কলম্বোয় দ্বিতীয় টেস্ট বুধবার শুরু
কলম্বোর নেটে নাহিদ রানা
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলতে নামছে সফরকারী বাংলাদেশ। বুধবার কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে ম্যাচটি শুরু হবে সকাল সাড়ে ১০টায়।
গল টেস্টে স্বাগতিকদের বিপক্ষে বেশিরভাগ সময় আধিপত্য বিস্তার করে খেললেও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। অমিমাংসিতভাবে শেষ হয় টেস্টটি। দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করে রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বিশ্বের ১৫তম ব্যাটার হিসেবে টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি। ব্যাট হাতে রানের দেখা পেয়েছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। দুই ইনিংসে যথাক্রমে- ১৬৩ ও ৪৯ রান করেন তিনি। ১৩ ইনিংস পর হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিক। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানের ইনিংস খেলে অফ-ফর্ম কাটিয়েছেন লিটন দাস।
সাধারণত দলের বোলাররা ম্যাচ জয়ের সুযোগ তৈরি করে দিলেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ম্যাচ হারতে হয় বাংলাদেশকে। তবে গল টেস্টে ব্যর্থতার খোলস থেকে বেরিয়েছে টাইগার ব্যাটাররা।
প্রথম টেস্টে জয়ের সুযোগ থাকলেও, পরিকল্পনার অভাবে সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। কারন আগেভাগে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেনি টাইগাররা। তাই শান্ত ও মুশফিক ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করলেও অনেকেই তাদের ব্যক্তিগত মাইলফলকের সমালোচনা করেছেন।
এ নিয়ে অধিনায়ক শান্ত জানান, হার এড়ানোই প্রধান লক্ষ্য থাকে বাংলাদেশের। ম্যাচের পঞ্চম দিন হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় দলের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। শান্ত বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি, আমাদের ড্রেসিংরুমে কেউ ব্যক্তিগত মাইলফলকের জন্য খেলবে না।
বৃষ্টির কারণে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সেটি কাজে লাগাতে পারিনি। আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী উইকেটে ফাটল ধরেনি। এজন্য আমরা আগে-আগে ইনিংসে ঘোষণা করিনি।’ শান্ত বিশ্বাস করেন বাংলাদেশ যদি নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলে তবে পরিসংখ্যানে পরিবর্তন আনা সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি শ্রীলঙ্কা আমাদের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ এবং তাদের বিপক্ষে আমাদের রেকর্ড ভালো নয়। তবে আমরা যদি তিনটি বিভাগেই আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারি, তাহলে বিশ্বের যেকোন দলকে হারাতে পারবো।’
মিরাজ ফিরে আসায় একাদশে একটি পরিবর্তন হবে। বাদ পড়তে পারেন প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ওপেনার এনামুল হক বিজয়। দুই ইনিংসে যথাক্রমে- ০ ও ৪ রান করেছিলেন তিনি।
গল থেকে একেবারেই ভিন্ন দ্বিতীয় টেস্টের উইকেট। সিংহলিজ ক্লাব ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত বেশিরভাগ ম্যাচই নিষ্পত্তি হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, এসএসসিতে অনুষ্ঠিত ৪৫টি টেস্টের মধ্যে ৩১টির ফলাফল হয়েছে। এ মাঠে সর্বশেষ ২০১৪ সালে ড্র হয়েছে। সেটিও আবার বৃষ্টির কারণে। ২০১০ সাল থেকে এই ভেন্যুতে কোন টেস্ট ড্র হয়নি। কলম্বোর এই মাঠে তিন টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। সবগুলোই বড় ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। সর্বশেষ ১৮ বছর আগে এই মাঠে খেলেছিল টাইগাররা। তবে এই মাঠে বাংলাদেশের সুখস্মৃতি আছে। ২০০১ সালে এ মাঠে টেস্ট অভিষেকেই সেঞ্চুরি করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। যা এখনও অ্যাশের দখলেই আছে।
