alt

সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষের দেশ কেপ ভার্দে যেভাবে পৌঁছলো ফুটবল বিশ্বকাপে?

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক : শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

বিশ্বকাপ নিশ্চিত হওয়ার পর কেপ ভার্দের খেলোয়াড়রা দর্শকদের উদ্দেশে প্রতীকী টিকেট তুলে ধরেন

কোনো দেশের কি দু’টি স্বাধীনতা দিবস থাকতে পারে? পারে। কেপ ভার্দের পারে। ৫ জুলাই পর্তুগিজদের হাত থেকে স্বাধীন হওয়ার দিনটির পাশাপাশি ১৪ অক্টোবর এই দ্বীপরাষ্ট্রের ‘নতুন স্বাধীনতা দিবস’।

বিশ্বকাপ ফুটবলের যোগ্যতা অর্জন করেছে কেপ ভার্দে । প্রথমবার বিশ্বকাপের টিকেট। কেপ ভার্দে সরকার গণছুটি ঘোষণা করলেও দেশের প্রেসিডেন্ট হোসে মারিয়া নেভেস দিনটিকে বলেছেন ‘নতুন স্বাধীনতা দিবস’।

আফ্রিকা মহাদেশের পশ্চিম দিকে থাকা একটি দ্বীপপুঞ্জ। সব দ্বীপ মিলিয়ে জনসংখ্যা ছ’লাখেরও কম। সেই কেপ ভার্দেই চমকে দিয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করে। গত ১৪ অক্টোবর এসোয়াতিনিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে তারা আফ্রিকার যোগ্যতা অর্জন পর্বে নিজেদের গ্রুপে সবার ওপরে শেষ করেছে। জনসংখ্যার নিরিখে বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ হিসেবে ফুটবল বিশ্বকাপে খেলতে চলেছে কেপ ভার্দে।

মাত্র ১০০ দিন আগে কেপ ভার্দের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ৫ জুলাই স্বাধীনতা দিবস এবং ১৩ জানুয়ারি প্রথম নির্বাচন- এ দু’টি তারিখ এতদিন কেপ ভার্দের মানুষের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক ছিল। তার সঙ্গে যুক্ত হলো ১৪ অক্টোবর।

কেপ ভার্দের বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের নেপথ্যে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। তার মধ্যে যেমন দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা ফুটবলারদের জাতীয় দলে নেয়ার কাজ রয়েছে, তেমনই রয়েছে চীন এবং ফিফার বিনিয়োগও।

কেপ ভার্দের ফুটবল সংস্থা কয়েক বছর আগে থেকেই দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা ফুটবলারদের জাতীয় দলে নেয়ার কাজ শুরু করেছিল। কেপ ভার্দের স্বাধীনতার আগে, ১৯৬০ এবং ১৯৭০-এর দশকে প্রচুর মানুষ দেশ ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন আমেরিকা এবং ইউরোপের নানা দেশে। অর্থাৎ গোটা বিশ্বের কোথাও না কোথাও ছড়িয়ে আছেন কেপ ভার্দের মানুষ।

মূলত ইউরোপ এবং আমেরিকায় থাকা ফুটবলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কেপ ভার্দের হয়ে খেলার প্রস্তাব দেয়া হয়। অনেকেই সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন। এসোয়াতিনির বিপক্ষে যে ২৫ জন দলে ছিলেন, তাদের মধ্যে ১৪ জন থাকেন অন্য দেশে। পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস এবং ফ্রান্সেই থাকেন বেশিরভাগ মানুষ। দীর্ঘ দিন ধরে পর্তুগালের উপনিবেশ ছিল কেপ ভার্দে। ফলে সেখানেই কেপ ভার্দের সবচেয়ে বেশি লোক থাকেন।

