বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে প্রথম টেস্ট শুরু কাল
সিলেটে অনুশীলনে কোচ সিমন্স
দেশের মাটিতে বরাবরই বাংলাদেশের শক্তির জায়গা স্পিন বোলিং। তবে গত কয়েক বছরে পেস বিভাগেও উন্নতি হয়েছে অনেক। তাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আলাদা করে স্পিনার বা পেসারদের ওপর নির্ভর করতে চান না ফিল সিমন্স। টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির সোপানে পা রাখতে স্পোর্টিং উইকেটে খেলার পক্ষে বাংলাদেশের প্রধান কোচ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী রোববার শুরু হবে টেস্ট সিরিজ। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ম্যাচের উইকেটে দেখা গেছে সতেজ ঘাস। আজ হয়তো অনেকটাই কমিয়ে ফেলা হবে সবুজের উপস্থিতি।
উইকেট তৈরিতে সহায়তা করতে ঢাকা থেকে সিলেট চলে গেছেন বিসিবির প্রধান কিউরেটর গামিনি সিলভা। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন, প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে উইকেটের পাশে দাঁড়িয়ে কিউরেটরদের আলোচনা করতেও দেখা গেছে লম্বা সময়।
অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রথম টেস্টের উইকেট সম্পর্কে ধারণা দেন সিমন্স।
‘আমাদের পরিকল্পনা প্রপার উইকেট প্রস্তুত করার। আমরা টেস্ট দলটাকে যে জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, সেভাবে খেলতে চাই। আমরা একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় খেলি। এজন্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্পিন উইকেট তৈরি করা জরুরি নয়।’
গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাঠে হোয়াইটওয়াশ করা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদরা। দেশের মাঠে বাংলাদেশের সাফল্যের বড় কারিগর সব সময়ই স্পিনাররা।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে পেসাররাও দারুণ উন্নতি করায় এখন আর নির্দিষ্ট কোনো বিভাগের ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই মনে করেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ।
‘প্রোপার উইকেট বানিয়ে টেস্ট ম্যাচ জেতার চেষ্টা করবো। তাই আলাদা করে স্পিন বা পেস উইকেট তৈরির কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা আজকে দেখেছি উইকেট... বেশ শক্ত। ভালো উইকেট মনে হচ্ছে। আগামীকাল (শনিবার) কেমন হয়, আমাদের দেখতে হবে।’
টেস্ট ক্রিকেটে গত বছর মিশ্র অভিজ্ঞতার স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। দেশের বাইরে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালেও, নিজেদের মাঠে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লড়াই করতেই পারেনি তারা। হতশ্রী পারফরম্যান্সে চার ম্যাচই হেরেছে খুব বাজেভাবে।
তাই শক্তি-সামর্থ্য কিংবা সাম্প্রতিক ফর্মসহ সার্বিক বিবেচনায় বেশ পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে খেলতে নামছে বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অবশ্য সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে পরিষ্কার এগিয়ে বাংলাদেশ। মুখোমুখি লড়াইয়ে সর্বশেষ আট ম্যাচে মাত্র একটি হেরেছে তারা। সর্বশেষ তিন টেস্টেই জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে তারা বিশাল ব্যবধানে।
তবু আগেভাগে কোনো হুঙ্কার দিতে চান না বাংলাদেশ কোচ। একটি করে ম্যাচ ধরে এগোতে চান তিনি।
‘হোয়াইটওয়াশ করার ব্যাপারে জানি না। আমি একটি করে পদক্ষেপ নেয়ার পক্ষে। এখানে প্রথম টেস্ট হবে, জিতলে পরের ম্যাচ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করবো, সিরিজ জেতার আলোচনা করব। প্রথম টেস্ট জেতার জন্য প্রথম দিন জিততে হবে। এভাবেই ভাবতে পছন্দ করি। এখনই চট্টগ্রাম নিয়ে ভাবতে পারবো না। আপাতত সিলেট টেস্টে মনোযোগ দিতে হবে।’
২০২০ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশের মাটিতে টেস্ট খেলেছে জিম্বাবুয়ে। মিরপুরের ঐ টেস্ট ইনিংস ও ১০৬ রানের ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচে ২০৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম।
