alt

সাকিব ঝলকে সিরিজ জিতল টাইগাররা

স্কোর : জিম্বাবুয়ে ২৪০/৯, বাংলাদেশ ৪৯.১ ওভারে ২৪২/৭, ফল : বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী

বিশেষ প্রতিনিধি : রোববার, ১৮ জুলাই ২০২১

জিম্বাবুয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় ম্যাচ জয়ে অবদান রাখেন শফিউল ও সাকিব আল হাসান -ক্রিকইনফো

বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব-আল হাসানের ব্যাটে ছিল রানের খরা। সেই সাকিব আল হাসানই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অবতীর্ন হলেন ত্রাতার ভূমিকায়। একপ্রান্তে ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে বিশেষত তরুণদের ব্যর্থতায় প্রচন্ড চাপের মুখে ¯স্নায়ুর চাপ সামলে খেললেন ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। এই ইনিংসটা খেলার আগে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে পাঠিয়েছেন সাজঘরে। এককথায় আবারও দেখালেন কেনো তিনি বিশ্বসেরা, কেনো তিনি বাংলাদেশের এ যাবত কালের সেরা ক্রিকেটার। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওডিআই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ টাইগাররা জিতে নিয়েছে তিন উইকেটে। এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ করে নিয়েছে নিজেদের, আইসিসি ওডিআই সুপার লীগে নিজেদের ঝুলিতে যোগ করেছে আরও ১০টি পয়েন্ট। বলে রাখা প্রয়োজন যে, সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের মাত্র ২৯ ওভারের মধ্যে ১২১ রানে অলআউট করার পথে সাকিব শিকার করেছিলেন পাঁচ জিম্বাবুইয়ান ব্যাটারের প্রাণ।

আর হ্যাঁ, টস জিতে আগে ব্যাট করে দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের তোলা ২৪০ রান সাকিবের নৈপুণ্যে পাঁচ বল হাতে রেখেই টপকে যায় টাইগাররা। সাকিবের ম্যাচ জেতানো ইনিংসের আগে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ একটা পর্যায় পর্যন্ত পুরোপুরি ছিল জিম্বাবুয়ের হাতে, যার শুরু দশম ওভার থেকে।

জয়ের জন্য ২৪১ রানের লক্ষ্যে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও প্রথম ওডিআই’র সেঞ্চুরিয়ান লিটন কুমার দাস শুরু থেকে বেশ স্বচ্ছন্দে খেলছিলেন। ইনিংস এগিয়ে যাচ্ছিলো যথানিয়মে। হঠাৎই ছন্দপতন ঘটে লুক জঙ্গুয়ের বলে। সিকান্দার রাজার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান হাঁটুর ইনজুরিকে পাত্তা না দিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। দলীয় ৩৯ রানের মাথায় তামিম ফেরেন ৩৪ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২০ রান করে।

তামিমের বিদায়ে লিটন সঙ্গী হিসাবে পান সাকিব আল হাসানকে। তবে, প্রথম ম্যাচের মতো ইনিংস গড়ায় মনোযোগী না হয়ে লিটন কুমার দাস (২১) অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বলি হলেন নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে। এনগারাভাকে অযথাই পুল করে মিড অনে সহজ ক্যাচ দেন তিনি।

দলীয় ৪৬ রানে দুই উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের তরুণরা আবারও ব্যর্থ হয়ে দলকে ঠেলে দেন খাদের কিণারায়। একে একে ফেরেন মোহাম্মদ মিথুন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মেহেদি হাসান মিরাজ। প্রথম ওডিআইতে লিটন-মাহমুদুল্লাহর ব্যাটে গড়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ঝড়ো ইনিংস খেলা আফিফ হোসেন ধ্রুবও টেকেননি বেশিক্ষণ। ফলে একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সাকিবকে দেখতে হয় পাঁচটি উইকেটের পতন।

ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মোহাম্মদ মিথুন (২) সাজঘরের পথ ধরেন লুক জঙ্গুইয়ের বলে পয়েন্টে মাধভেরের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে। বিনা উইকেটে ৩৯ রান থেকে পরবর্তী ১১ রানের মধ্যে তিন ব্যাটার সাজঘরে ফিরলে স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ দল।

