ছ’বছর পর ফের জাতীয় দাবার সেরা গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ
গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোরশেদ
জাতীয় দাবায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ। গতকাল বুধবার শেষ রাউন্ডে নিয়াজ ফিদে মাস্টার সুব্রত বিশ্বাসকে হারান আর ফাহাদ সাকের উল্লাহ’র বিপক্ষে হেরে যান। আগের রাউন্ড পর্যন্ত নিয়াজ ও আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমানের সমান সাড়ে নয় পয়েন্ট ছিল। শেষ লড়াইয়ে জিতে নিয়াজ সাড়ে দশ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন ও ফাহাদ সাড়ে নয় পয়েন্টে রানারআপ হন।
উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার বাংলাদেশের নিয়াজ মোরশেদ। ৫৯ বছর বয়সেও তিনি এখনও দেশের সেরা দাবাড়–। এবার তারা শিরোপা লড়াই ছিল আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমানের সঙ্গে। যিনি মূলত তার শিষ্য। গুরু-শিষ্যের লড়াইয়ের পর জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর নিয়াজের অনুভূতি, ‘এবার আমি ভালোই খেলেছি। ১৩ গেমের মধ্যে ৮টি জিতেছি এবং ৫টি ড্র। প্রতিদ্বন্দ্বিতাও ভালো হয়েছে।’
২০১৯ সালের পর আবার জাতীয় দাবায় সেরা হলেন নিয়াজ মোরশেদ। এটি তার সপ্তম জাতীয় দাবার শ্রেষ্ঠত্ব। ১৯৭৯-৮২ পর্যন্ত টানা চারবার চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। এরপর তিনি গ্র্যান্ডমাস্টার হলেও উচ্চ শিক্ষার জন্য দাবা থেকে দূরে ছিলেন। বেশ কয়েক বছর পর আবার দাবা অঙ্গনে ফেরেন। ত্রিশ বছর পর ২০১২ সালে জাতীয় দাবার শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার করেন। ২০১৯ সালে সর্বশেষ তিনি জাতীয় দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। তিনি সপ্তমবারের মতো জাতীয় চ্যাম্পিয়নের কৃত্তিত্ব গড়লেন।
এবারের জাতীয় দাবায় একমাত্র গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদই খেলেছেন। রিফাত বিন সাত্তার পেশাগত ব্যস্ততায় অংশগ্রহণ করেননি। অনেক দিন থেকেই ব্যক্তিগত কারণে দাবা থেকে দূরে আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার আব্দুল্লাহ আল রাকিব। এনামুল হোসেন রাজীব স্ত্রীর উচ্চ শিক্ষার কারণে ইংল্যান্ডে রয়েছেন। সবচেয়ে বেশিবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান গত বছর জাতীয় দাবা খেলাবস্থায় পৃথিবী ত্যাগ করেন।
গত বছর জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন ছিলেন আন্তর্জাতিক মাস্টার মনন রেজা নীড়। তিনি এবার তেমন ভালো পারফরম্যান্স করতে পারেননি। আরেক আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমানের এবার প্রথমবারের মতো জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ছিল। আজ শেষ রাউন্ডে হেরে তিনি সেই সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।
দেশের সর্বকানিষ্ঠ ও বয়োজ্যেষ্ঠ জাতীয় চ্যাম্পিয়ন
এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে নিয়াজ মোরশেদ বলেছেন, ১৯৭৯ সালে ১২ বছরর ১১ মাসে আমি সর্বকনিষ্ঠ জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। এখন ৫৯ বছর ৬ মাস বয়সে বয়োজ্যেষ্ঠ জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ডওটা আমার। মনে হয় না বিশ্বের অন্য দাবাড়–র একই সঙ্গে এ রকম দুটি জাতীয় রেকর্ড রয়েছে। ৫৯ বছর বয়সের কেউ জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে এটা মোটেও দেশের দাবার জন্য ভালো না। বিশ্ব দাবার মান ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে আমরা কতটা পিছিয়ে সেটার প্রকৃত উদাহরণ।
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছেন, ১৯৮২ সালে টানা চারবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমি একটানা ১৩ বছর জাতীয় দাবা খেলিনি। কারণ ঐ সময় আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো কেউ ছিল না। ১৯৮০-৯০ পর্যন্ত আমি টানা খেললে বিশবারের কাছাকাছি থাকতে পারতাম। ফেডারেশন থেকে সেই সময় আমাকে খেলতে নিরুৎসাহিত করতো কারণ জাতীয় দাবা খেলা মানে আমার সময় ব্যয়ের চেয়ে বিদেশে টুর্নামেন্ট খেলা কার্যকরী এবং অন্যদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতো। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত আমি সরাসরি জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছি।
