ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে উত্তাপ। আগামী ২৬ অক্টোবর নির্বাচন হবে।
কাজী সালাহউদ্দিন পরবর্তী নতুন দিনের ফুটবলের হাল কে ধরবেন তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা। প্রার্থীদের সমালোচনাও চলছে দেদারসে। এখন পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে তিনজনের নাম নিশ্চিত হওয়া গেছে, বসুন্ধরা কিংস এর ইমরুল হাসান, সাইফ পাওয়ার টেক এর তরফদার রুহুল আমিন ও ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি তাবিথ আওয়াল সভাপতি পদে দাঁড়াতে যাচ্ছেন।
এসকল প্রার্থীদের মধ্যে তরফদার রুহুল আমিনকে নিয়েই রয়েছে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা। তিনি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট বলেও ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে খবরে এসেছে।
কেন সমালোচনা তাকে নিয়ে: ২০১৮ সালে সাইফ পাওয়ারটেকের কর্ণধার তরফদার রুহুল আমিন দেশের প্রত্যেকটি জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে দুই লক্ষ টাকা করে দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল,বাফুফে সভাপতি হওয়ার। কিন্তু তার ইচ্ছে পূরণ হয়নি। অনিবার্য বাস্তবতায় তিনি ফুটবল থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। সেই তরফদার যখন পুনরায় বাফুফে সভাপতি হওয়ার লড়াইয়ে অবতীর্ণ, দেশের সব পর্যায়ের ক্রীড়া সংগঠক ও আসন্ন বাফুফে নির্বাচনের কাউন্সিলরদের মাঝে বিস্ময় প্রকাশ করতে দেখা গেছে। তাদের বক্তব্য হলো, তিনি যেভাবে শুরু করেছিলেন, তার ধারাবাহিকতা রাখতে পারেন নি। দীর্ঘদিন পর হঠাৎ উদয় হলেন, কতটুকু আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে।
এদিকে, তরফদার রুহুল আমিনের দেশব্যাপি দুই লক্ষ টাকা বিতরণ নিয়েও আছে সমালোচনা। সে সময় দেশের একটি লিজিং কোম্পানীর এমডি তরফদার রুহুল আমিনকে ঋণখেলাপি উল্লেখ করে বলেছিলেন, ঋণ খেলাপি হয়ে আমাদের কিস্তি পরিশোধ না করে সে কিভাবে দেড় কোটি টাকা উৎকোচ হিসাবে ফুটবলের জন্য ব্যবহার করছে?
সূত্রমতে তরফদার সে সময়ের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাবেক হুইপ শামসুল হক চৌধুরী,সাবেক চাসিক মেয়র আ জ ম নাসির, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক সাংসদ কয়েস চৌধুরী ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের মাধ্যমে প্রায় হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তবে তরফদার রুহুল আমিন সবকিছু স্বাভাবিক করে দেখছেন এই কারণে, তার ব্যবসায়িক উত্থান হয়েছিল বিএনপি নেতা সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী প্রয়াত কর্নেল ( অবঃ) আকবর এর হাত ধরে!