মিথুনের পর বিদায় হলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। টানা দুই ম্যাচে চার এবং পাঁচ নম্বর পজিশনের এই দুই ব্যাটসম্যান চরমভাবে ব্যর্থ। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও তার ব্যাট থেকে বড় ইনিংস আসেনি। তিনি অবশ্য কিছুটা দুর্ভাগ্যের শিকার। তবে দলের এই অবস্থায় তিনি যেভাবে আউট হলেন, তা মেনে নেয়া যায় না। মাত্র ৫ রান করে তিনি রান-আউট হয়ে অযথা রান নিতে গিয়ে। রিচার্ড এনগারাভার করা লেগস্টাম্পের বাইরের ওয়াইড বলটা প্রথমে ঠিকঠাক ধরতে পারেননি রেজিস চাকাভা। সাকিব দাঁড়িয়ে থাকলেও মোসাদ্দেক দৌড় শুরু করেন। চাকাভা সরাসরি থ্রোয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন। প্রথম ম্যাচে ৭৬ রানে চার ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাওয়া বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় ম্যাচে চতুর্থ উইকেট হারায় ৭৫ রানে। প্রথম ম্যাচে লিটনের সঙ্গে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৯৩ রানের জুটি গড়লেও রোববারের ম্যাচে সাকিবের সঙ্গে বড় জুটি গড়তে না পারলেও দু’জনের ৫৫ রানের জুটিটা দলকে অনেকটা এগিয়ে দেয়।

দু’জনের জুটিটা ভাঙতে বোলিং ডিপার্টমেন্টের সেরা অস্ত্র ব্লেসিং মুজারাবানির হাতে বল তুলে দেন টেইলর। অধিনায়ককে হতাশ করেননি মুজারাবানি। তাকে কাট করার চেষ্টায় কিপার রেজিস চাকাভাকে সহজ ক্যাচ দেন মাহমুদুল্লাহ (২৬), ভাঙে ৫৫ রানের জুটি।

একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে পাঁচ ব্যাটারের আসা-যাওয়া দেখার মাঝেই সাকিব পেরিয়ে যান হাফ সেঞ্চুরির কোটা। অনেকদিন ধরেই তার ব্যাটে রানের খরা চলছিল। দলের প্রয়োজনের সময়ে তিনি আবারও দেখালেন ¯স্নায়ুর চাপ জয় করার সহজাত ক্ষমতা। সিকান্দার রাজাকে কাভার দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠিয়ে ৫৯ বলে পঞ্চাশে পৌঁছান সাকিব।

সাকিবকে সঙ্গ দেয়ার জন্য সাত নম্বরে নামা আফিফ হোসেন ব্যাটে ঝড় তোলা দূরে থাক, বেশিক্ষণ টেকেননি। ২৩ বলে ১৫ রানে তিনি সিকান্দার রাজার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়ার সময়ে ১৭৩ রানে সাত উইকেট হারিয়ে খাদের কিণারায় বাংলাদেশ দল।

তবে, সাকিবকে যোগ্য সমর্থন যোগানোর কাজটা করেছেন টেল এন্ডার সাইফুদ্দিন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার রয়েছে একটা হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস। সেই অভিজ্ঞতাটাই বোধ হয় কাজে লাগালেন তিনি। দুইজনে কিছুটা সময় নিলেন থিতু হতে। এতে চাপ বাড়ল জিম্বাবুয়ের বোলারদের ওপর। ৪৯তম ওভারের শেষ বলটা সাইফুদ্দিনের ব্যাটের ভেতরের কাণায় লেগে শর্ট ফাইন লেগ অঞ্চল দিয়ে চলে গেলো সীমানার বাইরে। শেষ ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানি বোলিংয়ে আসার সময়ে বাংলাদেশের চাই কেবল তিন রান। প্রথম বলটাকেই সাকিব থার্ডম্যান দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠালেন, আর দল পেলো তিন উইকেটের জয়। সাকিবের সঙ্গে তখন ২৮ রানে অপরাজিত সাইফুদ্দিন।

এই ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার হওয়ার দৌড়ে সাকিবের ধারে কাছেও যে কেউ ছিল না, তা বলার প্রয়োজন পড়ে কি?