নেদারল্যান্ডসের রটারডামে কেপ ভার্দের বংশোদ্ভূত প্রায় ২৩ হাজার মানুষ থাকেন। শুধু রটারডামে থাকা ফুটবলারদের মধ্যেই ছ’জনকে জাতীয় দলে নেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন, দাইলন লিভ্রামেন্টো বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে কেপ ভার্দের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন।

২০০২ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে গিয়েছিল কেপ ভার্দে। তার পর থেকে বিদেশে থাকা কেপ ভার্দে বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু হয়। শুরুটা করেছিলেন লিতো। তিনি অনেক আগে পর্তুগালে গিয়ে সেখানকার প্রথম ডিভিশনে ২০০-র বেশি ম্যাচ খেলেছেন। কেপ ভার্দে ফুটবল সংস্থার সহ-সভাপতি বলেছেন, ‘আমরা লিতোকে অনুরোধ করেছিলাম যাতে পর্তুগালে থাকা কেপ ভার্দে বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের এ দেশের হয়ে খেলার জন্য ও রাজি করাতে পারে।’

আফ্রিকার এই দ্বীপপুঞ্জ দেখেছে অনেক ভয়ঙ্কর খরা। প্রাকৃতিক সম্পদও খুব কম। চাকরির সুযোগ নেই। ফলে দশক দশক ধরে অনেক মানুষ একটু ভালো জীবন পেতে পাড়ি দিয়েছেন অন্য দেশে। তবে পরবর্তী প্রজন্মকে শিখিয়েছেন কেপ ভার্দের প্রতি নিজেদের ভালবাসার কথা। তাই এখন যারা অন্য ইউরোপীয় দেশ থেকে কেপ ভার্দের হয়ে খেলতে আসছেন, তারা চাইছেন বাবা-মা, দাদাদের ঋণ শোধ করতে। লিভ্রামেন্টো বলেছেন, ‘আমাদের বাবা-মা বা তার আগের প্রজন্ম এই দেশের থেকে যা পেয়েছে, তা কিছুটা হলেও শোধ করার চেষ্টা করছি। সবাই উন্নত ভবিষ্যতের লক্ষ্যে অন্য দেশে চলে গিয়েছিলেন। অন্তত আমরা এই দেশের জন্য কিছু করতে চাইছি।’

কেপ ভার্দেতেই যারা জন্মেছেন এবং যারা এ দেশের বংশোদ্ভূত, তাদের মধ্যে সংযোগ রক্ষার কাজটি করেছেন কোচ পেদ্রো লিতাও ব্রিতো, যিনি বুবিস্তা নামে বেশি পরিচিত। তার উদ্যোগে স্থানীয় খেলোয়াড়রা সে দেশের আধা-পেশাদার লীগে খেলেন। মাসে হয়তো কিছু বেতন পান। তবে দেশের হয়ে খেলার সময় তাদের আবেগ এবং দায়বদ্ধতা দেখার মতোই।

আফ্রিকান কাপ অব নেশন্সে চারবার খেলেছে কেপ ভার্দে। গতবার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। তবে যোগ্যতা অর্জন না করায় পরেরবার খেলতে পারবে না। বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করে অবশ্য সেই ব্যথা ভুলে গিয়েছে তারা। চলতি শতকের শুরুর দিকে তাদের র‌্যাংকিং ছিল ১৮২। সেটাই এখন হয়েছে ৭০। আগামী র‌্যাংকিংয়ে তা আরও অনেকটা কমবে। ফিফার অর্থও সাহায্য করেছে কেপ ভার্দেকে। পরিকাঠামো উন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি চীনের অর্থে তৈরি হয়েছে জাতীয় স্টেডিয়াম, যেখানে এসোয়াতিনিকে হারিয়েছে কেপ ভার্দে। সেই স্টেডিয়াম দেখতে একটি বাটির মতো। রয়েছে দৌড়নোর ট্র্যাকও। রাজধানী শহরের ফাঁকা একটি প্রান্তে থাকা এ স্টেডিয়ামের পরিকাঠামোও আকর্ষণীয়।