এবারে প্রথম টেস্ট জ্বরের কারণে খেলতে পারেননি অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় টেস্টের দলে ফিরছেন তিনি। তার প্রত্যাবর্তন আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বাংলাদেশের। এই টেস্টের উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা পাবে স্পিনাররা।
এই উইকেটে স্পিনাররা ৫১.৯২ শতাংশ এবং পেসাররা ৪৮.০৮ শতাংশ উইকেট শিকার করেছে। এই ভেন্যুতে ১৬৬ উইকেট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি স্পিনার মুত্তিয়া মুরলিধরন। প্রথম টেস্টে লঙ্কান স্পিনারদের সহজেই খেলেছিল বাংলাদেশ। যা টাইগার ব্যাটারদের বাড়তি সাহস দিবে। কিন্তু গেল বছর এই ভেন্যুতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়ার ৮ উইকেট শিকারের ম্যাচ ১০ উইকেটে বড় ব্যবধানে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা।
এমনকি সম্প্রতি এই ভেন্যুতে সফরকারী স্পিনারদের খেলতেও হিমশিম খেতে হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। ২০২২ সালে পাকিস্তানের দুই স্পিনার আবরার আহমেদ ও নোমান আলির বোলিং তোপে হার মেনেছিল লঙ্কানরা। এমন পরিসংখ্যানেও বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করবে।
এছাড়াও কলম্বোর শহর বাংলাদেশের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। কারণ এই শহরেই নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের শততম ম্যাচ খেলেছিল টাইগাররা। ২০১৭ সালে ঐ টেস্ট ৪ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। যা এখনও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে একমাত্র জয় টাইগারদের।
তবে ঐ টেস্টের ভেন্যু ছিল কলম্বোর পি সারা ওভাল। এখন পর্যন্ত ২৭ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়ে মাত্র ১টিতে জিতেছে, ২০টি হেরেছে ও ৬টি ড্র করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, এনামুল হক বিজয়, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলী অনিক, মেহেদি হাসান মিরাজ (সহ-অধিনায়ক), তাইজুল ইসলাম, নাইম হাসান, হাসান মুরাদ, এবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, সৈয়দ খালেদ আহমেদ।
কলম্বোয় দ্বিতীয় টেস্ট বুধবার শুরু
কলম্বোর নেটে নাহিদ রানা
মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলতে নামছে সফরকারী বাংলাদেশ। বুধবার কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে ম্যাচটি শুরু হবে সকাল সাড়ে ১০টায়।
গল টেস্টে স্বাগতিকদের বিপক্ষে বেশিরভাগ সময় আধিপত্য বিস্তার করে খেললেও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। অমিমাংসিতভাবে শেষ হয় টেস্টটি। দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করে রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। বিশ্বের ১৫তম ব্যাটার হিসেবে টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি। ব্যাট হাতে রানের দেখা পেয়েছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। দুই ইনিংসে যথাক্রমে- ১৬৩ ও ৪৯ রান করেন তিনি। ১৩ ইনিংস পর হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিক। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানের ইনিংস খেলে অফ-ফর্ম কাটিয়েছেন লিটন দাস।
সাধারণত দলের বোলাররা ম্যাচ জয়ের সুযোগ তৈরি করে দিলেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ম্যাচ হারতে হয় বাংলাদেশকে। তবে গল টেস্টে ব্যর্থতার খোলস থেকে বেরিয়েছে টাইগার ব্যাটাররা।
প্রথম টেস্টে জয়ের সুযোগ থাকলেও, পরিকল্পনার অভাবে সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। কারন আগেভাগে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেনি টাইগাররা। তাই শান্ত ও মুশফিক ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করলেও অনেকেই তাদের ব্যক্তিগত মাইলফলকের সমালোচনা করেছেন।
এ নিয়ে অধিনায়ক শান্ত জানান, হার এড়ানোই প্রধান লক্ষ্য থাকে বাংলাদেশের। ম্যাচের পঞ্চম দিন হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় দলের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। শান্ত বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি, আমাদের ড্রেসিংরুমে কেউ ব্যক্তিগত মাইলফলকের জন্য খেলবে না।