ছবি

‘বাংলাদেশের লক্ষ্য ভারত ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জয়’

ছবি

নারী ক্রিকেটারদের বেতন বাড়ছে

ছবি

আয়ারল্যান্ড সিরিজে টাইগারদের ব্যাটিং কোচ আশরাফুল

ছবি

তিন ম্যাচই ড্র, মুশফিক ও সালমানের শতক

ছবি

অনুশীলনের জন্য নারী ফুটবল দল ফের চট্টগ্রামে

ছবি

আইরিশদের বিপক্ষে টেস্ট দলে ফিরলেন জয়, বাদ এনামুল

ছবি

বুধবার রাজশাহীতে আফগানদের মুখোমুখি বাংলাদেশের যুবারা

ছবি

এশিয়ান আরচারিতে পদক জয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের

ছবি

কিউই-উইন্ডিজ প্রথম টি-২০ বুধবার

ছবি

ফিফপ্রো বিশ্ব একাদশে ইয়ামাল!

ছবি

খুলনাকে হারিয়ে প্রথম জয় রাজশাহীর, সেঞ্চুরির স্বপ্ন মুশফিকের

ছবি

তিনবারের চেষ্টায় শিরোপার স্বাদ পেল ভারত

ছবি

বিওএর নির্বাচন কমিশন গঠন

ছবি

নাটকীয়ভাবে দলে এসে ফাইনালে সেরা শেফালি

ছবি

নারী হকিতে ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর জয়ী

ছবি

ফেড কাপ টিটির নতুন চ্যাম্পিয়ন খৈ খৈ ও হৃদয়

ছবি

‘ক্রীড়া লেখক সমিতির মাধ্যমে একদিন ক্রীড়া জাদুঘরও হবে’

ছবি

চ্যাম্পিয়ন দল পেল ৫৪.২৬ কোটি টাকা

ছবি

বিসিবির নারী পরিচালক হলেন রুবাবা দৌলা

ছবি

আফগান দল ছাড়বেন ট্রট

ছবি

টানা তিন বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান উলভার্টের, বেশি উইকেট দীপ্তির

ছবি

পদক পুনরুদ্ধার করাই লক্ষ্য বাংলাদেশের

ছবি

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ভারতের সিরিজে সমতা

ছবি

এমবাপ্পের জোড়া গোলে রেয়াল মাদ্রিদের বড় জয়

ছবি

টেবিল টেনিসে আসছে ইরানি কোচ!

ছবি

টি-২০ থেকে বিদায় নিলেন উইলিয়ামসন

ছবি

নারী হকি টুর্নামেন্ট শুরু

ছবি

ভোলার ক্রীড়াপ্রেমীদের তীর্থস্থান গজনবী স্টেডিয়াম

ছবি

‘রেয়ালে এই ধরনের পুরস্কার অনেকবার জিতবো’

ছবি

জাতীয় দূরপাল্লা সাঁতারে প্রথম ফয়সাল ও সোনিয়া

শটের বৈচিত্র্য বাড়াতে পারলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করা সম্ভব: লিটন

ছবি

জানুয়ারিতে পাকিস্তানে এসএ গেমস: নিশ্চয়তা নেই তাই তাদের ক্যাম্প স্থগিত!

ছবি

বাবরের রেকর্ডের ম্যাচ জিতে সমতা ফেরালো পাকিস্তান

ছবি

নারী বিশকাপ ফাইনালে রবিবার মুখোমুখি ভারত ও দ.আফ্রিকা

ছবি

নাজমুল শান্তই থাকছেন টেস্ট দলের নেতৃত্বে

ছবি

ভারত ম্যাচে শুধুই জয়ের ভাবনা: মোরসালিন

tab

সাকিব ঝলকে সিরিজ জিতল টাইগাররা

স্কোর : জিম্বাবুয়ে ২৪০/৯, বাংলাদেশ ৪৯.১ ওভারে ২৪২/৭, ফল : বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী

