অ্যানফিল্ডে লিভারপুলের খেলোয়াড়দের বাঁধভাঙা উল্লাস
ইপিএল জিততে লিভারপুলের দরকার ছিল মাত্র এক পয়েন্ট। কিন্তু যে দলটি গোটা মৌসুমে দাপিয়ে খেলেছে, তারা ড্র করে ট্রফি ঘরে তুলবে কেন! পাঁচ গোলে জিতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা ঘরে তুললো লিভারপুল। রোববার টটেনহ্যাম হটস্পারকে হারাল ৫-১ গোলে। রেকর্ড ২০ বার ঘরোয়া লীগ জিতল লিভারপুল। ছুঁয়ে ফেললো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে।
নিজেদের মাঠ অ্যানফিল্ডে এ দিন ১২ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল টটেনহ্যাম। কর্নার থেকে গোল করেন লিভারপুলেরই সাবেক ফুটবলার সোলাঙ্কে। পাঁচ মিনিট পরেই সমতা ফেরান লুইস দিয়াজ। ২৩ মিনিটে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন অ্যালিস্টার। লিভারপুলের তৃতীয় গোল কোডি গাকপোর।
ট্রফি জিতবে আর মোহাম্মদ সালাহ গোল করবেন না তা কি হয়! ৬৩ মিনিটেই সমর্থকদের আশা পূরণ করেন সালাহ। বাঁ পায়ের শটে গোল করার পরেই চলে যান গ্যালারির দিকে। এক সমর্থকের থেকে ফোন নিয়ে নিজস্বী তোলেন গ্যালারির সঙ্গে। পঞ্চম গোল আত্মঘাতী। আর্নল্ডের ক্রস ছিল সালাহের উদ্দেশে। ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই বল ঢুকিয়ে দেন উডোগি।
৩০ বছরের খরা কাটিয়ে গত ২০১৯-২০ সালে প্রিমিয়ার লীগ জিতেছিল লিভারপুল। করোনার কারণে সেই সময় প্রায় কোনো সমর্থকই মাঠে এসে ট্রফি জয় উপভোগ করতে পারেননি। কিন্তু এবারের ইপিএল জয়ের আনন্দই আলাদা। আগের দিন আর্সেনাল ড্র করার পরেই উৎসব শুরু হয়েছিল। তা পূর্ণতা পেল রোববার।
এদিন সকাল থেকে লিভারপুলের স্টেডিয়ামের চারপাশে তৈরি হয়েছিল উৎসবের পরিবেশ। কাতারে কাতারে সমর্থক হাজির হয়েছিলেন। আগে থেকেই এলাকার বিভিন্ন দেয়ালে ‘২০’ লেখা গ্রাফিতি আঁকা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
ম্যাচ শুরুর দু’ঘণ্টা আগে থেকে অ্যানফিল্ড চত্বর অবরুদ্ধ হয়ে যায়। লিভারপুলের কোচ আর্নে স্লটকে স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়েছিলেন হাজার হাজার সমর্থক। আতসবাজি জ্বালানো শুরু হয়ে গিয়েছিল। সমর্থকেরা প্রতীকী ট্রফি নিয়ে উৎসব করতে শুরু করেছিলেন। আতসবাজির জেরে আকাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়।
১৯৮৯-৯০ সালে ইপিএল জেতার পর থেকে টানা ৩০ বছর এই ট্রফি জেতেনি লিভারপুল। ফলে এমন অনেক সমর্থক রয়েছেন, যারা প্রিয় ক্লাবকে ঘরোয়া লীগ জিততেই দেখেননি। সেই তরুণ প্রজন্মের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ছিল সবচেয়ে বেশি।
লিভারপুলের প্রতিটি পানশালা এবং পাবে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আগে থেকেই সেগুলি তৈরি ছিল। প্রতিটি পাবেই ছিল উৎসবের পরিবেশ। বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। লিভারপুলের খেলা দেখতে উত্তর আয়ারল্যান্ড থেকে অনেক সমর্থক হাজির হয়েছিলেন। বোট, বিমান, গাড়ি, ট্রেনেও লভারপুলে এ দিন সব ধরনের যানবাহনেই দেখা গিয়েছে সমর্থকদের ভিড়।
লিভারপুলের বাস স্টেডিয়ামে ঢোকার মুখে লাল ধোঁয়ায় ঢেকে যায় আকাশ। ফুটবলারেরা বাসের ভিতর থেকেই সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়াতে থাকেন।
অনেকেই লিভারপুলের এই সাফল্যের পিছনে সাবেক কোচ জুরগেন ক্লপের হাত দেখছেন। তার অধীনেই লিভারপুলের মানসিকতা বদলে গিয়েছিল গত ২০১৫ সাল থেকে। এ বার লিভারপুল ৮২ পয়েন্টে লীগ জিতেছে। কিন্তু অতীতে ৯২, এমনকি ৯৭ পয়েন্ট পেয়েও শেষ করতে হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটির পিছনে। ক্লপ যে ভিত গড়ে দিয়েছিলেন, তার ওপর দাঁড়িয়েই সাফল্য পেয়েছেন স্লট।
