পেসার জ্যাকব ডাফির নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জিতলো স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।
সোমবার শেষ টেস্টে নিউজিল্যান্ড ৩২৩ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। রান বিবেচনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে এটিই সবচেয়ে বড় জয় কিউইদের।
প্রথম টেস্ট ড্র হলেও দ্বিতীয় ম্যাচ ৯ উইকেটে জিতেছিল স্বাগতিকরা। ফলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতলো কিউইরা। এ নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ পাঁচ টেস্ট সিরিজই জিতলো ব্ল্যাক-ক্যাপসরা। সর্বশেষ ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টেস্ট সিরিজ হেরেছিল নিউজিল্যান্ড।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জিততে চতুর্থ দিন ৪৬২ রানের বড় টার্গেট পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিন শেষে বিনা উইকেটে ৪৩ রান করেছিল ক্যারিবীয়রা। টেস্ট জিততে ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিন ১০ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ৪১৯ রান দরকার ছিল ক্যারিবীয়দের। দলীয় ৮৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৭ রান নিয়ে খেলতে নামা ব্র্যান্ডন কিংকে ৬৭ রানে সাজঘরে ফেরত পাঠান নিউজিল্যান্ড পেসার ডাফি।
কিংয়ের আউটের পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন-আপ। ১১২ রানে অষ্টম উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা। নবম উইকেটে টেভিন ইমলাচ ও এন্ডারসন ফিলিপ উইকেট পতন ঠেকিয়ে ২৬ রানের জুটি গড়েন। তারপরও ১৩৮ রানে অলআউট হয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। দুই ওপেনারের ৮৭ রানের সূচনার পর ৫১ রানে ১০ উইকেট পতন হয় সফরকারীদের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে মাত্র চারজন ব্যাটার দুই অঙ্কে পা রাখতে পেরেছেন। কিং ছাড়াও ক্যাম্পবেল ১৬, ইমলাচ ১৫ ও ফিলিপ ১০ রান করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং ধসে বড় অবদান রাখেন ডাফি। ৪২ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি। সিরিজের তিন টেস্টে ২৩ উইকেট শিকারে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন এ ডানহাতি পেসার। নিজেদের মাঠে এক টেস্ট সিরিজে নিউজিল্যান্ডের কোনো বোলারের সর্বোচ্চ উইকেটের নয়া রেকর্ড গড়েছেন ডাফি। আগের রেকর্ডটি ছিল পেসার ট্রেন্ট বোল্টের। ২০১৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ২০ উইকেট নিয়েছিলেন বোল্ট। এছাড়াও তিন সংস্করণ মিলিয়ে এক পঞ্জিকাবর্ষে নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৮১ উইকেট শিকারের নয়া রেকর্ড গড়লেন ডাফি। আগের রেকর্ডটি ছিল রিচার্ড হ্যাডলির। ১৯৮৫ সালে ২৩ ম্যাচে ৭৯ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। চলতি বছর ডাফি খেলেছেন ৩৬ ম্যাচ।
এই জয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ চক্রে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠলো প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড। ৩ ম্যাচ খেলে ২টি জয় ও ১টি ড্র’তে ৭৭.৭৮ শতাংশ পয়েন্ট আছে কিউইদের।
৬ ম্যাচে ৬ জয়ে শতভাগ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে দ্বিতীয় আসরের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।
তৃতীয় স্থানে নেমেছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা। চারটি টেস্ট খেলে তিনটি জিতে প্রোটিয়াদের পয়েন্ট শতাংশ ৭৫। চতুর্থ স্থানে নেমে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দু’টি টেস্ট খেলে একটি জয় এবং একটি ড্র শ্রীলঙ্কার। পয়েন্ট শতাংশ ৬৬.৬৭। পঞ্চম স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। দু’টি টেস্ট খেলে একটি জিতেছেন শান মাসুদরা। তাদের পয়েন্ট শতাংশ ৫০। ভারত নয় টেস্ট খেলে চারটি জিতেছে, চারটি হেরেছে এবং একটি ড্র করেছে। পয়েন্ট শতাংশ ৪৮.১৫।
সপ্তম স্থানে থাকা ইংল্যান্ড আট টেস্ট খেলে দু’টি জিতেছে এবং একটি ড্র করেছে। তাদের পয়েন্ট শতাংশ ২৭.০৮। ২ ম্যাচে ১টি করে হার ও ড্র’তে ১৬.৬৭ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে আছে বাংলাদেশ। ৮ ম্যাচে ৭ হার ও এক ড্র’তে ৪.১৭ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের নবম ও তলানিতে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
স্কোর
নিউজিল্যান্ড ৫৭৫/৮
ডিক্লে. ও ৩০৬/২ ডিক্লে.;
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪২০ ও ১৩৮
ফল
নিউজিল্যান্ড ৩২৩ রানে জয়ী