বিদ্রোহী নারী ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ খারিজ করে দিয়েছেন বাটলার
মেয়েদের অনুশীলনের ফাইল ছবি, পাশে কোচ বাটলার
৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার বাফুফে ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আরও একবার নিজের কঠোর অবস্থানের কথা সোজা সাপ্টা জানিয়ে দিলেন নারী ফুটবল দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার। তিনি জানান, ‘হয় ওরা (সাবিনাসহ ব্রিদোহীরা) থাকবে, নয়তো আমি। সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। এটা আমি বিশেষ কমিটিকে (তদন্ত কমিটি) জানিয়ে দিয়েছি।’
‘কোচ বাটলার হটাও’ আন্দোলনে তদন্ত কমিটির কাছে আগেই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেন ৯ সিনিয়র ফুটবরার। মঙ্গলবার রাতে তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলেন ব্রিটিশ কোচ বাটলারও। কি কথা হলো তদন্ত কমিটির সঙ্গে? এমন প্রশ্নের উত্তরে কোচের কথা, ‘তারা (তদন্ত কমিটি) জানতে চেয়েছে, আমিও ব্যাখ্যা দিয়েছি। আমি বেশ স্পষ্টভাবে বলেছি যারা বাফুফে ভবনে থেকে ও বাফুফের খাবার খেয়ে বাফুফেতেই ফ্যাক্টবিহীন কথা বলে আমি তাদের কোচিং করাবো না। এ প্রসঙ্গে আমি কয়েকজনের নাম দিয়েছি। সেই কয়েকজন থাকলে আমি কোচিং করাবো না। নির্দিষ্ট কয়েকজন ফুটবলার অনুশীলনে যাচ্ছে না এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে। এটা ননসেন্স, এটা বন্ধ হওয়া দরকার।’ কোচের বিরুদ্ধে ১৮ জন সিনিয়র ফুটবরার বিদ্রোহী করলেও মূলত ৭ জনকেই বড় অপরাধী ভাবছেন পিটার। যদিও তিনি সংখ্যাটা বলেননি। সূত্রে জানা গেছে, এই ৭ জনের বিরুদ্ধেই তার যত অভিযোগ। এরা হলেনÑ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, মাসুরা পারভীন, মারিয়া মান্দা, কৃষ্ণা রানী সরকার, সানজিদা আক্তার, নিলুফা ইয়াসমিন নীলা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র। ফুটবলারদের শৃঙ্খলহীন উল্লেখ করে বাটলারের স্পষ্ট কথা, ‘বাংলাদেশ দুই বারের সাফ চ্যাম্পিয়ন। কয়জন নারী খেলোয়াড় বিদেশে লীগ খেলে। বিদেশি লীগে নেই ডিসিপ্লিন। আমি ইংলিশ ফুটবল সংস্কৃতি সম্পর্কে জানি। যেটা চলছে এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’ সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানী, মারিয়া মান্দা ও মাতসুশিমা সুমাইয়া বিদেশি লীগে খেলেছেন। বাফুফে ফুটবলারদের কোচের চিঠি নিয়ে একটি কমিটি করেছে। সেই কমিটি তদন্ত করছে। আজ সভাপতির কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে কমিটি। তার আগে কোচ গণমাধ্যমে এভাবে বলাও শৃঙ্খলা বহির্ভূত বলে অনেকে মনে করেন। বুধবার বাফুফে ভবনে কথা বলেই অপেক্ষমান গাড়ির দিকে চলে যান কোচ পিটার।
‘আমি বড় হয়েছি, চওড়া কাঁধ আছে (দায়িত্ব নেয়ার) আমি যুক্তরাজ্য থেকে এসেছি। আমি তাদের কোচ। তারা এখন যেভাবে পারফর্ম করছে, এভাবে চললে তাদের রাস্তায় নেমে যেতে হবে। তারা কি আসলেই বুঝতে পারছে, এভাবে মিথ্যা বলে চলা যায় কিনা। তারা ভাগ্যবান মেয়ে। কিন্তু টানা দুইবার সাফ জিতে নির্বোধের মতো কথা বলছে!’