ছ’বছর পর ফের জাতীয় দাবার সেরা গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ
গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোরশেদ
বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫
জাতীয় দাবায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ। গতকাল বুধবার শেষ রাউন্ডে নিয়াজ ফিদে মাস্টার সুব্রত বিশ্বাসকে হারান আর ফাহাদ সাকের উল্লাহ’র বিপক্ষে হেরে যান। আগের রাউন্ড পর্যন্ত নিয়াজ ও আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমানের সমান সাড়ে নয় পয়েন্ট ছিল। শেষ লড়াইয়ে জিতে নিয়াজ সাড়ে দশ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন ও ফাহাদ সাড়ে নয় পয়েন্টে রানারআপ হন।
উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার বাংলাদেশের নিয়াজ মোরশেদ। ৫৯ বছর বয়সেও তিনি এখনও দেশের সেরা দাবাড়–। এবার তারা শিরোপা লড়াই ছিল আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমানের সঙ্গে। যিনি মূলত তার শিষ্য। গুরু-শিষ্যের লড়াইয়ের পর জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর নিয়াজের অনুভূতি, ‘এবার আমি ভালোই খেলেছি। ১৩ গেমের মধ্যে ৮টি জিতেছি এবং ৫টি ড্র। প্রতিদ্বন্দ্বিতাও ভালো হয়েছে।’
২০১৯ সালের পর আবার জাতীয় দাবায় সেরা হলেন নিয়াজ মোরশেদ। এটি তার সপ্তম জাতীয় দাবার শ্রেষ্ঠত্ব। ১৯৭৯-৮২ পর্যন্ত টানা চারবার চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। এরপর তিনি গ্র্যান্ডমাস্টার হলেও উচ্চ শিক্ষার জন্য দাবা থেকে দূরে ছিলেন। বেশ কয়েক বছর পর আবার দাবা অঙ্গনে ফেরেন। ত্রিশ বছর পর ২০১২ সালে জাতীয় দাবার শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার করেন। ২০১৯ সালে সর্বশেষ তিনি জাতীয় দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। তিনি সপ্তমবারের মতো জাতীয় চ্যাম্পিয়নের কৃত্তিত্ব গড়লেন।
এবারের জাতীয় দাবায় একমাত্র গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদই খেলেছেন। রিফাত বিন সাত্তার পেশাগত ব্যস্ততায় অংশগ্রহণ করেননি। অনেক দিন থেকেই ব্যক্তিগত কারণে দাবা থেকে দূরে আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার আব্দুল্লাহ আল রাকিব। এনামুল হোসেন রাজীব স্ত্রীর উচ্চ শিক্ষার কারণে ইংল্যান্ডে রয়েছেন। সবচেয়ে বেশিবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান গত বছর জাতীয় দাবা খেলাবস্থায় পৃথিবী ত্যাগ করেন।
গত বছর জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন ছিলেন আন্তর্জাতিক মাস্টার মনন রেজা নীড়। তিনি এবার তেমন ভালো পারফরম্যান্স করতে পারেননি। আরেক আন্তর্জাতিক মাস্টার ফাহাদ রহমানের এবার প্রথমবারের মতো জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ছিল। আজ শেষ রাউন্ডে হেরে তিনি সেই সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।
দেশের সর্বকানিষ্ঠ ও বয়োজ্যেষ্ঠ জাতীয় চ্যাম্পিয়ন
এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে নিয়াজ মোরশেদ বলেছেন, ১৯৭৯ সালে ১২ বছরর ১১ মাসে আমি সর্বকনিষ্ঠ জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। এখন ৫৯ বছর ৬ মাস বয়সে বয়োজ্যেষ্ঠ জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ডওটা আমার। মনে হয় না বিশ্বের অন্য দাবাড়–র একই সঙ্গে এ রকম দুটি জাতীয় রেকর্ড রয়েছে। ৫৯ বছর বয়সের কেউ জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে এটা মোটেও দেশের দাবার জন্য ভালো না। বিশ্ব দাবার মান ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে আমরা কতটা পিছিয়ে সেটার প্রকৃত উদাহরণ।
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছেন, ১৯৮২ সালে টানা চারবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমি একটানা ১৩ বছর জাতীয় দাবা খেলিনি। কারণ ঐ সময় আমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো কেউ ছিল না। ১৯৮০-৯০ পর্যন্ত আমি টানা খেললে বিশবারের কাছাকাছি থাকতে পারতাম। ফেডারেশন থেকে সেই সময় আমাকে খেলতে নিরুৎসাহিত করতো কারণ জাতীয় দাবা খেলা মানে আমার সময় ব্যয়ের চেয়ে বিদেশে টুর্নামেন্ট খেলা কার্যকরী এবং অন্যদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতো। ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত আমি সরাসরি জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছি।