alt

আদালতে হট্টগোল

বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের নামে থানায় জিডি, ফের ধাক্কাধাক্কি

আদালত বার্তা পরিবেশক : বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

বুধবার আদালতে আইনজীবীদের ধাক্কাধাক্কি -সংবাদ

তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতে হট্টগোলের ঘটনায় বিএনপিপন্থি ২৮ আইনজীবীর নাম উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে কোতোয়ালি থানায়। কাতোয়ালি থানার ওসি মো. শাহীনুর রহমান জানান, মহানগর দায়রা জজ আদালতের নাজির শাহ মো. মামুন মঙ্গলবার থানায় গিয়ে ওই জিডি করেন।

এদিকে বুধবারও ওই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে এজলাসের বারান্দায় স্লোগান দেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা, সে সময় আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীদের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দেড় দশক আগের এই মামলার বিচার কাজ চলছে ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে।

মঙ্গলবার দুপুরে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পরপরই আদালতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে তর্কাতর্কি ও হৈ চৈ শুরু হয়। এ সময় বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান। হট্টগোলের একপর্যায়ে বিএনপির আইনজীবীদের ধাওয়া করে এজলাস থেকে বের করে দেন আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা। কয়েকজন আইনজীবী তখন আহত হন। পরে সন্ধ্যায় এজলাসে উঠে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।

রাতে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা জিডিতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে বিচারিক কার্যক্রম ‘ব্যাহত করার জন্য’ উপস্থিত বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মামলার সাক্ষীদের ‘ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রভাবিত করার’ চেষ্টা করেন। আদালতের ভেতর হইচই, হট্টগোলসহ সাক্ষীদের ‘অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ’ করেন। আদালতে উপস্থিত অ্যাডিশনাল পি পি অ্যাডভোকেট তাপস পাল ও দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করলে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয়াসহ হইচই, হট্টগোল করে বিচারিক কার্যক্রম ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে।

এতে আদালতের ভেতরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে মহানগর দায়রা জজ আদালত সাময়িক মুলতবি করেন। পরে থানা পুলিশকে অবহিত করলে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। আরও কিছু সময় পরে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা আদালতে প্রবেশ করলে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা হইচই, হট্টগোল করতে করতে আদালত কক্ষ ত্যাগ করে। পরে আদালত পুনরায় মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণসহ দিনের পরবর্তী বিচারিক কার্যক্রম শেষ করেন।

জিডিতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তারা হলেন- বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট সেলিম, মিলন, মিনহাজ রানা, আনোয়ার হোসেন, মো. জাবেদ, শফিকুল ইসলাম শফিক, আব্দুল হান্নান, আব্দুল খালেক মিলন, জহিরুল ইসলাম কাইয়ুম, তাহমিনা আক্তার হাশমী, শামিমা আক্তার শাম্মি, নারগিস সুলতানা মুক্তি, ওমর ফারুক ফারুকী, মো. নিজাম উদ্দিন নিজাম, মো. ইব্রাহীম স্বপন, মো. মোয়াজ্জেম, মো. নুরুজ্জামান, এইচ এম মাসুম, মো. হিরা, মো. সামছুজ্জামান দিপু, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. মাসুম হাসান, মো. নিহার হোসেন ফারুক, মো. তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ, মো. হাফিজুর রহমান হাফিজ, জহিরুল ইসলাম মুকুল, নুরুজ্জামান তপনসহ আরও ১০০/১৫০ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি।

এদিকে বুধবার (৩১ মে) বিকেলে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীরা সাক্ষ্য দেয়ার সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা এজলাসের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ‘এজলাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘প্রহসনের বিচার মানি না মানব না’,‘ তারেক জিয়ার ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

মামলা বৃত্তান্ত

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে তারেক গ্রেপ্তার থাকা অবস্থায় ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি করেন দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক জহিরুল হুদা। তিনি সম্প্রতি আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, তারেক ও জোবায়দার ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে।

মামলায় জোবায়দার মা ইকবাল মান্দ বানুকেও আসামি করা হয়েছিল। ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয় আদালতে। পরে উচ্চ আদালত তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম বাতিল করে দেয়। অভিযোগপত্র জমা হওয়ার পর মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয় জোবায়দার পক্ষেও। তখন মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করে হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখে।

এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে রায় দেয় হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই আপিলের আবেদন করেন জোবায়দা। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ টু আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখে। এরপর গত ১৩ এপ্রিল তারেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার। তারেক ২০০৮ সালে তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোতে জামিন নিয়ে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান চিকিৎসা নিতে। তারপর থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক এবং তার স্ত্রী জোবায়দাকে পলাতক দেখিয়ে এই মামলার বিচার চলছে।

ছবি

নাশকতার দুই মামলা থেকে ফখরুল ও আব্বাসসহ ১০৬ জনকে অব্যাহতি

ছবি

এখন কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি

অভিন্ন দাবিতে তিন ইসলামী দলের যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

যুগপতে পাঁচ দাবিতে জামায়াতের তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫ সনাতন যোগ দিলেন জামায়াতে

ছবি

তারেকের নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বাবরের আলোচনা

ছবি

যুগপতে কারা থাকছে ঠিক হয়নি, তবে খেলাফতের কর্মসূচি ঘোষণা

জামায়াতের আযাদ: মুক্তিযুদ্ধ না মানলে ‘বাংলাদেশ অস্বীকার করা হবে’

ছবি

জুলাই সনদের গেরো: এবার আদালতের মত নিতে বলল বিএনপি

ছবি

‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরে রাজি বিএনপি, তবে আইনি ভিত্তি নিয়ে মতভেদ

ছবি

ডাকসু-জাকসু নির্বাচনে ‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রশ্ন তুললেন রিজভী

ছবি

মৌলবাদীরা ‘বেহেশতের টিকেট’ বিক্রি করছে: বিএনপির গয়েশ্বর

ছবি

সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিসের তিন দিনের কর্মসূচি

ছবি

সাবেক প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এবার তুহিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

ছবি

রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে বাস্তুতন্ত্রও নিরাপদ থাকবে: তারেক রহমান

ছবি

সরকার ও উপদেষ্টারা মাহফুজদের যথেচ্ছ ব্যবহার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে: নাহিদ ইসলাম

ছবি

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে পশু-পাখি ও বাস্তুতন্ত্রের অধিকার নিশ্চিত হবে: তারেক রহমান

ছবি

বসুন্ধরায় গোপন বৈঠক: ময়মনসিংহ জেলা আ.লীগ নেতার দোষ স্বীকার

ছবি

ঢাকার আগারগাঁওয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ‘নিষিদ্ধ’ আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

আওয়ামী লীগ লুটপাট করে দেশকে দেউলিয়া করে দিয়েছে: মঈন খান

ছবি

ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তারেকের আহ্বান

ছবি

বাংলাদেশের সংবিধানে শ্রমিক, জনতার অধিকার নিশ্চিত করা হয়নি: এনসিপি

ছবি

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মিন্টু

ছবি

জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: বিএনপি

ছবি

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে গাজীপুরে সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে ইসলামিক আন্দোলন

ছবি

নির্বাচনের আগে পরিবেশ সৃষ্টি জরুরি: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ

ছবি

সংবিধান সংশোধন: মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন পদ্ধতিতে ভিন্নমত রাজনৈতিক দলগুলোর

ছবি

বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন হলে দেশের সংকট আরও বাড়বে: আনিসুল ইসলাম

ছবি

‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নে কোনো কিছু চাপিয়ে দেবে না কমিশন: আলী রীয়াজ

ছবি

ডাকসু জয়ে ছাত্র শিবিরকে অভিনন্দন পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর

ছবি

এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ পদত্যাগ ঘোষণা

ছবি

আ.লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ছাত্রলীগের সব ভোট নিয়ে নিয়েছে শিবির : মির্জা আব্বাস

ছবি

ব্রিটিশ হাই কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতে ইসলামের আমির

ছবি

ডাকসুতে জয়ীদের ব্যক্তিগত অভিনন্দন জানালেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

ডাকসু নির্বাচন: ফল ঘোষণা ঘিরে কারচুপির অভিযোগ, ফল প্রত্যাখ্যান করলেন আবিদুল

tab

news » politics

আদালতে হট্টগোল

বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের নামে থানায় জিডি, ফের ধাক্কাধাক্কি

