্যে বিভ্রান্তি এড়াতে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

ছবি

ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠতে পারে, এমন কিছুতে যাওয়া ঠিক হবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

‘আপত্তিকর মন্তব্যের’ অভিযোগ, পুবাইল থানার ওসির শাস্তি দাবি জামায়াতের

পিএসসি স্বায়ত্তশাসন চাইলেও জনপ্রশাসন ‘গুম চালায়’: হাসনাত

tab

বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান সম্পর্কে মির্জা ফখরুল

এটা কোনো সভ্য দেশে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করতে পারে, এটা আমাদের ধারণার বাইরে

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২২

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশের বাধায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি। তাকে কার্যালয়ে ঢুকতে না দেয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশের এমন অভিযানকে ‘জঘন্য’ বলে অভিহিত করেন। পুলিশের বাধা পেয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনের ফুটপাতে বসে পড়েন ফখরুল। তিনি তখন সাংবাদিকদের বলেন, “এটা একটা বর্বরোচিত, পৈশাচিক, নারকীয় ও মর্মান্তিক ঘটনা। আমি মনে করি যে, কোনো সভ্য দেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এইভাবে রেইড,এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য না।”

বুধবার বিকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে দুজন নিহত হয় বলে বিএনপির দাবি; তবে পুলিশ একজনের কথা স্বীকার করেছে। সংঘর্ষের পর বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে পুলিশ; সেখান থেকে বিএনপির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ বহু নেতা-কর্মীকে আটক করে নিয়ে যায়। এসময় ফখরুল ভেতরে ঢুকতে চাইলেও পুলিশ তাকেও আটকে দেয়।

সরকারের বিরুদ্ধে অধিকার হরণের অভিযোগ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এধরনের ঘটনা ঘটিয়ে তারা সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে, আমাদের অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। এটা গণতন্ত্রকে ধবংস করা, মানবাধিকার লঙ্ঘন করার শামিল। এটা গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত। এর থেকে খারাপ কাজ কিছু হতে পারে না। আমার ভাষা নাই বলার। আই্ অ্যাম শকড।”

বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বানচাল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

ফুটপাতে অবস্থান নেওয়া ফখরুলকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “আপনি কি সারা রাত থাকবেন এখানে?” জবাবে তিনি বলেন, “ইটস ডিপেন্ডস …. তারা কখন এই অভিযান শেষ করে তার উপর।”

বিকাল ৫টায় মির্জা ফখরুল দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। কলাপসিবল গেইট বন্ধ করে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা এই অভিযান শুরু করে। ফখরুল একাধিকবার পুলিশ কর্মকর্তাদের তাকে তার কার্যালয়ে ঢুকতে দিতে বললেও তারা কর্ণপাত করেননি। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এটা ক্রাইম জোন। স্যার একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমি উপরের সাথে কথা বলে নিই।”

বিএনপি মহাসচিব তখন বলেন, “আমি পুলিশ কমিশনারের সাথে বলে এসেছি। আপনি কথা বলুন। আমাকে যেতে দিন।” পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে বলেন, “স্যার, দেখছি স্যার।”

এক পর্যায়ে বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে থেকে পুলিশ দলীয় চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান খান শিমুল বিশ্বাসকে ধরে বের করে নিয়ে আসে। ফখরুল তখন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তারা তা না শুনে শিমুল বিশ্বাসকে নিয়ে যায়। এরপরই বিএনপি মহাসচিব ফুটপাতে বসে পড়েন।

পরে পুলিশ ভ্যান আসার পর নেতা-কর্মীদের লাইন দাঁড় করায় পুলিশ এবং কর্মীদেরকে হাত উচু করে ভ্যানে তুলতে থাকে। রাত ৭টা পর্যন্ত দুটি ভ্যানে করে পর্যায়ক্রমে চার দফায় নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। নেওয়ার আগে দলীয় কার্যালয়ের নিচতলায় নেতা-কর্মীদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রাখে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করে ফখরুল বলেন, “আপনারা এই অসহায় মানুষগুলোকে এভাবে ধইরেন না। এটা ঠিক নয়। দিস ইজ টু মাচ। ইন মাই প্রেজেন্টস, আপনারা একদম ঠিক করছেন না।”এই সময়ও বিএনপিকর্মীদের হাত উঁচু করে নিয়ে যাওয়া থামায়নি পুলিশ।

এক পর্যায়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে অনুরোধ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি অসুস্থ হয়ে গেছি। আমাকে অফিসে যেতে দিন। এভাবে আপনারা রেইড করতে পারেন না।”তবে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের কেউ তার কথা শোনেননি।

পুলিশের অভিযানের পর অফিসের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তিনি বলেন, “আমার সামনে যেটা দেখলাম অফিসের সমস্ত কম্পিউটার, যতরকম ডকুমেন্ট, সব তারা নিয়ে গেছে। সমস্ত সিসি ক্যামেরাগুলো তারা ভেঙে দিয়েছে। বিদ্যুতের লাইট ভেঙে দিয়েছে, যাতে কোনো এভিডেন্স না থাকে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। আই টক টু ডিএমপি কমিশনার, আই টক টুক হোম মিনিস্টার। কোনো লাভ নেই। ইনফেক্ট এখানে দেয়ার ইজ নো গভার্নমেন্ট, দেয়ার ইজ নো স্টেট হিয়ার।”

ফখরুল বলেন, “আমরা পরিস্কারভবে বলতে চাই, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাস করি এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে কর্মসূচি আমরা পালন করে আসছি।

“দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকারের মন্ত্রীরা উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখতে শুরু করে। তাদের সাধারণ সম্পাদক পরিষ্কার করে বলেন, ‘খেলা হবে’। আারেকজন মন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতের মতো সাফ করে দেওয়া হবে’। এই যে ভয়াবহ সমস্ত উক্তি, সমস্ত কথা তখন থেকে যেটা আশঙ্কা করেছিলাম যে ২০১৩/১৪/১৫ এর মতো নীলনকশা করছে জনগণের ন্যায়সঙ্গত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমন করে দিতে।”

তিনি বলেন, “এই অভিযান শুধু বিএনপিকে ক্ষতি করে নাই, সমস্ত বাংলাদেশে মানুষের বুকে আঘাত হেনেছে। একই সঙ্গে তারা গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরিয়ে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সেই ব্যবস্থাকে তারা পুরোপুরি ধবংস করে দেওয়ার জন্য তারা পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে।

“এটা কোনো সভ্য দেশে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করতে পারে, এটা আমাদের ধারণার বাইরে। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপা্র সরকার কাজ করছে কি না, সন্দেহ আছে। আমরা বার বার তাদেরকে অনুরোধ করেছি এখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হচ্ছে, কোনো ঝামেলা করবেন না। কিন্তু তারা কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি।”

back to top