শৃঙ্খলার ঘাটতির কারণে বাংলাদেশের মেয়েরা বিদেশের লীগে সেভাবে খেলতে পারছে না বলেও মনে করেন পিটার।
‘ক’জন বাংলাদেশি মেয়ে বিদেশের লীগে খেলে? তারা পারে না, কেননা, তাদের মধ্যে কোনো শৃঙ্খলা নেই। সেটাই কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রতিফলিত হচ্ছে।’
সাবিনাদের জন্য
মনোবিদ
নারী ফুটবল দলের ১৮ সিনিযর ফুটবলার ও ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের মধ্যে অভিযোগের তীর ছোঁড়াছুড়ি চলছেই। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। এতে মানাসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারী দলের সদস্যরা। কেউ কেউ তো মানসিক আঘাতের মধ্যে রয়েছেন। সাফজয়ী দলের অন্যতম খেলোয়াড় জাপানি বংশোদ্ভূত মাতসুশিমা সুমাইয়া কিংবা ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেসব তুলেও ধরেছেন। আগের দিন এমন ঘটনা বাইরে চলে আসার পর রাতেই বাফুফে নারী খেলোয়াড়দের নিয়ে মনোবিদের শরণাপন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার সকাল থেকে একজন মনোবিদ মেয়েদের নিয়ে কাজও শুরু করেন। জানা গেছে, বাফুফে ভবনে এসে সেই মনোবিদ সবার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন। বোঝার চেষ্টা করছেন, কার কী সমস্যা। মানসিকভাবে মেয়েরা যেন ভেঙে না পড়েনÑ সেই চেষ্টা চলছে। বাফুফের একটি সূত্রে জানা গেছে, রাতেই সুমাইয়ার সঙ্গে কথা বলেন বাফুফের কয়েকজন কর্মকর্তা। তার কী সমস্যা সেটা বোঝার চেষ্টা করেন তারা। লিগ্যাল ডিপার্টমেন্টকে বলা হয় সুমাইয়ার বিষয়টি দেখতে। পরে একজন মনোবিদকে আনা হয় ফুটবলারদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে।
বিদ্রোহী নারী ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ খারিজ করে দিয়েছেন বাটলার
মেয়েদের অনুশীলনের ফাইল ছবি, পাশে কোচ বাটলার
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার বাফুফে ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আরও একবার নিজের কঠোর অবস্থানের কথা সোজা সাপ্টা জানিয়ে দিলেন নারী ফুটবল দলের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার। তিনি জানান, ‘হয় ওরা (সাবিনাসহ ব্রিদোহীরা) থাকবে, নয়তো আমি। সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। এটা আমি বিশেষ কমিটিকে (তদন্ত কমিটি) জানিয়ে দিয়েছি।’
‘কোচ বাটলার হটাও’ আন্দোলনে তদন্ত কমিটির কাছে আগেই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেন ৯ সিনিয়র ফুটবরার। মঙ্গলবার রাতে তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলেন ব্রিটিশ কোচ বাটলারও। কি কথা হলো তদন্ত কমিটির সঙ্গে? এমন প্রশ্নের উত্তরে কোচের কথা, ‘তারা (তদন্ত কমিটি) জানতে চেয়েছে, আমিও ব্যাখ্যা দিয়েছি। আমি বেশ স্পষ্টভাবে বলেছি যারা বাফুফে ভবনে থেকে ও বাফুফের খাবার খেয়ে বাফুফেতেই ফ্যাক্টবিহীন কথা বলে আমি তাদের কোচিং করাবো না। এ প্রসঙ্গে আমি কয়েকজনের নাম দিয়েছি। সেই কয়েকজন থাকলে আমি কোচিং করাবো না। নির্দিষ্ট কয়েকজন ফুটবলার অনুশীলনে যাচ্ছে না এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে। এটা ননসেন্স, এটা বন্ধ হওয়া দরকার।’ কোচের বিরুদ্ধে ১৮ জন সিনিয়র ফুটবরার বিদ্রোহী করলেও মূলত ৭ জনকেই বড় অপরাধী ভাবছেন পিটার। যদিও তিনি সংখ্যাটা বলেননি। সূত্রে জানা গেছে, এই ৭ জনের বিরুদ্ধেই তার যত অভিযোগ। এরা হলেনÑ অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, মাসুরা পারভীন, মারিয়া মান্দা, কৃষ্ণা রানী সরকার, সানজিদা আক্তার, নিলুফা ইয়াসমিন নীলা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র। ফুটবলারদের শৃঙ্খলহীন উল্লেখ করে বাটলারের স্পষ্ট কথা, ‘বাংলাদেশ দুই বারের সাফ চ্যাম্পিয়ন। কয়জন নারী খেলোয়াড় বিদেশে লীগ খেলে। বিদেশি লীগে নেই ডিসিপ্লিন। আমি ইংলিশ ফুটবল সংস্কৃতি সম্পর্কে জানি। যেটা চলছে এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’ সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানী, মারিয়া মান্দা ও মাতসুশিমা সুমাইয়া বিদেশি লীগে খেলেছেন। বাফুফে ফুটবলারদের কোচের চিঠি নিয়ে একটি কমিটি করেছে। সেই কমিটি তদন্ত করছে। আজ সভাপতির কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে কমিটি। তার আগে কোচ গণমাধ্যমে এভাবে বলাও শৃঙ্খলা বহির্ভূত বলে অনেকে মনে করেন। বুধবার বাফুফে ভবনে কথা বলেই অপেক্ষমান গাড়ির দিকে চলে যান কোচ পিটার।
‘আমি বড় হয়েছি, চওড়া কাঁধ আছে (দায়িত্ব নেয়ার) আমি যুক্তরাজ্য থেকে এসেছি। আমি তাদের কোচ। তারা এখন যেভাবে পারফর্ম করছে, এভাবে চললে তাদের রাস্তায় নেমে যেতে হবে। তারা কি আসলেই বুঝতে পারছে, এভাবে মিথ্যা বলে চলা যায় কিনা। তারা ভাগ্যবান মেয়ে। কিন্তু টানা দুইবার সাফ জিতে নির্বোধের মতো কথা বলছে!’
শৃঙ্খলার ঘাটতির কারণে বাংলাদেশের মেয়েরা বিদেশের লীগে সেভাবে খেলতে পারছে না বলেও মনে করেন পিটার।
‘ক’জন বাংলাদেশি মেয়ে বিদেশের লীগে খেলে? তারা পারে না, কেননা, তাদের মধ্যে কোনো শৃঙ্খলা নেই। সেটাই কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রতিফলিত হচ্ছে।’
সাবিনাদের জন্য
মনোবিদ
নারী ফুটবল দলের ১৮ সিনিযর ফুটবলার ও ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের মধ্যে অভিযোগের তীর ছোঁড়াছুড়ি চলছেই। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। এতে মানাসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারী দলের সদস্যরা। কেউ কেউ তো মানসিক আঘাতের মধ্যে রয়েছেন। সাফজয়ী দলের অন্যতম খেলোয়াড় জাপানি বংশোদ্ভূত মাতসুশিমা সুমাইয়া কিংবা ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেসব তুলেও ধরেছেন। আগের দিন এমন ঘটনা বাইরে চলে আসার পর রাতেই বাফুফে নারী খেলোয়াড়দের নিয়ে মনোবিদের শরণাপন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার সকাল থেকে একজন মনোবিদ মেয়েদের নিয়ে কাজও শুরু করেন। জানা গেছে, বাফুফে ভবনে এসে সেই মনোবিদ সবার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন। বোঝার চেষ্টা করছেন, কার কী সমস্যা। মানসিকভাবে মেয়েরা যেন ভেঙে না পড়েনÑ সেই চেষ্টা চলছে। বাফুফের একটি সূত্রে জানা গেছে, রাতেই সুমাইয়ার সঙ্গে কথা বলেন বাফুফের কয়েকজন কর্মকর্তা। তার কী সমস্যা সেটা বোঝার চেষ্টা করেন তারা। লিগ্যাল ডিপার্টমেন্টকে বলা হয় সুমাইয়ার বিষয়টি দেখতে। পরে একজন মনোবিদকে আনা হয় ফুটবলারদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে।