বৃহস্পতিবার বিকেলে বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে অবতরণের পর বাংলাদেশ ফুটবল দলের সদস্যরা
নেপাল থেকে অবশেষে নিরাপদে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ফুটবল দল। বৃহস্পতিবার,(১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫)বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে জামাল ভূঁইয়াদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানটি ঢাকার কুর্মিটোলায় বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীর উত্তম একে খন্দকারে অবতরণ করে।
দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে নেপালে গিয়ে সেখানে সরকারবিরোধী আন্দোলন ও সহিংসতার মধ্যে কাঠমান্ডুতে আটকা পড়ে বাংলাদেশ দল। সেখান থেকে ব্যাপক সহিংসতার খবর আসতে শুরু করলে কোচ, খেলোয়াড় ও স্টাফদের পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়।
এরপর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয় তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার। সেই সঙ্গে ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ও কাঠমান্ডুর বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রচেষ্টায় সফলভাবে দলের সবাই নিরাপদে দেশে ফিরেন। ম্যাচের সংবাদ সংগ্রহের জন্য নেপালে যাওয়া সাংবাদিকরাও সেখানে আটকা পড়েছিলেন, তাদেরও একই ফ্লাইটে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। একই ফ্লাইটে তারাও দেশে ফিরেছেন। বাংলাদেশ ফুটবল দল গত ৩ সেপ্টেম্বর নেপালে গিয়েছিল। ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়। দ্বিতীয় ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল ৯ সেপ্টেম্বর।
কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি আর দুর্নীতির প্রতিবাদে কাঠমান্ডুতে জেন-জি আন্দোলনে সহিংসতা শুরু হলে দ্বিতীয় ম্যাচ বাতিল হয়ে যায়। নেপালের বিভিন্ন অংশে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় বিমানবন্দর। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ফুটবল দল কাঠমান্ডুর হোটেলে আটকা পড়ে।
তাদের ফিরিয়ে আনতে বিমানের একটি ফ্লাইট গত মঙ্গলবার কাঠমান্ডু গেলেও ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অনুকূল পরিস্থিতি না থাকায় নামার অনুমতি পায়নি। পরে সেটি ঢাকায় ফিরে আসে।
দুদিন পর অবশেষে সেই চেষ্টা সফল হয় এবং অবসান হয় তিন দিনের কঠিন সময়ের।
গত মঙ্গলবার পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ২২ জনের মৃত্যুর পর নেপালের প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েকজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। দেশটির পার্লামেন্ট ভবন ও মন্ত্রীদের বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়।
নেপালের বিভিন্ন অংশে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় বিমানবন্দর। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ফুটবল দল কাঠমান্ডুর হোটেলে আটকা পড়ে।
খেলোয়াড়দের ট্রমা কাটাতে
কাজ করবে বাফুফে
কাঠমান্ডু থেকে ফিরে আসা জাতীয় ফুটবল দলকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিমান, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বাফুফে সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
সাংবাদিকদের বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘দলের প্রতিটি সদস্যর জন্য আমাদের চিকিৎসার প্রক্রিয়া রয়েছে। সেখানে অবশ্যই আমরা মানসিক কোচিং, সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট দেবো যাদের প্রয়োজন হয়। যাদের লাগবে না তাদেরও আমরা অ্যাসেসমেন্ট করবো, কারণ অনেক সময় এ রকম পরিস্থিতিতে ফিজিক্যাল শক হয়। আমরা এ বিষয়ে সচেতন রয়েছি। পাশাপাশি বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সের মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত ছিল ফুটবলারদের বিশেষভাবে চিকিৎসাজনিত কিছু প্রয়োজন হলে।’
বাফুফে প্রধান বলেন, ‘ কাঠমান্ডুতে আমাদের টিম হোটেলের পাশে আগুন লেগেছিল। আমরা কিন্তু আগেই আমাদের টিমের জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় লোকেশন ঠিক করে রেখেছিলাম।’
খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ ও কর্মকর্তা মিলিয়ে ৩৭ জন ছিলেন কাঠমান্ডুতে। নেপালে ফুটবল ম্যাচ কাভার করতে যাওয়া ১৭ জন সাংবাদিককেও বাফুফে বিশেষ বিমানের তালিকায় রেখেছে। এ নিয়ে ফেডারেশন সভাপতি বলেন, ‘সবাই মিলে আমরা ফুটবল ও ক্রীড়া পরিবার। শুধু ২৩ জন ফুটবলার নন, মিডিয়াসহ সবাইকে নিয়েই আমরা ফুটবলাঙ্গন। যখন আমরা রেসকিউ মিশনের পরিকল্পনা করেছি তখন কাঠমান্ডুতে থাকা মিডিয়ার ভাই-বোনদের নিয়েই কাজ করেছি।’
সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, পররাষ্ট্র ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বাংলাদেশ দূতাবাস কাঠমান্ডুর সবাই আন্তরিকভাবে সহায়তা করেছে। বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, আর্মি এবং আর্মড ফোর্সডকে যারা সফলভাবে কাঠমান্ডু থেকে সবাইকে দেশে নিয়ে এসেছে।’
আগামী মাসে বাংলাদেশ দলের ব্যস্ততা রয়েছে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে। তৃতীয় রাউন্ডে হংকংয়ের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলবে তারা। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায় ৯ অক্টোবর, পরেরটি ১৪ অক্টোবর হংকংয়ে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে অবতরণের পর বাংলাদেশ ফুটবল দলের সদস্যরা
