নারী কাবাডির বিশ্বকাপ
বাংলাদেশের মেয়েদের জয়োল্লাস
থাইল্যান্ডকে হারিয়ে নারী কাবাডির বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। সেই সুবাদে অন্তত ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত হয়েছে স্বাগতিকদের।
শনিবার,(২২ নভেম্বর ২০২৫) শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের শুরুতে উজ্জ্বল ছিল থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ ছিল কিছুটা মন্থর। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গুছিয়ে উঠলো স্বাগতিকরা। লিড নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করা বাংলাদেশ উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ে থাইল্যান্ডকে ৪০-৩১ পয়েন্ট হারিয়ে নিশ্চিত করে নারী বিশ্বকাপের ইতিহাসে দেশের প্রথম পদক। ঢাকায় চলমান আসরের শুরু থেকেই পদকের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছিলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের মাধ্যমে সেমিফাইনাল এবং পদক নিশ্চিত করার পর লাল-সবুজ শিবিরে ছিল উচ্ছ্বাস। দলের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দেন লাল-সবুজ পতাকা নেড়ে।
২০১২ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত প্রথম নারী কাবাডি বিশ্বকাপে গ্রুপসেরা হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। জাপানের কাছে ১৭-১৫ পয়েন্টে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল শেষ আট থেকে। চার সেমিফাইনালিস্টের পরের অবস্থান অর্থাৎ পঞ্চম স্থান নিয়ে আসর শেষ করতে হয়েছিল বাংলাদেশ দলকে।
সেমিফাইনালে ইরান
আরেক ম্যাচে নেপালর বিপক্ষে দাপুটে জয়ে দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে ইরানের মেয়েরা। শনিবার নেপালকে ৩৯-১১ পয়েন্টে হারায় ইরান। প্রথমার্ধে দলটি এগিয়ে ছিল ২৪-৩ ব্যবধানে। টানা তিন জয়ের পর সর্বশেষ ম্যাচে চাইনিজ তাইপের কাছে হেরেছিল ইরান। নেপালকে হারিয়ে আবার জয়ে ফিরলো তারা।
আজ পুল-এ রানার্সআপ হিসেবে সেমিফাইনালে উঠা বাংলাদেশ লড়বে পুল-বি চ্যাম্পিয়ন চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে। গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট ভারত ও ইরান একই দিনে খেলবে অপর সেমিফাইনালে।
‘পেশা হিসেবে নিতে না পারলে আমাদের কাবাডি উঠে দাঁড়াবে না’
নারী কাবাডি বিশ্বকাপে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে সেমিফাইনালে উঠে প্রথমবারের মতো পদক নিশ্চিত করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এমন সাফল্যের পর কোচ ও খেলোয়াড়রা কাবাডির দিকে বাড়তি মনোযোগ দেয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ম্যাচ শেষ হতেই শুরু হয় বৃষ্টি-রুপালিদের আনন্দ-উৎসব। একজন এসে তাদের হাতে লাল-সবুজ পতাকাও ধরিয়ে দেন। সেটা নিয়ে কোর্টের চারদিকে ল্যাপ অব অনারও দিতে দেখা গেল। উৎসবমুখর দিনে বাংলাদেশের কোচ আরদুজ্জামান মুন্সি জানালেন, ‘আমরা এশিয়ান গেমস ও তার আগে ইরানে নারীদের যে টুর্নামেন্ট হয়েছে, সেখানে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের আসলে টার্গেট ছিল ওয়ার্ল্ড কাপ। ওয়ার্ল্ড কাপে যে কোনো মূল্যে একটা মেডেল খুব দরকার ছিল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। মনে করি এখন পর্যন্ত আমরা সাকসেসফুল। তবে আমরা চেষ্টা করবো সামনে আরও ভালো করার জন্য।’ এরপরই জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় বার্তা দিলেন এভাবে, ‘আমাদের হাতেগোনা কয়েকটা মেয়েই কাবাডি খেলে। তাই আমাদের পর্যাপ্ত প্লেয়ার নেই। পর্যাপ্ত প্লেয়ারের জন্য বিকেএসপিতে কাবাডির তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। বিকেএসপিতে মেয়েদের কাবাডির ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুল লেভেল থেকে কাবাডি শুরু করতে হবে। এখন আমাদের মেয়েরা কাবাডি খেলতে চায় না। কাবাডি খেলে ভবিষ্যৎ কী, ভারতে কাবাডি খেলে খেলোয়াড়রা কোটি কোটি টাকা পাচ্ছে। খেলাটাকে যদি আমরা পেশা হিসেবে নিতে না পারি, তাহলে কিন্তু আমাদের কাবাডি উঠে দাঁড়াবে না।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