বিশেষ প্রতিনিধি

জিম্বাবুয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় ম্যাচ জয়ে অবদান রাখেন শফিউল ও সাকিব আল হাসান -ক্রিকইনফো

রোববার, ১৮ জুলাই ২০২১

বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব-আল হাসানের ব্যাটে ছিল রানের খরা। সেই সাকিব আল হাসানই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অবতীর্ন হলেন ত্রাতার ভূমিকায়। একপ্রান্তে ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে বিশেষত তরুণদের ব্যর্থতায় প্রচন্ড চাপের মুখে ¯স্নায়ুর চাপ সামলে খেললেন ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। এই ইনিংসটা খেলার আগে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে পাঠিয়েছেন সাজঘরে। এককথায় আবারও দেখালেন কেনো তিনি বিশ্বসেরা, কেনো তিনি বাংলাদেশের এ যাবত কালের সেরা ক্রিকেটার। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওডিআই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ টাইগাররা জিতে নিয়েছে তিন উইকেটে। এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ করে নিয়েছে নিজেদের, আইসিসি ওডিআই সুপার লীগে নিজেদের ঝুলিতে যোগ করেছে আরও ১০টি পয়েন্ট। বলে রাখা প্রয়োজন যে, সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের মাত্র ২৯ ওভারের মধ্যে ১২১ রানে অলআউট করার পথে সাকিব শিকার করেছিলেন পাঁচ জিম্বাবুইয়ান ব্যাটারের প্রাণ।

আর হ্যাঁ, টস জিতে আগে ব্যাট করে দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের তোলা ২৪০ রান সাকিবের নৈপুণ্যে পাঁচ বল হাতে রেখেই টপকে যায় টাইগাররা। সাকিবের ম্যাচ জেতানো ইনিংসের আগে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ একটা পর্যায় পর্যন্ত পুরোপুরি ছিল জিম্বাবুয়ের হাতে, যার শুরু দশম ওভার থেকে।

জয়ের জন্য ২৪১ রানের লক্ষ্যে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও প্রথম ওডিআই’র সেঞ্চুরিয়ান লিটন কুমার দাস শুরু থেকে বেশ স্বচ্ছন্দে খেলছিলেন। ইনিংস এগিয়ে যাচ্ছিলো যথানিয়মে। হঠাৎই ছন্দপতন ঘটে লুক জঙ্গুয়ের বলে। সিকান্দার রাজার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান হাঁটুর ইনজুরিকে পাত্তা না দিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। দলীয় ৩৯ রানের মাথায় তামিম ফেরেন ৩৪ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২০ রান করে।

তামিমের বিদায়ে লিটন সঙ্গী হিসাবে পান সাকিব আল হাসানকে। তবে, প্রথম ম্যাচের মতো ইনিংস গড়ায় মনোযোগী না হয়ে লিটন কুমার দাস (২১) অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বলি হলেন নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে। এনগারাভাকে অযথাই পুল করে মিড অনে সহজ ক্যাচ দেন তিনি।

দলীয় ৪৬ রানে দুই উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের তরুণরা আবারও ব্যর্থ হয়ে দলকে ঠেলে দেন খাদের কিণারায়। একে একে ফেরেন মোহাম্মদ মিথুন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মেহেদি হাসান মিরাজ। প্রথম ওডিআইতে লিটন-মাহমুদুল্লাহর ব্যাটে গড়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ঝড়ো ইনিংস খেলা আফিফ হোসেন ধ্রুবও টেকেননি বেশিক্ষণ। ফলে একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সাকিবকে দেখতে হয় পাঁচটি উইকেটের পতন।

ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মোহাম্মদ মিথুন (২) সাজঘরের পথ ধরেন লুক জঙ্গুইয়ের বলে পয়েন্টে মাধভেরের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে। বিনা উইকেটে ৩৯ রান থেকে পরবর্তী ১১ রানের মধ্যে তিন ব্যাটার সাজঘরে ফিরলে স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ দল।