সাফল্যের জন্য নতুন করে লাল বলের ক্রিকেটে মনোযোগ দিয়েছেন সদ্য সাদা বলের ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়া উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মুশফিকুর রহিম।
মুশফিকের প্রশংসা করে সিমন্স বলেন, ‘সে কঠোর পরিশ্রম করছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগে সে ভালো করেছে শুনে ভালো লাগছে। কিন্তু আমরা নতুন করে শুরু করছি।’
জিম্বাবুয়ের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ দলে নেই কোনো বাঁ-হাতি পেসার। যা জিম্বাবুয়ের কিছুটা এগিয়ে রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি স্বীকারও করেছেন সিমন্স। তবে দলে থাকা পেসারদের নিয়ে আশাবাদী সিমন্স।
এছাড়াও দলের উদ্বোধনী জুটিকেও সমর্থন দিচ্ছেন সিমন্স। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তামিম ইকবালের অবসরের পর থেকে এ জায়গায় এখনও দুর্বল হয়ে আছে টাইগাররা।
ম্যাচটি সিলেটের পেসবান্ধব উইকেটেই খেলা হবে বলে ধারণা কোচের। সেক্ষেত্রে জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজারাবানিও হুমকি হতে পারেন স্বাগতিক দলের জন্য।
কোচ ফিল সিমন্স বলেন দীর্ঘ ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার পেসার মুজারাবানি শান্ত-মোমিনুলদের জন্য ভয়ঙ্কর হতে পারে। ‘পেসারদের পক্ষে উইকেট থাকলে বিশ্বের যেকোনো দলের বিপক্ষেই সে হুমকি। তার উচ্চতা অনেক বেশি, এটা তাকে ভিন্নরকম সুবিধা দেয়।’
একইসঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাটারদের এই রোডেশিয়ান পেসারের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা আছে বলেও জানান তিনি, ‘তার বিপক্ষে ছেলেরা (আগেও) খেলেছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও দেখা হয়েছে। ফলে ধারণা আছে তার সম্পর্কে। কীভাবে খেলতে হবে নিশ্চয়ই সেই ধারণা হয়ে যাবে।’
সিমন্স শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ৬২ বছর বয়সে পা রাখেন। জন্মদিনের উপহার হিসেবে জয় উপহার চান তিনি। সিমন্স বলেন, ‘এখন আর জন্মদিনের উপহার চাই না। তবে প্রথম টেস্ট জিতলে এটা ভালো একটা উপহার হয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে প্রথম টেস্ট শুরু কাল
সিলেটে অনুশীলনে কোচ সিমন্স
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
দেশের মাটিতে বরাবরই বাংলাদেশের শক্তির জায়গা স্পিন বোলিং। তবে গত কয়েক বছরে পেস বিভাগেও উন্নতি হয়েছে অনেক। তাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আলাদা করে স্পিনার বা পেসারদের ওপর নির্ভর করতে চান না ফিল সিমন্স। টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির সোপানে পা রাখতে স্পোর্টিং উইকেটে খেলার পক্ষে বাংলাদেশের প্রধান কোচ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী রোববার শুরু হবে টেস্ট সিরিজ। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ম্যাচের উইকেটে দেখা গেছে সতেজ ঘাস। আজ হয়তো অনেকটাই কমিয়ে ফেলা হবে সবুজের উপস্থিতি।
উইকেট তৈরিতে সহায়তা করতে ঢাকা থেকে সিলেট চলে গেছেন বিসিবির প্রধান কিউরেটর গামিনি সিলভা। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন, প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে উইকেটের পাশে দাঁড়িয়ে কিউরেটরদের আলোচনা করতেও দেখা গেছে লম্বা সময়।
অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রথম টেস্টের উইকেট সম্পর্কে ধারণা দেন সিমন্স।
‘আমাদের পরিকল্পনা প্রপার উইকেট প্রস্তুত করার। আমরা টেস্ট দলটাকে যে জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, সেভাবে খেলতে চাই। আমরা একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় খেলি। এজন্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্পিন উইকেট তৈরি করা জরুরি নয়।’
গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাঠে হোয়াইটওয়াশ করা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদরা। দেশের মাঠে বাংলাদেশের সাফল্যের বড় কারিগর সব সময়ই স্পিনাররা।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে পেসাররাও দারুণ উন্নতি করায় এখন আর নির্দিষ্ট কোনো বিভাগের ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই মনে করেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ।
