মরুর বুকে রাতে ফুটবল উত্তাপ ছড়াবে এটা জানাই ছিলো। কিন্তু এতোটা উত্তাপ! যাতে রেয়াল মাদ্রিদের সুপার কাপের স্বপ্ন জ্বলেপুড়ে ছারখার হবে, তা কারোর ই জানা ছিলো না।
রেয়াল মাদ্রিদ কে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করে স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতেছে হ্যান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনা। ২০২২-২৩ পর এবারও ট্রফি ধরে রাখলো বার্সা।
ম্যাচের প্রথমার্ধেই হয়েছে মোট ৫ গোল। রেয়ালের জালে ৪ টি, বার্সেলোনা হজম করেছে ১টি। অথচ ম্যাচের প্রথম গোলটি বার্সেলোনার জালে ঢুকিয়ে রেয়াল মাদ্রিদই এগিয়ে গিয়েছিল ১-০ গোলে। তারপরের সময়টুকু শুধুই বার্সেলোনাময়।
ম্যাচের শুরু থেকেই রেয়াল মাদ্রিদকে ঘিরে ধরে বার্সেলোনা। দ্বিতীয় মিনিটেই দারুণ আক্রমণ করেও গোল আদায় করতে পারেনি বার্সা। রেয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার থিবো কোর্তোয়ার কল্যানে।
কিন্তু হঠাৎ করে দৃশ্যপট বদলে যায়। বার্সা মিডফিল্ডার মার্ক কাসোদার কাছ থেকে অসাধারণ ভাবে বল ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত গতিতে পাল্টা আক্রমণে উঠে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। সামনে শিকারের আশায় থাকা এমবাপ্পেকে বল বাড়িয়ে দেন। দ্রুত গতির এমবাপ্পে এক দৌড়ে বার্সেলোনার বক্সে চলে যান। কয়েকজনকে কাটিয়ে তার ডান পায়ের নিচু নিখুঁত শট আটকাতে পারেনি বার্সেলোনা গোল কিপার। ম্যাচের ৫ মিনিটের সময় সবাইকে অবাক করে এক গোলে এগিয়ে যায় রেয়াল মাদ্রিদ।
তারপরের সময় টুকু শুধুই বার্সেলোনার। গোল হজম করে বরং প্রান ফিরে পায় বার্সেলোনা।
ম্যাচের ২২ মিনিটের সময় মাঝমাঠ থেকে লেভানদভস্কির বাড়ানো বল নিখুঁত ভাবে রিসিভ করেন লামিয়ে ইয়ামাল। ঢুকে যান রেয়ালের বিপদ সীমানায়। রেয়ালের ৩ জন ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে ডানপাশের পোস্ট লক্ষ্য করে করেন আড়াআড়ি শট। থিবো কোর্তোয়ার নাগালের বাইরের বল, আশ্রয় নেয় রেয়ালের জালে। লামিয়ে ইয়ামালের এই গোলে ১-১ সমতায় ফিরে বার্সেলোনা।
৩৪ মিনিটের সময় রেয়ালের বক্সের ভিতর বার্সেলোনার মিডফিল্ডার গাভীকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন কামাভিঙ্গা। ভিআরের সহায়তায় রেফারি জানান পেনাল্টি। কামাভিঙ্গা দেখেন হলুদ কার্ড।লেভানদভস্কি পেনাল্টি থেকে গোল করলে ৩৬ মিনিটে ২-১ এগিয়ে যায় বার্সেলোনা।
৩ মিনিট যেতে না যেতেই মাঝমাঠ থেকে বক্সের ভেতর রাফিনিয়াকে লক্ষ্য করে উঁচু করে বল দেন কুন্দে। কয়েকফুট লাফিয়ে উঠে অসাধারণ এক হেডে গোল করেন রাফিনিয়া ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা।
প্রথমার্ধে বেশ কিছু সময় নষ্ট হওয়ায় ১০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেয়া হয়। একেবারে শেষ সময়ে রেয়ালের কর্নার থেকে বল পেয়ে পাল্টা আক্রমণে যান লামিয়ে ইয়ামাল। তিনি বল বাড়ান রাফিনিয়ার কাছে। রাফিনিয়া গোল পোস্টের সামনে গিয়ে একা থাকা অ্যালেক্স বালদেওকে বল দেন। বালদেওর গোলে ৪-১ শেষ হয় প্রথমার্ধ।