আপাতত সাড়ে পাঁচ লাখের দেশ অপেক্ষা করছে আর কয়েকটি মাসের। তারপরেই আমেরিকা, মেক্সিকো এবং কানাডায় শুরু হবে বিশ্বকাপ। কারা খেলা দেখতে যাবেন সেই পরিকল্পনাও শুরু হয়ে গিয়েছে।

ছবি

আবাহনীর জয়, ব্রাদার্সের ড্র ফেডারেশন কাপ

ছবি

ঘরের মাঠে সুবিধা নেয়ায় সমস্যা দেখেন না মিরাজ

ছবি

নারী ফুটবল দল হেরেছে থাইল্যান্ডের কাছে

ছবি

জাতীয় ক্রিকেট লীগের চারদিনের টুর্নামেন্ট শুরু শনিবার

ছবি

বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক বিষয়ে সবাই বসে সিদ্ধান্ত: বুলবুল

ছবি

বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব আর নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নিলেন স্যামি

ছবি

উইন্ডিজকে রেকর্ড ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে সিরিজ বাংলাদেশের

ছবি

টি-২০-তে ফিরলেন অধিনায়ক লিটন

ছবি

ব্যাংককের শনিবার আফঈদাদের প্রীতি ম্যাচের প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড

ছবি

পাকিস্তানের মাঠে ১৮ বছর পর দ.আফ্রিকার টেস্ট জয়

ছবি

কিশোর বয়সে ফুটবল ছাড়ার কথা ভেবেছিলেন ভার্দিওল যে

ছবি

এশিয়ান যুব গেমসে এবার ছেলেদের পদক

ছবি

আন্তর্জাতিক ভলিবলে টানা দ্বিতীয় জয় বাংলাদেশের

ছবি

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করলো অস্ট্রেলিয়া

ছবি

ওয়ানডেতে প্রথম টানা দুই শূন্য কোহলির

ছবি

জাতীয় সাঁতারে নৌবাহিনীর শ্রেষ্ঠত্ব, সামিউল ও রোমানা সেরা

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ অঘোষিত ফাইনাল বৃহস্পতিবার

ছবি

আন্তর্জাতিক ভলিবলের পর্দা উঠলো

ছবি

ঢাকায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ

ছবি

জাতীয় সাঁতারে আরও তিন রেকর্ড, রাফির সাত

ছবি

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে জমজমাট লড়াই

ছবি

টেস্টে ৯২ বছরের পুরনো রেকর্ড ভাঙলেন আসিফ

ছবি

কোহলি-রোহিতকে বাদ না দেয়ার পক্ষে পন্টিং

ছবি

পিএসজির সাত, বার্সার ছয়, ৯ ম্যাচে ৪৩!

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

সুপার ওভারে হারলো বাংলাদেশ

ছবি

জাতীয় সাঁতারে রাফির ৫ রেকর্ড

ছবি

কাবাডিতে মেয়েদের ব্রোঞ্জ

ছবি

স্ট্রাইক রেটে রেকর্ড রিশাদের

ছবি

চ্যালেঞ্জ লীগ খেলতে বসুন্ধরা কিংস কুয়েত গেছে

ছবি

ঢাকায় আন্তর্জাতিক ভলিবল বুধবার শুরু

ছবি

পাক ওয়ানডে দলের নতুন অধিনায়ক আফ্রিদি

টিভিতে আজকের খেলা

ছবি

দ্বিতীয় ম্যাচেও উইন্ডিজকে স্পিনে বধ করার পরিকল্পনা বাংলাদেশের

ছবি

ব্যাংকক যাচ্ছে নারী ফুটবল দল

tab

সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষের দেশ কেপ ভার্দে যেভাবে পৌঁছলো ফুটবল বিশ্বকাপে?