প্রসঙ্গত, গত ১৪ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে যখন কাজী সালাহউদ্দীন আগামী নির্বাচনে আর সভাপতির পদে দাঁড়াবেন না বলে ঘোষণা করেন, ঠিক তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ তারকা একটি হোটেলকে ভেন্যু করে বিএনপি নেতা ও সাবেক গোলরক্ষক গ্রেট আমিনুল হকের প্রকাশ্য উপস্থিতি ও সমর্থনে তরফদার রুহুল আমিন ২৬ অক্টোবর বাফুফে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়ে দেন।
দুই ক্লিন ইমেজ প্রার্থীর লড়াই: ক্লিন ইমেজ প্রার্থী হিসেবে বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ও ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ইমরুল হাসানের প্রতিদ্বন্দী হওয়ার জোর গুঞ্জন রয়েছে। যদিও তিনি এখনও কোন সংবাদ সম্মেলনে আসেননি, তবে তার নামটি আলোচনায় এগিয়ে রাখছেন ফুটবল সংগঠক ও সংশ্লিস্টরা। ফুটবলের স্বার্থ বিবেচনায় তার ওপর ভরসা রাখতে চায় দেশের ফুটবল সংগঠকরা। গেল ২৪ অক্টোবর বসুন্ধরা ফুটবল একাডেমি করার ঘোষণা দিয়েছেন ইমরুল হাসান। তার অন্যতম অর্জনের মধ্যে রয়েছে বসুন্ধরা ফুটবল স্টেডিয়াম , ক্লাব ফুটবলে বসুন্ধরা কিংসের এশিয়ায় সাফল্য অর্জনসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যা পেশাদারিত্ব ও খাঁটি ফুটবলপ্রেমী সংগঠক হিসেবে ফুটবল সংশ্লিস্টদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে বাফুফে সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন তাবিথ আউয়াল। ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষমতার পটপরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় তাবিথ ফেডারেশনের সভাপতি পদে অনেকের সমর্থন পেতে পারেন। তবে, প্রশ্ন আছে তাবিথের সাংগঠনিক দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়েও। গেল নির্বাচনে তিনি ফেডারেশনের সহ সভাপতির পদে নির্বাচন করে হেরে যান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বয়সের ধার না থাকা, ক্যারিশমেটিক নেতৃত্বের অনুপস্থিতি ও দেশের ফুটবল নিয়ে বিস্তর চিন্তা না থাকার দরুন তিনি আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে ‘মন্দের ভালো’ বলে বিবেচিত হতে পারেন।
সার্বিক বিবেচনায় নতুন বাংলাদেশের সূচনায় ফুটবল ফেডারেশনের কাছে ফুটবল প্রেমীদের যে দাবি তার বাস্তবায়নে সংগঠকরা কোন দলীয় প্রার্থীর চেয়ে সৎ ও দূরদর্শী কাউকেই কামনা করছে কাজী সালাহউদ্দিন পরবর্তী যুগে। সমালোচনায় জর্জরিত তরফদার রুহুল আমিনের চেয়ে তাবিথ আওয়াল দুর্বল প্রার্থী হলেও রেসে থাকবেন বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। তার লড়াই হবে আরেক শক্ত প্রার্থী বসুন্ধকরা কিংস এর ইমরুল হাসানের সাথে, এমন ধারণাই করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে উত্তাপ। আগামী ২৬ অক্টোবর নির্বাচন হবে।
কাজী সালাহউদ্দিন পরবর্তী নতুন দিনের ফুটবলের হাল কে ধরবেন তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা। প্রার্থীদের সমালোচনাও চলছে দেদারসে। এখন পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে তিনজনের নাম নিশ্চিত হওয়া গেছে, বসুন্ধরা কিংস এর ইমরুল হাসান, সাইফ পাওয়ার টেক এর তরফদার রুহুল আমিন ও ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি তাবিথ আওয়াল সভাপতি পদে দাঁড়াতে যাচ্ছেন।
এসকল প্রার্থীদের মধ্যে তরফদার রুহুল আমিনকে নিয়েই রয়েছে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা। তিনি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট বলেও ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে খবরে এসেছে।
কেন সমালোচনা তাকে নিয়ে: ২০১৮ সালে সাইফ পাওয়ারটেকের কর্ণধার তরফদার রুহুল আমিন দেশের প্রত্যেকটি জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে দুই লক্ষ টাকা করে দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল,বাফুফে সভাপতি হওয়ার। কিন্তু তার ইচ্ছে পূরণ হয়নি। অনিবার্য বাস্তবতায় তিনি ফুটবল থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। সেই তরফদার যখন পুনরায় বাফুফে সভাপতি হওয়ার লড়াইয়ে অবতীর্ণ, দেশের সব পর্যায়ের ক্রীড়া সংগঠক ও আসন্ন বাফুফে নির্বাচনের কাউন্সিলরদের মাঝে বিস্ময় প্রকাশ করতে দেখা গেছে। তাদের বক্তব্য হলো, তিনি যেভাবে শুরু করেছিলেন, তার ধারাবাহিকতা রাখতে পারেন নি। দীর্ঘদিন পর হঠাৎ উদয় হলেন, কতটুকু আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে।
এদিকে, তরফদার রুহুল আমিনের দেশব্যাপি দুই লক্ষ টাকা বিতরণ নিয়েও আছে সমালোচনা। সে সময় দেশের একটি লিজিং কোম্পানীর এমডি তরফদার রুহুল আমিনকে ঋণখেলাপি উল্লেখ করে বলেছিলেন, ঋণ খেলাপি হয়ে আমাদের কিস্তি পরিশোধ না করে সে কিভাবে দেড় কোটি টাকা উৎকোচ হিসাবে ফুটবলের জন্য ব্যবহার করছে?