‘প্রোপার উইকেট বানিয়ে টেস্ট ম্যাচ জেতার চেষ্টা করবো। তাই আলাদা করে স্পিন বা পেস উইকেট তৈরির কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা আজকে দেখেছি উইকেট... বেশ শক্ত। ভালো উইকেট মনে হচ্ছে। আগামীকাল (শনিবার) কেমন হয়, আমাদের দেখতে হবে।’
টেস্ট ক্রিকেটে গত বছর মিশ্র অভিজ্ঞতার স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। দেশের বাইরে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালেও, নিজেদের মাঠে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লড়াই করতেই পারেনি তারা। হতশ্রী পারফরম্যান্সে চার ম্যাচই হেরেছে খুব বাজেভাবে।
তাই শক্তি-সামর্থ্য কিংবা সাম্প্রতিক ফর্মসহ সার্বিক বিবেচনায় বেশ পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে খেলতে নামছে বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অবশ্য সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে পরিষ্কার এগিয়ে বাংলাদেশ। মুখোমুখি লড়াইয়ে সর্বশেষ আট ম্যাচে মাত্র একটি হেরেছে তারা। সর্বশেষ তিন টেস্টেই জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে তারা বিশাল ব্যবধানে।
তবু আগেভাগে কোনো হুঙ্কার দিতে চান না বাংলাদেশ কোচ। একটি করে ম্যাচ ধরে এগোতে চান তিনি।
‘হোয়াইটওয়াশ করার ব্যাপারে জানি না। আমি একটি করে পদক্ষেপ নেয়ার পক্ষে। এখানে প্রথম টেস্ট হবে, জিতলে পরের ম্যাচ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করবো, সিরিজ জেতার আলোচনা করব। প্রথম টেস্ট জেতার জন্য প্রথম দিন জিততে হবে। এভাবেই ভাবতে পছন্দ করি। এখনই চট্টগ্রাম নিয়ে ভাবতে পারবো না। আপাতত সিলেট টেস্টে মনোযোগ দিতে হবে।’
২০২০ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশের মাটিতে টেস্ট খেলেছে জিম্বাবুয়ে। মিরপুরের ঐ টেস্ট ইনিংস ও ১০৬ রানের ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচে ২০৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম।
সাফল্যের জন্য নতুন করে লাল বলের ক্রিকেটে মনোযোগ দিয়েছেন সদ্য সাদা বলের ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়া উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মুশফিকুর রহিম।
মুশফিকের প্রশংসা করে সিমন্স বলেন, ‘সে কঠোর পরিশ্রম করছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগে সে ভালো করেছে শুনে ভালো লাগছে। কিন্তু আমরা নতুন করে শুরু করছি।’
জিম্বাবুয়ের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ দলে নেই কোনো বাঁ-হাতি পেসার। যা জিম্বাবুয়ের কিছুটা এগিয়ে রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি স্বীকারও করেছেন সিমন্স। তবে দলে থাকা পেসারদের নিয়ে আশাবাদী সিমন্স।
এছাড়াও দলের উদ্বোধনী জুটিকেও সমর্থন দিচ্ছেন সিমন্স। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তামিম ইকবালের অবসরের পর থেকে এ জায়গায় এখনও দুর্বল হয়ে আছে টাইগাররা।
ম্যাচটি সিলেটের পেসবান্ধব উইকেটেই খেলা হবে বলে ধারণা কোচের। সেক্ষেত্রে জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজারাবানিও হুমকি হতে পারেন স্বাগতিক দলের জন্য।
কোচ ফিল সিমন্স বলেন দীর্ঘ ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার পেসার মুজারাবানি শান্ত-মোমিনুলদের জন্য ভয়ঙ্কর হতে পারে। ‘পেসারদের পক্ষে উইকেট থাকলে বিশ্বের যেকোনো দলের বিপক্ষেই সে হুমকি। তার উচ্চতা অনেক বেশি, এটা তাকে ভিন্নরকম সুবিধা দেয়।’
একইসঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাটারদের এই রোডেশিয়ান পেসারের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা আছে বলেও জানান তিনি, ‘তার বিপক্ষে ছেলেরা (আগেও) খেলেছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও দেখা হয়েছে। ফলে ধারণা আছে তার সম্পর্কে। কীভাবে খেলতে হবে নিশ্চয়ই সেই ধারণা হয়ে যাবে।’
সিমন্স শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ৬২ বছর বয়সে পা রাখেন। জন্মদিনের উপহার হিসেবে জয় উপহার চান তিনি। সিমন্স বলেন, ‘এখন আর জন্মদিনের উপহার চাই না। তবে প্রথম টেস্ট জিতলে এটা ভালো একটা উপহার হয়ে যাবে।’