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক

বিশ্বকাপ নিশ্চিত হওয়ার পর কেপ ভার্দের খেলোয়াড়রা দর্শকদের উদ্দেশে প্রতীকী টিকেট তুলে ধরেন

শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

কোনো দেশের কি দু’টি স্বাধীনতা দিবস থাকতে পারে? পারে। কেপ ভার্দের পারে। ৫ জুলাই পর্তুগিজদের হাত থেকে স্বাধীন হওয়ার দিনটির পাশাপাশি ১৪ অক্টোবর এই দ্বীপরাষ্ট্রের ‘নতুন স্বাধীনতা দিবস’।

বিশ্বকাপ ফুটবলের যোগ্যতা অর্জন করেছে কেপ ভার্দে । প্রথমবার বিশ্বকাপের টিকেট। কেপ ভার্দে সরকার গণছুটি ঘোষণা করলেও দেশের প্রেসিডেন্ট হোসে মারিয়া নেভেস দিনটিকে বলেছেন ‘নতুন স্বাধীনতা দিবস’।

আফ্রিকা মহাদেশের পশ্চিম দিকে থাকা একটি দ্বীপপুঞ্জ। সব দ্বীপ মিলিয়ে জনসংখ্যা ছ’লাখেরও কম। সেই কেপ ভার্দেই চমকে দিয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করে। গত ১৪ অক্টোবর এসোয়াতিনিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে তারা আফ্রিকার যোগ্যতা অর্জন পর্বে নিজেদের গ্রুপে সবার ওপরে শেষ করেছে। জনসংখ্যার নিরিখে বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ হিসেবে ফুটবল বিশ্বকাপে খেলতে চলেছে কেপ ভার্দে।

মাত্র ১০০ দিন আগে কেপ ভার্দের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ৫ জুলাই স্বাধীনতা দিবস এবং ১৩ জানুয়ারি প্রথম নির্বাচন- এ দু’টি তারিখ এতদিন কেপ ভার্দের মানুষের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক ছিল। তার সঙ্গে যুক্ত হলো ১৪ অক্টোবর।

কেপ ভার্দের বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের নেপথ্যে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। তার মধ্যে যেমন দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা ফুটবলারদের জাতীয় দলে নেয়ার কাজ রয়েছে, তেমনই রয়েছে চীন এবং ফিফার বিনিয়োগও।

কেপ ভার্দের ফুটবল সংস্থা কয়েক বছর আগে থেকেই দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা ফুটবলারদের জাতীয় দলে নেয়ার কাজ শুরু করেছিল। কেপ ভার্দের স্বাধীনতার আগে, ১৯৬০ এবং ১৯৭০-এর দশকে প্রচুর মানুষ দেশ ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন আমেরিকা এবং ইউরোপের নানা দেশে। অর্থাৎ গোটা বিশ্বের কোথাও না কোথাও ছড়িয়ে আছেন কেপ ভার্দের মানুষ।

মূলত ইউরোপ এবং আমেরিকায় থাকা ফুটবলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কেপ ভার্দের হয়ে খেলার প্রস্তাব দেয়া হয়। অনেকেই সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন। এসোয়াতিনির বিপক্ষে যে ২৫ জন দলে ছিলেন, তাদের মধ্যে ১৪ জন থাকেন অন্য দেশে। পর্তুগাল, নেদারল্যান্ডস এবং ফ্রান্সেই থাকেন বেশিরভাগ মানুষ। দীর্ঘ দিন ধরে পর্তুগালের উপনিবেশ ছিল কেপ ভার্দে। ফলে সেখানেই কেপ ভার্দের সবচেয়ে বেশি লোক থাকেন।

নেদারল্যান্ডসের রটারডামে কেপ ভার্দের বংশোদ্ভূত প্রায় ২৩ হাজার মানুষ থাকেন। শুধু রটারডামে থাকা ফুটবলারদের মধ্যেই ছ’জনকে জাতীয় দলে নেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন, দাইলন লিভ্রামেন্টো বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে কেপ ভার্দের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন।