যে পাঁচটি ম্যাচের ফল
লিভারপুলের লীগ শিরোপা
কাছে এনেছে
আর্নে স্লটের অধীনে প্রথম মৌসুমেই লিভারপুল রেকর্ড স্পর্শকারী ২০তম প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেছে। রোববার এ্যানফিল্ডে টটেনহ্যামকে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করে চার ম্যাচ হাতে রেখে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনালের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট এগিয়ে লিভারপুলের শিরোপা জয় নিশ্চিত হয়।
এবারের লীগে যে পাঁচটি ম্যাচের ফলাফল লিভারপুলের ভাগ্য গড়ে দেয় :
১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ :
ম্যান ইউ ০ লিভারপুল ৩
২০ অক্টোবর ২০২৪ :
লিভারপুল ২ চেলসি ১
২৭ অক্টোবর ২০২৪ :
আর্সেনাল ২ লিভারপুল ২
১৮ জানুয়ারি ২০২৫ :
ব্রেন্টফোর্ড ০ লিভারপুল ২
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ :
ম্যান সিটি ০ লিভারপুল ২
সিটির বিপক্ষে ম্যাচের আগেই প্রায় এক দশক পর ঘরের মাঠে লীগে প্রথমবারের মতো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সিটিকে পরাজিত করে অনেকটাই ফুরফুরে মেজাজে ছিল লিভারপুল। যে কারণে ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে পারফরমেন্স নিয়ে শঙ্কা তেমন একটা ছিলনা। এই ম্যাচে হারের পর থেকে ম্যানচেস্টার সিটি শিরোপা জয়ের লড়াই থেকে দূরে সরতে থাকে। এই জয়ে পেপ গার্দিওলার দলের থেকে লিভারপুলের পয়েন্টের ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ২০।
অ্যানফিল্ডে লিভারপুলের খেলোয়াড়দের বাঁধভাঙা উল্লাস
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
ইপিএল জিততে লিভারপুলের দরকার ছিল মাত্র এক পয়েন্ট। কিন্তু যে দলটি গোটা মৌসুমে দাপিয়ে খেলেছে, তারা ড্র করে ট্রফি ঘরে তুলবে কেন! পাঁচ গোলে জিতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা ঘরে তুললো লিভারপুল। রোববার টটেনহ্যাম হটস্পারকে হারাল ৫-১ গোলে। রেকর্ড ২০ বার ঘরোয়া লীগ জিতল লিভারপুল। ছুঁয়ে ফেললো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে।
নিজেদের মাঠ অ্যানফিল্ডে এ দিন ১২ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল টটেনহ্যাম। কর্নার থেকে গোল করেন লিভারপুলেরই সাবেক ফুটবলার সোলাঙ্কে। পাঁচ মিনিট পরেই সমতা ফেরান লুইস দিয়াজ। ২৩ মিনিটে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন অ্যালিস্টার। লিভারপুলের তৃতীয় গোল কোডি গাকপোর।
ট্রফি জিতবে আর মোহাম্মদ সালাহ গোল করবেন না তা কি হয়! ৬৩ মিনিটেই সমর্থকদের আশা পূরণ করেন সালাহ। বাঁ পায়ের শটে গোল করার পরেই চলে যান গ্যালারির দিকে। এক সমর্থকের থেকে ফোন নিয়ে নিজস্বী তোলেন গ্যালারির সঙ্গে। পঞ্চম গোল আত্মঘাতী। আর্নল্ডের ক্রস ছিল সালাহের উদ্দেশে। ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই বল ঢুকিয়ে দেন উডোগি।
৩০ বছরের খরা কাটিয়ে গত ২০১৯-২০ সালে প্রিমিয়ার লীগ জিতেছিল লিভারপুল। করোনার কারণে সেই সময় প্রায় কোনো সমর্থকই মাঠে এসে ট্রফি জয় উপভোগ করতে পারেননি। কিন্তু এবারের ইপিএল জয়ের আনন্দই আলাদা। আগের দিন আর্সেনাল ড্র করার পরেই উৎসব শুরু হয়েছিল। তা পূর্ণতা পেল রোববার।