বৃষ্টির কারণে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সেটি কাজে লাগাতে পারিনি। আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী উইকেটে ফাটল ধরেনি। এজন্য আমরা আগে-আগে ইনিংসে ঘোষণা করিনি।’ শান্ত বিশ্বাস করেন বাংলাদেশ যদি নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলে তবে পরিসংখ্যানে পরিবর্তন আনা সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি শ্রীলঙ্কা আমাদের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ এবং তাদের বিপক্ষে আমাদের রেকর্ড ভালো নয়। তবে আমরা যদি তিনটি বিভাগেই আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারি, তাহলে বিশ্বের যেকোন দলকে হারাতে পারবো।’
মিরাজ ফিরে আসায় একাদশে একটি পরিবর্তন হবে। বাদ পড়তে পারেন প্রথম টেস্টে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ওপেনার এনামুল হক বিজয়। দুই ইনিংসে যথাক্রমে- ০ ও ৪ রান করেছিলেন তিনি।
গল থেকে একেবারেই ভিন্ন দ্বিতীয় টেস্টের উইকেট। সিংহলিজ ক্লাব ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত বেশিরভাগ ম্যাচই নিষ্পত্তি হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, এসএসসিতে অনুষ্ঠিত ৪৫টি টেস্টের মধ্যে ৩১টির ফলাফল হয়েছে। এ মাঠে সর্বশেষ ২০১৪ সালে ড্র হয়েছে। সেটিও আবার বৃষ্টির কারণে। ২০১০ সাল থেকে এই ভেন্যুতে কোন টেস্ট ড্র হয়নি। কলম্বোর এই মাঠে তিন টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। সবগুলোই বড় ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। সর্বশেষ ১৮ বছর আগে এই মাঠে খেলেছিল টাইগাররা। তবে এই মাঠে বাংলাদেশের সুখস্মৃতি আছে। ২০০১ সালে এ মাঠে টেস্ট অভিষেকেই সেঞ্চুরি করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। যা এখনও অ্যাশের দখলেই আছে।
এবারে প্রথম টেস্ট জ্বরের কারণে খেলতে পারেননি অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় টেস্টের দলে ফিরছেন তিনি। তার প্রত্যাবর্তন আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বাংলাদেশের। এই টেস্টের উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা পাবে স্পিনাররা।
এই উইকেটে স্পিনাররা ৫১.৯২ শতাংশ এবং পেসাররা ৪৮.০৮ শতাংশ উইকেট শিকার করেছে। এই ভেন্যুতে ১৬৬ উইকেট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি স্পিনার মুত্তিয়া মুরলিধরন। প্রথম টেস্টে লঙ্কান স্পিনারদের সহজেই খেলেছিল বাংলাদেশ। যা টাইগার ব্যাটারদের বাড়তি সাহস দিবে। কিন্তু গেল বছর এই ভেন্যুতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়ার ৮ উইকেট শিকারের ম্যাচ ১০ উইকেটে বড় ব্যবধানে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা।
এমনকি সম্প্রতি এই ভেন্যুতে সফরকারী স্পিনারদের খেলতেও হিমশিম খেতে হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। ২০২২ সালে পাকিস্তানের দুই স্পিনার আবরার আহমেদ ও নোমান আলির বোলিং তোপে হার মেনেছিল লঙ্কানরা। এমন পরিসংখ্যানেও বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করবে।
এছাড়াও কলম্বোর শহর বাংলাদেশের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। কারণ এই শহরেই নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের শততম ম্যাচ খেলেছিল টাইগাররা। ২০১৭ সালে ঐ টেস্ট ৪ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। যা এখনও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে একমাত্র জয় টাইগারদের।
তবে ঐ টেস্টের ভেন্যু ছিল কলম্বোর পি সারা ওভাল। এখন পর্যন্ত ২৭ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়ে মাত্র ১টিতে জিতেছে, ২০টি হেরেছে ও ৬টি ড্র করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, এনামুল হক বিজয়, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলী অনিক, মেহেদি হাসান মিরাজ (সহ-অধিনায়ক), তাইজুল ইসলাম, নাইম হাসান, হাসান মুরাদ, এবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, সৈয়দ খালেদ আহমেদ।