বিরতি থেকে ফিরে অলৌকিক কিছু করার দরকার ছিলো রেয়ালের। কিন্তু তারা উল্টো বিপদে পড়ে। মার্ক কাসোদার পাল্টা আক্রমণে বল বাড়িয়ে দেন রাফিনিয়ার কাছে। রাফিনিয়া বল পেয়ে এক দৌড়ে রেয়ালের বক্সের ভিতরে আন্তোনিও রুডিগার ও চুয়োমিনিকে কাটিয়ে বুলেট গতির শট নেন। তা ঠেকানোর সাধ্য ছিলোনা কোর্তোয়ার, ৫-১ গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। রাফিনিয়া করেন ব্যক্তিগত দ্বিতীয় গোল।
ম্যাচের ৫৬ মিনিটে বার্সেলোনার গোল মুখের সামনে বল নিয়ে এগিয়ে যান এমবাপ্পে। তাকে সামনে এগিয়ে আটকাতে গিয়ে ফেলে দেন বার্সেলোনার গোলরক্ষক সেজনি।রেফারি ভেবেছিলেন এমবাপ্পে ড্রাইভ দিয়েছেন তাকে দেয়া হয় উল্টো হলুদ কার্ড। পরে ভিআরের সহায়তায় দেখেন স্পষ্ট ফাউল করেছেন বার্সেলোনা গোলকিপার সেজনি। তাকে দেয়া হয় লাল কার্ড।গাভীকে তুলে নামানো হয় বদলি গোলকিপার ইনানি পেকাকে। বক্সের একদম সামনে থেকে ফ্রি-কিক নেন রদ্রিগো। ইনাকি পেকা বল ঠেকাতে ব্যর্থ হলে বার্সার জালে আশ্রয় নেয় বল। গোল করে ব্যবধান কমিয়ে ৫-২ করেন রদ্রিগো।
এরপর বহু চেষ্টা করেছে রেয়াল। ১০ জনে পরিনত হওয়া বার্সেলোনাকে চেপে ধরার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি তারা। গতকালকের হারে স্প্যানিস সুপার কাপ হারানোর পাশাপাশি টানা দুটি ক্লাসিকোতে হারলো রেয়াল মাদ্রিদ। ১৫ তম স্প্যানিশ সুপার কাপ জয় নিশ্চিত হলো বার্সেলোনার।
হার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রেয়াল কোচ কালো আনচেলতি বলেছেন, ‘আমরা জঘন্য ফুটবল খেলেছি প্রথমার্ধে। মাঝেমধ্যে এমন হয়ে যায়। তবে আজকের বিষয়টি একটু বেশিই জঘন্য। তবে জীবন থেমে থাকার নয়। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ভালো কিছুর জন্য চেষ্টা করাই এখন লক্ষ্য।’
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
মরুর বুকে রাতে ফুটবল উত্তাপ ছড়াবে এটা জানাই ছিলো। কিন্তু এতোটা উত্তাপ! যাতে রেয়াল মাদ্রিদের সুপার কাপের স্বপ্ন জ্বলেপুড়ে ছারখার হবে, তা কারোর ই জানা ছিলো না।
রেয়াল মাদ্রিদ কে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করে স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতেছে হ্যান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনা। ২০২২-২৩ পর এবারও ট্রফি ধরে রাখলো বার্সা।
ম্যাচের প্রথমার্ধেই হয়েছে মোট ৫ গোল। রেয়ালের জালে ৪ টি, বার্সেলোনা হজম করেছে ১টি। অথচ ম্যাচের প্রথম গোলটি বার্সেলোনার জালে ঢুকিয়ে রেয়াল মাদ্রিদই এগিয়ে গিয়েছিল ১-০ গোলে। তারপরের সময়টুকু শুধুই বার্সেলোনাময়।
ম্যাচের শুরু থেকেই রেয়াল মাদ্রিদকে ঘিরে ধরে বার্সেলোনা। দ্বিতীয় মিনিটেই দারুণ আক্রমণ করেও গোল আদায় করতে পারেনি বার্সা। রেয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার থিবো কোর্তোয়ার কল্যানে।
কিন্তু হঠাৎ করে দৃশ্যপট বদলে যায়। বার্সা মিডফিল্ডার মার্ক কাসোদার কাছ থেকে অসাধারণ ভাবে বল ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত গতিতে পাল্টা আক্রমণে উঠে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। সামনে শিকারের আশায় থাকা এমবাপ্পেকে বল বাড়িয়ে দেন। দ্রুত গতির এমবাপ্পে এক দৌড়ে বার্সেলোনার বক্সে চলে যান। কয়েকজনকে কাটিয়ে তার ডান পায়ের নিচু নিখুঁত শট আটকাতে পারেনি বার্সেলোনা গোল কিপার। ম্যাচের ৫ মিনিটের সময় সবাইকে অবাক করে এক গোলে এগিয়ে যায় রেয়াল মাদ্রিদ।
তারপরের সময় টুকু শুধুই বার্সেলোনার। গোল হজম করে বরং প্রান ফিরে পায় বার্সেলোনা।
ম্যাচের ২২ মিনিটের সময় মাঝমাঠ থেকে লেভানদভস্কির বাড়ানো বল নিখুঁত ভাবে রিসিভ করেন লামিয়ে ইয়ামাল। ঢুকে যান রেয়ালের বিপদ সীমানায়। রেয়ালের ৩ জন ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে ডানপাশের পোস্ট লক্ষ্য করে করেন আড়াআড়ি শট। থিবো কোর্তোয়ার নাগালের বাইরের বল, আশ্রয় নেয় রেয়ালের জালে। লামিয়ে ইয়ামালের এই গোলে ১-১ সমতায় ফিরে বার্সেলোনা।
৩৪ মিনিটের সময় রেয়ালের বক্সের ভিতর বার্সেলোনার মিডফিল্ডার গাভীকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন কামাভিঙ্গা। ভিআরের সহায়তায় রেফারি জানান পেনাল্টি। কামাভিঙ্গা দেখেন হলুদ কার্ড।লেভানদভস্কি পেনাল্টি থেকে গোল করলে ৩৬ মিনিটে ২-১ এগিয়ে যায় বার্সেলোনা।
৩ মিনিট যেতে না যেতেই মাঝমাঠ থেকে বক্সের ভেতর রাফিনিয়াকে লক্ষ্য করে উঁচু করে বল দেন কুন্দে। কয়েকফুট লাফিয়ে উঠে অসাধারণ এক হেডে গোল করেন রাফিনিয়া ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা।
প্রথমার্ধে বেশ কিছু সময় নষ্ট হওয়ায় ১০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেয়া হয়। একেবারে শেষ সময়ে রেয়ালের কর্নার থেকে বল পেয়ে পাল্টা আক্রমণে যান লামিয়ে ইয়ামাল। তিনি বল বাড়ান রাফিনিয়ার কাছে। রাফিনিয়া গোল পোস্টের সামনে গিয়ে একা থাকা অ্যালেক্স বালদেওকে বল দেন। বালদেওর গোলে ৪-১ শেষ হয় প্রথমার্ধ।
বিরতি থেকে ফিরে অলৌকিক কিছু করার দরকার ছিলো রেয়ালের। কিন্তু তারা উল্টো বিপদে পড়ে। মার্ক কাসোদার পাল্টা আক্রমণে বল বাড়িয়ে দেন রাফিনিয়ার কাছে। রাফিনিয়া বল পেয়ে এক দৌড়ে রেয়ালের বক্সের ভিতরে আন্তোনিও রুডিগার ও চুয়োমিনিকে কাটিয়ে বুলেট গতির শট নেন। তা ঠেকানোর সাধ্য ছিলোনা কোর্তোয়ার, ৫-১ গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। রাফিনিয়া করেন ব্যক্তিগত দ্বিতীয় গোল।
ম্যাচের ৫৬ মিনিটে বার্সেলোনার গোল মুখের সামনে বল নিয়ে এগিয়ে যান এমবাপ্পে। তাকে সামনে এগিয়ে আটকাতে গিয়ে ফেলে দেন বার্সেলোনার গোলরক্ষক সেজনি।রেফারি ভেবেছিলেন এমবাপ্পে ড্রাইভ দিয়েছেন তাকে দেয়া হয় উল্টো হলুদ কার্ড। পরে ভিআরের সহায়তায় দেখেন স্পষ্ট ফাউল করেছেন বার্সেলোনা গোলকিপার সেজনি। তাকে দেয়া হয় লাল কার্ড।গাভীকে তুলে নামানো হয় বদলি গোলকিপার ইনানি পেকাকে। বক্সের একদম সামনে থেকে ফ্রি-কিক নেন রদ্রিগো। ইনাকি পেকা বল ঠেকাতে ব্যর্থ হলে বার্সার জালে আশ্রয় নেয় বল। গোল করে ব্যবধান কমিয়ে ৫-২ করেন রদ্রিগো।
এরপর বহু চেষ্টা করেছে রেয়াল। ১০ জনে পরিনত হওয়া বার্সেলোনাকে চেপে ধরার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি তারা। গতকালকের হারে স্প্যানিস সুপার কাপ হারানোর পাশাপাশি টানা দুটি ক্লাসিকোতে হারলো রেয়াল মাদ্রিদ। ১৫ তম স্প্যানিশ সুপার কাপ জয় নিশ্চিত হলো বার্সেলোনার।
হার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রেয়াল কোচ কালো আনচেলতি বলেছেন, ‘আমরা জঘন্য ফুটবল খেলেছি প্রথমার্ধে। মাঝেমধ্যে এমন হয়ে যায়। তবে আজকের বিষয়টি একটু বেশিই জঘন্য। তবে জীবন থেমে থাকার নয়। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ভালো কিছুর জন্য চেষ্টা করাই এখন লক্ষ্য।’