নারী কাবাডির বিশ্বকাপ
বাংলাদেশের মেয়েদের জয়োল্লাস
শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
থাইল্যান্ডকে হারিয়ে নারী কাবাডির বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। সেই সুবাদে অন্তত ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত হয়েছে স্বাগতিকদের।
শনিবার,(২২ নভেম্বর ২০২৫) শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের শুরুতে উজ্জ্বল ছিল থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ ছিল কিছুটা মন্থর। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গুছিয়ে উঠলো স্বাগতিকরা। লিড নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করা বাংলাদেশ উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ে থাইল্যান্ডকে ৪০-৩১ পয়েন্ট হারিয়ে নিশ্চিত করে নারী বিশ্বকাপের ইতিহাসে দেশের প্রথম পদক। ঢাকায় চলমান আসরের শুরু থেকেই পদকের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছিলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের মাধ্যমে সেমিফাইনাল এবং পদক নিশ্চিত করার পর লাল-সবুজ শিবিরে ছিল উচ্ছ্বাস। দলের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দেন লাল-সবুজ পতাকা নেড়ে।
২০১২ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত প্রথম নারী কাবাডি বিশ্বকাপে গ্রুপসেরা হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। জাপানের কাছে ১৭-১৫ পয়েন্টে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল শেষ আট থেকে। চার সেমিফাইনালিস্টের পরের অবস্থান অর্থাৎ পঞ্চম স্থান নিয়ে আসর শেষ করতে হয়েছিল বাংলাদেশ দলকে।
সেমিফাইনালে ইরান
আরেক ম্যাচে নেপালর বিপক্ষে দাপুটে জয়ে দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে ইরানের মেয়েরা। শনিবার নেপালকে ৩৯-১১ পয়েন্টে হারায় ইরান। প্রথমার্ধে দলটি এগিয়ে ছিল ২৪-৩ ব্যবধানে। টানা তিন জয়ের পর সর্বশেষ ম্যাচে চাইনিজ তাইপের কাছে হেরেছিল ইরান। নেপালকে হারিয়ে আবার জয়ে ফিরলো তারা।
আজ পুল-এ রানার্সআপ হিসেবে সেমিফাইনালে উঠা বাংলাদেশ লড়বে পুল-বি চ্যাম্পিয়ন চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে। গত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট ভারত ও ইরান একই দিনে খেলবে অপর সেমিফাইনালে।
‘পেশা হিসেবে নিতে না পারলে আমাদের কাবাডি উঠে দাঁড়াবে না’
নারী কাবাডি বিশ্বকাপে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে সেমিফাইনালে উঠে প্রথমবারের মতো পদক নিশ্চিত করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এমন সাফল্যের পর কোচ ও খেলোয়াড়রা কাবাডির দিকে বাড়তি মনোযোগ দেয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ম্যাচ শেষ হতেই শুরু হয় বৃষ্টি-রুপালিদের আনন্দ-উৎসব। একজন এসে তাদের হাতে লাল-সবুজ পতাকাও ধরিয়ে দেন। সেটা নিয়ে কোর্টের চারদিকে ল্যাপ অব অনারও দিতে দেখা গেল। উৎসবমুখর দিনে বাংলাদেশের কোচ আরদুজ্জামান মুন্সি জানালেন, ‘আমরা এশিয়ান গেমস ও তার আগে ইরানে নারীদের যে টুর্নামেন্ট হয়েছে, সেখানে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের আসলে টার্গেট ছিল ওয়ার্ল্ড কাপ। ওয়ার্ল্ড কাপে যে কোনো মূল্যে একটা মেডেল খুব দরকার ছিল। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। মনে করি এখন পর্যন্ত আমরা সাকসেসফুল। তবে আমরা চেষ্টা করবো সামনে আরও ভালো করার জন্য।’ এরপরই জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় বার্তা দিলেন এভাবে, ‘আমাদের হাতেগোনা কয়েকটা মেয়েই কাবাডি খেলে। তাই আমাদের পর্যাপ্ত প্লেয়ার নেই। পর্যাপ্ত প্লেয়ারের জন্য বিকেএসপিতে কাবাডির তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। বিকেএসপিতে মেয়েদের কাবাডির ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুল লেভেল থেকে কাবাডি শুরু করতে হবে। এখন আমাদের মেয়েরা কাবাডি খেলতে চায় না। কাবাডি খেলে ভবিষ্যৎ কী, ভারতে কাবাডি খেলে খেলোয়াড়রা কোটি কোটি টাকা পাচ্ছে। খেলাটাকে যদি আমরা পেশা হিসেবে নিতে না পারি, তাহলে কিন্তু আমাদের কাবাডি উঠে দাঁড়াবে না।’