আফ্রিকার বিস্ময় মরক্কোকে ২-১ গোলে পরাজিত করে বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান লাভ করেছে ক্রোয়েশিয়া। সেমিফাইনালে পরাজিত দুই দলের এ ম্যাচে তিনটি গোলই হয় প্রথমার্ধে। ৭ মিনিটে গভারডিয়ল গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে এগিয়ে দেয়ার দুই মিনিটের মধ্যেই দারির গোলে সমতা ফেরায় মরক্কো। প্রথমার্ধের খেলার তিন মিনিট বাকি থাকতে অরসিচ গোল করে এগিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়াকে। শেষ পর্যন্ত এ গোলটিই হয়ে যায় জয়সূচক গোল।

আন্ডারডগ হিসেবে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলতে নেমে সাফল্য পেয়েছে দল দুটি। যদিও গতবারের হিসাব করলে ক্রোয়েশিয়ার এক ধাপ অবনমন হয়েছে। তারা গত আসরে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছিল। এবার তাদেরকে সন্তুষ্ঠ থাকতে হলো তৃতীয় হয়েই। সেদিক থেকে হিসাব করলে মরক্কোর অর্জন নিঃসন্দেহে অনেক বড়। মরক্কো এর আগে কোন দিনই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যায়ে খেলতে পারেনি। কিন্তু এবার তারা খেলেছে সেমিফাইনালে এবং শেষ পর্যন্ত চতুর্থ স্থান লাভ।

ক্রোয়েশিয়া প্রথমার্ধে প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় ২-১ গোলে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে অপেক্ষাকৃত সফল দল ক্রোয়েশিয়া বলতে গেলে ম্যাচের প্রথম সুযোগ থেকেই গোল করে এগিয়ে যায়। ৭ মিনিটে তারা গোলটি করে সেটপিচ থেকে। পেনাল্টি বক্সের বেশ খানিকটা বাইরে ফ্রি কিক পায় ইউরোপিয়ান দলটি। ফ্রি কিক থেকে উড়ে যাওয়া বল পেরিসিচ হেডে ফাকা জায়গায় দিলে গভারডিয়ল হেডে পরাস্ত করেন ইয়ানসি বোনোকে। ক্রোয়েশিয়া অবশ্য বেশীক্ষণ এ লিড ধরে রাখতে পারেনি। দুই মিনিট পরই সমতা ফেরায় মরক্কো। তাদের গোলটিও হয় ফ্রি কিক থেকেই। ফ্রি কিকের বল পেনাল্টি বক্সে গেলে ক্লিয়ারের জন্য ফ্লিক করেন মদ্রিচ কিন্তু সেটি চলে যায় দারির কাছে এবং তিনি সহজেই বল জালে পাঠিয়ে সমতা ফেরান।

আক্রমন পাল্টা আক্রমনে খেলা চলতে থাকে এবং ৪২ মিনিটে আবার গোল করে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। সম্মিলিত একটি আক্রমন থেকে পেনাল্টি বক্সের ঠিক কোনার দিকে বল পান অরসিচ এবং তিনি সেখান থেকে বাকানো শটে গোলটি করেন। তার শট ঝাপিয়েও নাগাল পাননি গোলরক্ষক বোনো। বল পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে গেলে ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে যায় ২-১ গোলে।

গোল শোধ করার জন্য দ্বিতীয়ার্ধে মরক্কো আক্রমন জোরদার করে। কিন্তুু তাতে খুব বেশী সুবিধা করতে পারেনি তারা। উল্টো কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোলের সুযোগ বেশী সৃষ্টি করে ক্রোয়েশিয়াই। সেগুলো কাজে লাগাতে না পারায় ব্যবধান বাড়েনি। অবশ্য খেলার একেবারে শেষ মুহূর্তে দারুন একটি সুযোগ পেয়েছিল মরক্কো। গোলমুখে উড়ে আসা ক্রসে অনেকটা লাফিয়ে হেড করেছিলেন এন নেসেরি। কিন্তু সেটি ক্রসবারের সামান্য উপর দিয়ে বাইরে গেলে সমতা ফেরাতে ব্যর্থ হয় মরক্কো। এর পর পরই খেলা শেষ হয়ে যায় এবং জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে লুকা মদ্রিচরা।