সূত্রমতে তরফদার সে সময়ের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাবেক হুইপ শামসুল হক চৌধুরী,সাবেক চাসিক মেয়র আ জ ম নাসির, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক সাংসদ কয়েস চৌধুরী ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের মাধ্যমে প্রায় হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তবে তরফদার রুহুল আমিন সবকিছু স্বাভাবিক করে দেখছেন এই কারণে, তার ব্যবসায়িক উত্থান হয়েছিল বিএনপি নেতা সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী প্রয়াত কর্নেল ( অবঃ) আকবর এর হাত ধরে!
প্রসঙ্গত, গত ১৪ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে যখন কাজী সালাহউদ্দীন আগামী নির্বাচনে আর সভাপতির পদে দাঁড়াবেন না বলে ঘোষণা করেন, ঠিক তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ তারকা একটি হোটেলকে ভেন্যু করে বিএনপি নেতা ও সাবেক গোলরক্ষক গ্রেট আমিনুল হকের প্রকাশ্য উপস্থিতি ও সমর্থনে তরফদার রুহুল আমিন ২৬ অক্টোবর বাফুফে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়ে দেন।
দুই ক্লিন ইমেজ প্রার্থীর লড়াই: ক্লিন ইমেজ প্রার্থী হিসেবে বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ও ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ইমরুল হাসানের প্রতিদ্বন্দী হওয়ার জোর গুঞ্জন রয়েছে। যদিও তিনি এখনও কোন সংবাদ সম্মেলনে আসেননি, তবে তার নামটি আলোচনায় এগিয়ে রাখছেন ফুটবল সংগঠক ও সংশ্লিস্টরা। ফুটবলের স্বার্থ বিবেচনায় তার ওপর ভরসা রাখতে চায় দেশের ফুটবল সংগঠকরা। গেল ২৪ অক্টোবর বসুন্ধরা ফুটবল একাডেমি করার ঘোষণা দিয়েছেন ইমরুল হাসান। তার অন্যতম অর্জনের মধ্যে রয়েছে বসুন্ধরা ফুটবল স্টেডিয়াম , ক্লাব ফুটবলে বসুন্ধরা কিংসের এশিয়ায় সাফল্য অর্জনসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যা পেশাদারিত্ব ও খাঁটি ফুটবলপ্রেমী সংগঠক হিসেবে ফুটবল সংশ্লিস্টদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলন করে নিজেকে বাফুফে সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন তাবিথ আউয়াল। ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষমতার পটপরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় তাবিথ ফেডারেশনের সভাপতি পদে অনেকের সমর্থন পেতে পারেন। তবে, প্রশ্ন আছে তাবিথের সাংগঠনিক দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়েও। গেল নির্বাচনে তিনি ফেডারেশনের সহ সভাপতির পদে নির্বাচন করে হেরে যান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বয়সের ধার না থাকা, ক্যারিশমেটিক নেতৃত্বের অনুপস্থিতি ও দেশের ফুটবল নিয়ে বিস্তর চিন্তা না থাকার দরুন তিনি আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে ‘মন্দের ভালো’ বলে বিবেচিত হতে পারেন।
সার্বিক বিবেচনায় নতুন বাংলাদেশের সূচনায় ফুটবল ফেডারেশনের কাছে ফুটবল প্রেমীদের যে দাবি তার বাস্তবায়নে সংগঠকরা কোন দলীয় প্রার্থীর চেয়ে সৎ ও দূরদর্শী কাউকেই কামনা করছে কাজী সালাহউদ্দিন পরবর্তী যুগে। সমালোচনায় জর্জরিত তরফদার রুহুল আমিনের চেয়ে তাবিথ আওয়াল দুর্বল প্রার্থী হলেও রেসে থাকবেন বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। তার লড়াই হবে আরেক শক্ত প্রার্থী বসুন্ধকরা কিংস এর ইমরুল হাসানের সাথে, এমন ধারণাই করছেন সংশ্লিষ্টরা।