২০০২ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে গিয়েছিল কেপ ভার্দে। তার পর থেকে বিদেশে থাকা কেপ ভার্দে বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু হয়। শুরুটা করেছিলেন লিতো। তিনি অনেক আগে পর্তুগালে গিয়ে সেখানকার প্রথম ডিভিশনে ২০০-র বেশি ম্যাচ খেলেছেন। কেপ ভার্দে ফুটবল সংস্থার সহ-সভাপতি বলেছেন, ‘আমরা লিতোকে অনুরোধ করেছিলাম যাতে পর্তুগালে থাকা কেপ ভার্দে বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের এ দেশের হয়ে খেলার জন্য ও রাজি করাতে পারে।’

আফ্রিকার এই দ্বীপপুঞ্জ দেখেছে অনেক ভয়ঙ্কর খরা। প্রাকৃতিক সম্পদও খুব কম। চাকরির সুযোগ নেই। ফলে দশক দশক ধরে অনেক মানুষ একটু ভালো জীবন পেতে পাড়ি দিয়েছেন অন্য দেশে। তবে পরবর্তী প্রজন্মকে শিখিয়েছেন কেপ ভার্দের প্রতি নিজেদের ভালবাসার কথা। তাই এখন যারা অন্য ইউরোপীয় দেশ থেকে কেপ ভার্দের হয়ে খেলতে আসছেন, তারা চাইছেন বাবা-মা, দাদাদের ঋণ শোধ করতে। লিভ্রামেন্টো বলেছেন, ‘আমাদের বাবা-মা বা তার আগের প্রজন্ম এই দেশের থেকে যা পেয়েছে, তা কিছুটা হলেও শোধ করার চেষ্টা করছি। সবাই উন্নত ভবিষ্যতের লক্ষ্যে অন্য দেশে চলে গিয়েছিলেন। অন্তত আমরা এই দেশের জন্য কিছু করতে চাইছি।’

কেপ ভার্দেতেই যারা জন্মেছেন এবং যারা এ দেশের বংশোদ্ভূত, তাদের মধ্যে সংযোগ রক্ষার কাজটি করেছেন কোচ পেদ্রো লিতাও ব্রিতো, যিনি বুবিস্তা নামে বেশি পরিচিত। তার উদ্যোগে স্থানীয় খেলোয়াড়রা সে দেশের আধা-পেশাদার লীগে খেলেন। মাসে হয়তো কিছু বেতন পান। তবে দেশের হয়ে খেলার সময় তাদের আবেগ এবং দায়বদ্ধতা দেখার মতোই।

আফ্রিকান কাপ অব নেশন্সে চারবার খেলেছে কেপ ভার্দে। গতবার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। তবে যোগ্যতা অর্জন না করায় পরেরবার খেলতে পারবে না। বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করে অবশ্য সেই ব্যথা ভুলে গিয়েছে তারা। চলতি শতকের শুরুর দিকে তাদের র‌্যাংকিং ছিল ১৮২। সেটাই এখন হয়েছে ৭০। আগামী র‌্যাংকিংয়ে তা আরও অনেকটা কমবে। ফিফার অর্থও সাহায্য করেছে কেপ ভার্দেকে। পরিকাঠামো উন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি চীনের অর্থে তৈরি হয়েছে জাতীয় স্টেডিয়াম, যেখানে এসোয়াতিনিকে হারিয়েছে কেপ ভার্দে। সেই স্টেডিয়াম দেখতে একটি বাটির মতো। রয়েছে দৌড়নোর ট্র্যাকও। রাজধানী শহরের ফাঁকা একটি প্রান্তে থাকা এ স্টেডিয়ামের পরিকাঠামোও আকর্ষণীয়।

আপাতত সাড়ে পাঁচ লাখের দেশ অপেক্ষা করছে আর কয়েকটি মাসের। তারপরেই আমেরিকা, মেক্সিকো এবং কানাডায় শুরু হবে বিশ্বকাপ। কারা খেলা দেখতে যাবেন সেই পরিকল্পনাও শুরু হয়ে গিয়েছে।

back to top