আদালত বার্তা পরিবেশক

বুধবার আদালতে আইনজীবীদের ধাক্কাধাক্কি -সংবাদ

বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতে হট্টগোলের ঘটনায় বিএনপিপন্থি ২৮ আইনজীবীর নাম উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে কোতোয়ালি থানায়। কাতোয়ালি থানার ওসি মো. শাহীনুর রহমান জানান, মহানগর দায়রা জজ আদালতের নাজির শাহ মো. মামুন মঙ্গলবার থানায় গিয়ে ওই জিডি করেন।

এদিকে বুধবারও ওই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে এজলাসের বারান্দায় স্লোগান দেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা, সে সময় আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীদের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দেড় দশক আগের এই মামলার বিচার কাজ চলছে ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে।

মঙ্গলবার দুপুরে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পরপরই আদালতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে তর্কাতর্কি ও হৈ চৈ শুরু হয়। এ সময় বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান। হট্টগোলের একপর্যায়ে বিএনপির আইনজীবীদের ধাওয়া করে এজলাস থেকে বের করে দেন আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা। কয়েকজন আইনজীবী তখন আহত হন। পরে সন্ধ্যায় এজলাসে উঠে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান।

রাতে কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা জিডিতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে বিচারিক কার্যক্রম ‘ব্যাহত করার জন্য’ উপস্থিত বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মামলার সাক্ষীদের ‘ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রভাবিত করার’ চেষ্টা করেন। আদালতের ভেতর হইচই, হট্টগোলসহ সাক্ষীদের ‘অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ’ করেন। আদালতে উপস্থিত অ্যাডিশনাল পি পি অ্যাডভোকেট তাপস পাল ও দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করলে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয়াসহ হইচই, হট্টগোল করে বিচারিক কার্যক্রম ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে।

এতে আদালতের ভেতরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে মহানগর দায়রা জজ আদালত সাময়িক মুলতবি করেন। পরে থানা পুলিশকে অবহিত করলে থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। আরও কিছু সময় পরে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা আদালতে প্রবেশ করলে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা হইচই, হট্টগোল করতে করতে আদালত কক্ষ ত্যাগ করে। পরে আদালত পুনরায় মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণসহ দিনের পরবর্তী বিচারিক কার্যক্রম শেষ করেন।

জিডিতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তারা হলেন- বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট সেলিম, মিলন, মিনহাজ রানা, আনোয়ার হোসেন, মো. জাবেদ, শফিকুল ইসলাম শফিক, আব্দুল হান্নান, আব্দুল খালেক মিলন, জহিরুল ইসলাম কাইয়ুম, তাহমিনা আক্তার হাশমী, শামিমা আক্তার শাম্মি, নারগিস সুলতানা মুক্তি, ওমর ফারুক ফারুকী, মো. নিজাম উদ্দিন নিজাম, মো. ইব্রাহীম স্বপন, মো. মোয়াজ্জেম, মো. নুরুজ্জামান, এইচ এম মাসুম, মো. হিরা, মো. সামছুজ্জামান দিপু, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. মাসুম হাসান, মো. নিহার হোসেন ফারুক, মো. তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ, মো. হাফিজুর রহমান হাফিজ, জহিরুল ইসলাম মুকুল, নুরুজ্জামান তপনসহ আরও ১০০/১৫০ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি।

এদিকে বুধবার (৩১ মে) বিকেলে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীরা সাক্ষ্য দেয়ার সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা এজলাসের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ‘এজলাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘প্রহসনের বিচার মানি না মানব না’,‘ তারেক জিয়ার ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

মামলা বৃত্তান্ত

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে তারেক গ্রেপ্তার থাকা অবস্থায় ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি করেন দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক জহিরুল হুদা। তিনি সম্প্রতি আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, তারেক ও জোবায়দার ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে।

মামলায় জোবায়দার মা ইকবাল মান্দ বানুকেও আসামি করা হয়েছিল। ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয় আদালতে। পরে উচ্চ আদালত তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম বাতিল করে দেয়। অভিযোগপত্র জমা হওয়ার পর মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয় জোবায়দার পক্ষেও। তখন মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করে হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখে।

এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে রায় দেয় হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই আপিলের আবেদন করেন জোবায়দা। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ টু আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখে। এরপর গত ১৩ এপ্রিল তারেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার। তারেক ২০০৮ সালে তার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোতে জামিন নিয়ে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান চিকিৎসা নিতে। তারপর থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক এবং তার স্ত্রী জোবায়দাকে পলাতক দেখিয়ে এই মামলার বিচার চলছে।

back to top