সর্বশেষ টি-২০ বিশ্বকাপের পর গত দেড় বছরে দেশের হয়ে কোনো টি-২০ খেলেননি প্যাট কামিন্স। জশ হেজেলউড ও টিম ডেভিড নিয়মিতই খেলেছেন এই সংস্করণে। কামিন্স, হেজেলউড ও টিম ডেভিড তারা সবাই মাঠের বাইরে আছেন চোটের কারণে। তবে তিনজনকেই রাখা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার টি-২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে।
টি-২০ বিশ্বকাপের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ১৫ সদস্যের দলে এই তিন ক্রিকেটারকে রাখা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোচ ও নির্বাচক অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড।
বিশ্বকাপের জন্য সবগুলো দলকে স্কোয়াড ঘোষণা করতে হবে আগামী শুক্রবারের মধ্যে। তবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো কারণ দেখানো ছাড়াই স্কোয়াডে পরিবর্তন আনা যাবে। এই সুযোগটিই নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ শুরু আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ম্যাচ ১১ ফেব্রুয়ারি। প্রথম দুই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে। সত্যিকার অর্থে তাদের প্রথম বড় ম্যাচ ১৬ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এখনও তাই পর্যাপ্ত সময় আছে চোট পাওয়াদের সেরে ওঠার। এজন্যই তাদেরকে স্কোয়াডে রাখা হচ্ছে। বিশ্বকাপের কাছাকাছি গিয়ে সবার অবস্থা বুঝে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। চলতি অ্যাশেজে স্রেফ একটি টেস্ট খেলতে পেরেছেন কামিন্স। গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে পিঠের চোটে পড়ার পর সবধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে এটিই তার একমাত্র ম্যাচ। দলের প্রয়োজনে স্বল্প প্রস্তুতি নিয়ে অ্যাডিলেড টেস্টে ফিরে দারুণ বোলিংয়ে ছয় উইকেট নেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় তাকে নিয়ে আর কোনো ঝুঁকি নেয়া হয়নি।
কোচ ম্যাকডোনাল্ড জানান, জানুয়ারির শেষদিকে আরেক দফা স্ক্যানের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কামিন্সকে নিয়ে।
‘চার সপ্তাহ পর আরেক দফা স্ক্যান করানো হবে প্যাটের। তখনই আমরা বুঝতে পারবো যে, সে বিশ্বকাপে থাকবে কিনা। ১৫ জনের স্কোয়াডে তাকে রাখা হবে। এরপর সময় হলে আমরা বুঝতে পারবো কোন অবস্থায় আছে সে।’
হেজেলউড গোটা অ্যাশেজ থেকেই ছিটকে গেছেন বেশ আগেই। গত মাসের মাঝামাঝি শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচ খেলতে গিয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ে টান লাগে তার। সেই চোট থেকে ফেরার চেষ্টার পথেই নতুন করে চোট পান তিনি একিলিসে।
এই বছর টি-২০তে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন তিনি। চোটে পড়ার আগে সর্বশেষ টি-২০ ম্যাচটিতেও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচসেরা হয়েছেন তিন উইকেট নিয়ে। বিশ্বকাপে তাকে পুরো ফিট পাওয়া যাবে বলেই বিশ্বাস অস্ট্রেলিয়া কোচের।
‘জশ বোলিংয়ে ফিরছে। সম্ভাব্য সময়ের মধ্যেই সে উপযুক্ত অবস্থায় থাকবে বলে মনে হচ্ছে।’
বছরটি অসাধারণ কেটেছে টিম ডেভিডেরও। বিশেষ করে, ব্যাটিং অর্ডারে চার-পাঁচ নম্বরে তুলে আনার পর নতুন ভূমিকায় তিনি জ্বলে উঠেছেন নতুনভাবে। তবে গত শুক্রবার বিগ ব্যাশের ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান। তিনজনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শঙ্কা তাকে নিয়েই।
গত আইপিএলের সময়ও হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েছিলেন তিনি। সেবার মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে দুই মাস। তার এবারের চোট অন্য পায়ে বলে জানা গেছে। সোমবার,(২৯ ডিসেম্বর ২০২৫) স্ক্যান করানো হয় তার। সেখানে ধরা পড়ে গ্রেড টু হ্যামস্ট্রিং টিয়ার। বিগ ব্যাশে তিনি আর খেলতে পারবেন না।
তবে বিশ্বকাপে ডেভিডকে পেতে আশাবাদী কোচ। ‘এখনও নিশ্চিত নই, ওর সমস্যা নিখাদ পেশিতে নাকি টেন্ডনে। সেটা জানার পর সম্ভাব্য সময় বুঝতে পারবো। আমার ধারণা, যে সময়টুকু আছে এটা ওর জন্য যথেষ্ট হবে। চোট যে ধরনেরই হোক, ওকে পাওয়া যাবে বলে মনে করি।’
শুধু চোটের কারণেই নয়, বিগ ব্যাশের পারফরম্যান্সের ওপর দলে পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছেন কোচ।
বিশ্বকাপের ঠিক আগে প্রস্তুতি হিসেবে জানুয়ারির শেষদিকে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের একটি টি-২০ সিরিজ খেলবে অস্ট্রেলিয়া।
এবারের আসওে ২০টি অংশগ্রহণকারী দলকে চার দলের পাঁচটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল সুপার এইট পর্বে উঠবে। পরে সুপার এইট পর্বে আবার চার দলের দুটি গ্রুপ করা হবে।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতকে রাখা হয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে একই গ্রুপে। এ ছাড়া ওই গ্রুপে রয়েছে নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।
অন্যদিকে সহ-আয়োজক শ্রীলঙ্কার সঙ্গে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ড এবং ওমান।
আরেকটি গ্রুপে আছে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ, ইতালি ও নেপাল। বাকি গ্রুপে রাখা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কানাডাকে।