বিপিএলের প্রস্তুতি
বিপিএল দলগুলো এখনও ব্যস্ত মাঠের বাইরের প্রস্তুতি ও দল গোছানো নিয়ে। টুর্নামেন্টে অংশগ্রহনকারী ছয় দলের মধ্যে সবার আগে মাঠের ক্রিকেটে প্রস্তুতি শুরু করে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। এই প্রস্তুতি থেকে সামনের মূল অভিযানের বৈতরণী পার হতে চায় তারা অভিজ্ঞতার ভেলায়। সেই চেষ্টায় তাদের ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে মুশফিক।
শনিবার,(২০ ডিসেম্বর ২০২৫) মিরপুরে অনুশীলন শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কোচ হান্নান সরকার বলেন, রাজশাহীর জন্য মুশফিক শুধুই একজন ক্রিকেটার নন, দলের বড় শক্তিও।
‘নিলামের পর মুশফিকের সঙ্গে আমার এবং শান্ত’র কথা হয়েছে। মুশফিক খুবই পজিটিভ। সে রাজশাহীর (বিভাগের) ছেলে, তাই নিজ বিভাগের দলে খেলার একটি আবেগ তার আছে। মুশফিক আমাদের দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়, তাকে আমরা একজন লিডার হিসেবেই দেখছি। তার অভিজ্ঞতা আমাদের দলের জন্য বড় পাওয়া।’
রাজশাহী দলে মুশফিকদের সঙ্গে খেলবেন জাতীয় দলের টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে হান্নানের কোচিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আবাহনী লিমিটেড, আসরের বেশির ভাগ ম্যাচে অধিনায়ক ছিলেন শান্ত। সেই বোঝাপড়ার ধারাবাহিকতা এবার বিপিএলেও কাজে দেবে বলে বিশ্বাস কোচের।
‘শান্ত বাংলাদেশের অধিনায়ক। তিন ফরম্যাটেই নেতৃত্ব দিয়েছে। এলিট লেভেলে তার অধিনায়কত্বের শুরুটা আমার খুব কাছ থেকে দেখা। মিনিস্টার রাজশাহী দলে সে অধিনায়ক ছিল, আমি ছিলাম মেন্টর। তখন থেকেই আমাদের সম্পর্কটা খুব ঘনিষ্ঠ। পরে জাতীয় দলের নির্বাচক থাকার সময়ও নানা সভায় তার ক্রিকেটীয় বোধ দেখেছি।’
‘শান্ত খুব ভালো টিমম্যান। দলের ফলাফল আনার পেছনে এই ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজে ভালো না খেললেও কীভাবে দল থেকে সেরাটা বের করে আনতে হয়, সেটা সে জানে। আবাহনীতেও আমরা সেটা দেখেছি।’
তবে নেতৃত্ব শান্তই পাবেন নাকি অন্য কেউ, তা এখনও খোলাসা করেননি রাজশাহী কোচ। ‘আমাদের কাছে ভালো ক্যান্ডিডেট আছে মুশফিক, শান্ত, এমনকি আকবরও। সবাই প্রমাণিত অধিনায়ক। বলা যায়, অধিনায়কত্বের বিবেচনায় আমাদের একটা মধুর সমস্যা আছে। খুব শিগগিরই সবাই জানতে পারবেন কে হচ্ছেন রাজশাহীর অধিনায়ক।’ হান্নানকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কিপার নিয়েও। মুশফিক ও আকবরের মতো প্রতিষ্ঠিত দুজন কিপার তো আছেনই, প্রয়োজনে শান্তকেও কিপিং গ্লাভস হাতে তৈরি দেখতে চান কোচ। তবে শেষ পর্যন্ত মূল কিপার মুশফিকই হবে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন কোচ।
‘টিম কম্বিনেশনে মুশফিক একটু এগিয়ে থাকবে। সে কিপিংটা খুব উপভোগ করে। কিপিং করলে সে খেলায় বেশি সম্পৃক্ত থাকে। মুশফিকের মতো একজন অভিজ্ঞ কিপার উইকেটের পেছনে থাকলে অধিনায়কের জন্য বোলিং ও দল পরিচালনা অনেক সহজ হয়ে যায়। অন্য কেউ অধিনায়ক হলে মুশফিকের গাইডেন্স পাবে।’
চট্টগ্রামে খেলবেন কামরান ও ডেলপোর্ট
আসন্ন বিপিএলে চট্টগ্রাম রয়্যালসের হয়ে খেলবেন পাকিস্তানের কামরান গুলাম এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ডার ক্যামেরন ডেলপোর্ট। বিপিএল দিয়ে প্রথমবারের মত বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে অংশ নেবেন কামরান।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এখনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি ডেলপোর্টের। তবে সারাবিশ্বের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে নিয়মিত মুখ তিনি।
বিপিএলে চার ভিন্ন দলের হয়ে খেলেছেন ডেলপোর্ট। বিপিএলে ৩১ ম্যাচ খেলে ৬৩৬ রান করেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ৭১ উইকেট শিকার করেছেন এই মিডিয়াম পেসার।
চট্টগ্রাম রয়্যালস দল
স্থানীয় খেলোয়াড়: মাহেদী হাসান, তানভীর ইসলাম, নাইম শেখ, শরিফুল ইসলাম, আবু হায়দার রনি, মাহমুদুল হাসান জয়, মাহফিজুল ইসলাম রবিন, সুমন খান, জিয়াউর রহমান, আরাফাত সানি, মুকিদুল ইসলাম, শুভাগত হোম, সালমান হোসেন, জাহিদুজ্জামান খান।
বিদেশী খেলোয়াড়: আবরার আহমেদ (পাকিস্তান), নিরোশান ডিকবেলা (শ্রীলংকা), অ্যাঞ্জেলো পেরেরা (শ্রীলঙ্কা), পল স্টার্লিং (আয়ারল্যান্ড), ক্যামেরন ডেলপোর্ট (দক্ষিণ আফ্রিকা), কামরান গুলাম (পাকিস্তান)।
সব টিকেটই বিক্রি হবে অনলাইনে
বিপিএল ১২তম আসরের পর্দা উঠবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর। আজ থেকে শুরু হচ্ছে সিলেট পর্বের টিকেট বিক্রি। বিকেল ৪টা থেকে টিকেট পাওয়া যাবে, সব টিকেটই বিক্রি হবে অনলাইনে। মাঠে বা ভেন্যুতে থাকছে না কোনো টিকেট কাউন্টার।
এবার সর্বনিম্ন ২০০ টাকা খরচ করে দিনের দুটি ম্যাচ দেখতে পারবেন দর্শকরা। সবচেয়ে কম মূল্যের টিকেট ২০০ টাকার, যা ধরা হয়েছে সিলেট স্টেডিয়ামের শহীদ তুরাব স্ট্যান্ড ও গ্রিন গ্যালারির প্রতিটি আসনের জন্য।
এছাড়া শহীদ আবু সাঈদ স্ট্যান্ড ২৫০ টাকা, ক্লাব হাউজের আপার জোন ৫০০ টাকা, ক্লাব হাউজের জিরো ওয়েস্ট জোনের টিকেট মূল্য ৬০০ টাকা ধরা হয়েছে। গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের আপার ওয়েস্ট, আপার ইস্ট, লোয়ার ওয়েস্ট ও লোয়ার ইস্ট জোনের প্রতিটি টিকেটের মূল্য ধরা হয়েছে ২ হাজার টাকা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী দিনে দুপুর ২টায় স্বাগতিক সিলেট টাইটান্সের মুখোমুখি হবে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। সন্ধ্যা ৭টায় চট্টগ্রাম রয়্যালসের বিপক্ষে লড়বে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। সিলেট পর্বের পর ক্রমান্বয়ে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় গড়াবে আসর।
তিন ভেন্যু মিলিয়ে হবে মোট ৩৪টি ম্যাচ। অনলাইনে টিকেট কেনা যাবে এই ওয়েবসাইটে (িি.িমড়নপনঃরপশবঃ.পড়স.নফ)