এদিন সকাল থেকে লিভারপুলের স্টেডিয়ামের চারপাশে তৈরি হয়েছিল উৎসবের পরিবেশ। কাতারে কাতারে সমর্থক হাজির হয়েছিলেন। আগে থেকেই এলাকার বিভিন্ন দেয়ালে ‘২০’ লেখা গ্রাফিতি আঁকা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
ম্যাচ শুরুর দু’ঘণ্টা আগে থেকে অ্যানফিল্ড চত্বর অবরুদ্ধ হয়ে যায়। লিভারপুলের কোচ আর্নে স্লটকে স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়েছিলেন হাজার হাজার সমর্থক। আতসবাজি জ্বালানো শুরু হয়ে গিয়েছিল। সমর্থকেরা প্রতীকী ট্রফি নিয়ে উৎসব করতে শুরু করেছিলেন। আতসবাজির জেরে আকাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়।
১৯৮৯-৯০ সালে ইপিএল জেতার পর থেকে টানা ৩০ বছর এই ট্রফি জেতেনি লিভারপুল। ফলে এমন অনেক সমর্থক রয়েছেন, যারা প্রিয় ক্লাবকে ঘরোয়া লীগ জিততেই দেখেননি। সেই তরুণ প্রজন্মের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ছিল সবচেয়ে বেশি।
লিভারপুলের প্রতিটি পানশালা এবং পাবে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আগে থেকেই সেগুলি তৈরি ছিল। প্রতিটি পাবেই ছিল উৎসবের পরিবেশ। বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। লিভারপুলের খেলা দেখতে উত্তর আয়ারল্যান্ড থেকে অনেক সমর্থক হাজির হয়েছিলেন। বোট, বিমান, গাড়ি, ট্রেনেও লভারপুলে এ দিন সব ধরনের যানবাহনেই দেখা গিয়েছে সমর্থকদের ভিড়।
লিভারপুলের বাস স্টেডিয়ামে ঢোকার মুখে লাল ধোঁয়ায় ঢেকে যায় আকাশ। ফুটবলারেরা বাসের ভিতর থেকেই সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়াতে থাকেন।
অনেকেই লিভারপুলের এই সাফল্যের পিছনে সাবেক কোচ জুরগেন ক্লপের হাত দেখছেন। তার অধীনেই লিভারপুলের মানসিকতা বদলে গিয়েছিল গত ২০১৫ সাল থেকে। এ বার লিভারপুল ৮২ পয়েন্টে লীগ জিতেছে। কিন্তু অতীতে ৯২, এমনকি ৯৭ পয়েন্ট পেয়েও শেষ করতে হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটির পিছনে। ক্লপ যে ভিত গড়ে দিয়েছিলেন, তার ওপর দাঁড়িয়েই সাফল্য পেয়েছেন স্লট।
যে পাঁচটি ম্যাচের ফল
লিভারপুলের লীগ শিরোপা
কাছে এনেছে
আর্নে স্লটের অধীনে প্রথম মৌসুমেই লিভারপুল রেকর্ড স্পর্শকারী ২০তম প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেছে। রোববার এ্যানফিল্ডে টটেনহ্যামকে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করে চার ম্যাচ হাতে রেখে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনালের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট এগিয়ে লিভারপুলের শিরোপা জয় নিশ্চিত হয়।
এবারের লীগে যে পাঁচটি ম্যাচের ফলাফল লিভারপুলের ভাগ্য গড়ে দেয় :
১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ :
ম্যান ইউ ০ লিভারপুল ৩
২০ অক্টোবর ২০২৪ :
লিভারপুল ২ চেলসি ১
২৭ অক্টোবর ২০২৪ :
আর্সেনাল ২ লিভারপুল ২
১৮ জানুয়ারি ২০২৫ :
ব্রেন্টফোর্ড ০ লিভারপুল ২
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ :
ম্যান সিটি ০ লিভারপুল ২
সিটির বিপক্ষে ম্যাচের আগেই প্রায় এক দশক পর ঘরের মাঠে লীগে প্রথমবারের মতো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সিটিকে পরাজিত করে অনেকটাই ফুরফুরে মেজাজে ছিল লিভারপুল। যে কারণে ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে পারফরমেন্স নিয়ে শঙ্কা তেমন একটা ছিলনা। এই ম্যাচে হারের পর থেকে ম্যানচেস্টার সিটি শিরোপা জয়ের লড়াই থেকে দূরে সরতে থাকে। এই জয়ে পেপ গার্দিওলার দলের থেকে লিভারপুলের পয়েন্টের ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ২০।