মিথুনের পর বিদায় হলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। টানা দুই ম্যাচে চার এবং পাঁচ নম্বর পজিশনের এই দুই ব্যাটসম্যান চরমভাবে ব্যর্থ। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও তার ব্যাট থেকে বড় ইনিংস আসেনি। তিনি অবশ্য কিছুটা দুর্ভাগ্যের শিকার। তবে দলের এই অবস্থায় তিনি যেভাবে আউট হলেন, তা মেনে নেয়া যায় না। মাত্র ৫ রান করে তিনি রান-আউট হয়ে অযথা রান নিতে গিয়ে। রিচার্ড এনগারাভার করা লেগস্টাম্পের বাইরের ওয়াইড বলটা প্রথমে ঠিকঠাক ধরতে পারেননি রেজিস চাকাভা। সাকিব দাঁড়িয়ে থাকলেও মোসাদ্দেক দৌড় শুরু করেন। চাকাভা সরাসরি থ্রোয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন। প্রথম ম্যাচে ৭৬ রানে চার ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাওয়া বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় ম্যাচে চতুর্থ উইকেট হারায় ৭৫ রানে। প্রথম ম্যাচে লিটনের সঙ্গে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৯৩ রানের জুটি গড়লেও রোববারের ম্যাচে সাকিবের সঙ্গে বড় জুটি গড়তে না পারলেও দু’জনের ৫৫ রানের জুটিটা দলকে অনেকটা এগিয়ে দেয়।

দু’জনের জুটিটা ভাঙতে বোলিং ডিপার্টমেন্টের সেরা অস্ত্র ব্লেসিং মুজারাবানির হাতে বল তুলে দেন টেইলর। অধিনায়ককে হতাশ করেননি মুজারাবানি। তাকে কাট করার চেষ্টায় কিপার রেজিস চাকাভাকে সহজ ক্যাচ দেন মাহমুদুল্লাহ (২৬), ভাঙে ৫৫ রানের জুটি।

একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে পাঁচ ব্যাটারের আসা-যাওয়া দেখার মাঝেই সাকিব পেরিয়ে যান হাফ সেঞ্চুরির কোটা। অনেকদিন ধরেই তার ব্যাটে রানের খরা চলছিল। দলের প্রয়োজনের সময়ে তিনি আবারও দেখালেন ¯স্নায়ুর চাপ জয় করার সহজাত ক্ষমতা। সিকান্দার রাজাকে কাভার দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠিয়ে ৫৯ বলে পঞ্চাশে পৌঁছান সাকিব।

সাকিবকে সঙ্গ দেয়ার জন্য সাত নম্বরে নামা আফিফ হোসেন ব্যাটে ঝড় তোলা দূরে থাক, বেশিক্ষণ টেকেননি। ২৩ বলে ১৫ রানে তিনি সিকান্দার রাজার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়ার সময়ে ১৭৩ রানে সাত উইকেট হারিয়ে খাদের কিণারায় বাংলাদেশ দল।

তবে, সাকিবকে যোগ্য সমর্থন যোগানোর কাজটা করেছেন টেল এন্ডার সাইফুদ্দিন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার রয়েছে একটা হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস। সেই অভিজ্ঞতাটাই বোধ হয় কাজে লাগালেন তিনি। দুইজনে কিছুটা সময় নিলেন থিতু হতে। এতে চাপ বাড়ল জিম্বাবুয়ের বোলারদের ওপর। ৪৯তম ওভারের শেষ বলটা সাইফুদ্দিনের ব্যাটের ভেতরের কাণায় লেগে শর্ট ফাইন লেগ অঞ্চল দিয়ে চলে গেলো সীমানার বাইরে। শেষ ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানি বোলিংয়ে আসার সময়ে বাংলাদেশের চাই কেবল তিন রান। প্রথম বলটাকেই সাকিব থার্ডম্যান দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠালেন, আর দল পেলো তিন উইকেটের জয়। সাকিবের সঙ্গে তখন ২৮ রানে অপরাজিত সাইফুদ্দিন।

এই ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার হওয়ার দৌড়ে সাকিবের ধারে কাছেও যে কেউ ছিল না, তা বলার প্রয়োজন পড়ে কি?

back to top