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নেপাল থেকে অবশেষে নিরাপদে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ফুটবল দল। বৃহস্পতিবার,(১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫)বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে জামাল ভূঁইয়াদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানটি ঢাকার কুর্মিটোলায় বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীর উত্তম একে খন্দকারে অবতরণ করে।
দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে নেপালে গিয়ে সেখানে সরকারবিরোধী আন্দোলন ও সহিংসতার মধ্যে কাঠমান্ডুতে আটকা পড়ে বাংলাদেশ দল। সেখান থেকে ব্যাপক সহিংসতার খবর আসতে শুরু করলে কোচ, খেলোয়াড় ও স্টাফদের পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়।
এরপর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয় তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার। সেই সঙ্গে ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ও কাঠমান্ডুর বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রচেষ্টায় সফলভাবে দলের সবাই নিরাপদে দেশে ফিরেন। ম্যাচের সংবাদ সংগ্রহের জন্য নেপালে যাওয়া সাংবাদিকরাও সেখানে আটকা পড়েছিলেন, তাদেরও একই ফ্লাইটে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। একই ফ্লাইটে তারাও দেশে ফিরেছেন। বাংলাদেশ ফুটবল দল গত ৩ সেপ্টেম্বর নেপালে গিয়েছিল। ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়। দ্বিতীয় ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল ৯ সেপ্টেম্বর।
কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি আর দুর্নীতির প্রতিবাদে কাঠমান্ডুতে জেন-জি আন্দোলনে সহিংসতা শুরু হলে দ্বিতীয় ম্যাচ বাতিল হয়ে যায়। নেপালের বিভিন্ন অংশে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় বিমানবন্দর। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ফুটবল দল কাঠমান্ডুর হোটেলে আটকা পড়ে।
তাদের ফিরিয়ে আনতে বিমানের একটি ফ্লাইট গত মঙ্গলবার কাঠমান্ডু গেলেও ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অনুকূল পরিস্থিতি না থাকায় নামার অনুমতি পায়নি। পরে সেটি ঢাকায় ফিরে আসে।
দুদিন পর অবশেষে সেই চেষ্টা সফল হয় এবং অবসান হয় তিন দিনের কঠিন সময়ের।
গত মঙ্গলবার পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ২২ জনের মৃত্যুর পর নেপালের প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েকজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। দেশটির পার্লামেন্ট ভবন ও মন্ত্রীদের বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়।
নেপালের বিভিন্ন অংশে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় বিমানবন্দর। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ফুটবল দল কাঠমান্ডুর হোটেলে আটকা পড়ে।
খেলোয়াড়দের ট্রমা কাটাতে
কাজ করবে বাফুফে
কাঠমান্ডু থেকে ফিরে আসা জাতীয় ফুটবল দলকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিমান, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বাফুফে সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
সাংবাদিকদের বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘দলের প্রতিটি সদস্যর জন্য আমাদের চিকিৎসার প্রক্রিয়া রয়েছে। সেখানে অবশ্যই আমরা মানসিক কোচিং, সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট দেবো যাদের প্রয়োজন হয়। যাদের লাগবে না তাদেরও আমরা অ্যাসেসমেন্ট করবো, কারণ অনেক সময় এ রকম পরিস্থিতিতে ফিজিক্যাল শক হয়। আমরা এ বিষয়ে সচেতন রয়েছি। পাশাপাশি বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সের মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত ছিল ফুটবলারদের বিশেষভাবে চিকিৎসাজনিত কিছু প্রয়োজন হলে।’
বাফুফে প্রধান বলেন, ‘ কাঠমান্ডুতে আমাদের টিম হোটেলের পাশে আগুন লেগেছিল। আমরা কিন্তু আগেই আমাদের টিমের জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় লোকেশন ঠিক করে রেখেছিলাম।’
খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ ও কর্মকর্তা মিলিয়ে ৩৭ জন ছিলেন কাঠমান্ডুতে। নেপালে ফুটবল ম্যাচ কাভার করতে যাওয়া ১৭ জন সাংবাদিককেও বাফুফে বিশেষ বিমানের তালিকায় রেখেছে। এ নিয়ে ফেডারেশন সভাপতি বলেন, ‘সবাই মিলে আমরা ফুটবল ও ক্রীড়া পরিবার। শুধু ২৩ জন ফুটবলার নন, মিডিয়াসহ সবাইকে নিয়েই আমরা ফুটবলাঙ্গন। যখন আমরা রেসকিউ মিশনের পরিকল্পনা করেছি তখন কাঠমান্ডুতে থাকা মিডিয়ার ভাই-বোনদের নিয়েই কাজ করেছি।’
সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, পররাষ্ট্র ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বাংলাদেশ দূতাবাস কাঠমান্ডুর সবাই আন্তরিকভাবে সহায়তা করেছে। বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, আর্মি এবং আর্মড ফোর্সডকে যারা সফলভাবে কাঠমান্ডু থেকে সবাইকে দেশে নিয়ে এসেছে।’
আগামী মাসে বাংলাদেশ দলের ব্যস্ততা রয়েছে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে। তৃতীয় রাউন্ডে হংকংয়ের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলবে তারা। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায় ৯ অক্টোবর, পরেরটি ১৪ অক্টোবর হংকংয়ে।