alt

সম্পাদকীয়

ভূমিকম্প : ভবিষ্যতের বিপদ মোকাবিলায় টেকসই পরিকল্পনা জরুরি

: রোববার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প বেড়ে গেছে। এ বছর দেশে প্রায় ১০০টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ভূমিকম্পগুলো সৃষ্টি হয়েছে, তার বেশির ভাগই নতুন এলাকায়।

গত শনিবার সকালে সারাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এটির উৎপত্তিস্থল ছিল লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থেকে আট কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর-পূর্বে। ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬। গত ২৫ বছরে দেশের ভেতরে যেকটি ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছিল, তার মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। এর আগে ১৯৯৮ সালের মে মাসে সিলেটের বড়লেখায় ৫ দশমিক ৮ মাত্রার একটি ভূকম্পন সৃষ্টি হয়।

শনিবারের ভূমিকম্পে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও কয়েক জায়গায় ভবনে ফাটল দেখা গেছে। তবে বড় ধরনের ভূমিকম্প যদি হয়, তাহলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। দেশে যেসব স্থাপনা গড়ে তোলা হয় তার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিল্ডিং কোড মানা হয় না। বড় ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে হলে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড মেনে চলতে হবে। ভবনের উচ্চতা ও লোডের হিসাব অনুযায়ী শক্ত ভিত দেয়া, রি-ইনফোর্সড কংক্রিট ব্যবহার, পাশের বাড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্বে বাড়ি নির্মাণ, গ্যাস ও বিদুৎ লাইন নিরাপদভাবে স্থাপন করার মতো নিয়মগুলো মানতে হবে। কেউ যেন নরম মাটি ও গর্ততে ভবন নির্মাণ না করতে পারে সেক্ষেত্রে নজরদারি বাড়াতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংস্কার করতে হবে। আর সংস্কার করা না গেলে ভেঙে ফেলতে হবে।

ভূমিকম্প হলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তাই ভূমিকম্প হলে কী কী করণীয় সেসব সম্পর্কে মানুষের ভেতর সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। শনিবার ভূমিকম্প শুরু হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা ছোটাছুটি শুরু করেন। মাস্টারদা সূর্য সেন হলের দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ভূমিকম্পের সময় একটি পোশাক কারখানায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কারখানা থেকে তাড়াহুড়া করে বের হওয়ার সময় পদপিষ্ট হয়ে অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন।

যদি মানুষের মাঝে যথেষ্ট সচেতনতা থাকতে, তাহলে এসব দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে যে ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, দেশে যদি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয় তাহলে আতঙ্কটা আরও বড় আকারে দেখা দেবে। তাই মানুষকে সচেতন করতে পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। এক্ষেত্রে স্কুলভিত্তিক নানা কর্মশালার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো যায়। প্রতিটি কমিউনিটিতে প্রচার চালাতে হবে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

লক্ষ্মীপুরসহ চলতি বছরে দেশে আরও যেকটি ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছে, তা আমাদের গভীর ভূত্বকের মধ্যে। গভীর ভূত্বক এলাকাগুলোতে শক্তিশালী না হলেও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পও আমাদের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের নতুন উৎসস্থলগুলো চিহ্নিত করার ব্যবস্থা দ্রুত নিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্পের উৎসস্থল চিহ্নিত করতে পারলে; সেসব এলাকার ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনশীল করে নির্মাণ করার নির্দেশ দেয়া যাবে। সেই সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলোর লোকবল ও পর্যাপ্ত উদ্ধার যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রাখা যাবে।

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

tab

সম্পাদকীয়

ভূমিকম্প : ভবিষ্যতের বিপদ মোকাবিলায় টেকসই পরিকল্পনা জরুরি

রোববার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প বেড়ে গেছে। এ বছর দেশে প্রায় ১০০টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ভূমিকম্পগুলো সৃষ্টি হয়েছে, তার বেশির ভাগই নতুন এলাকায়।

গত শনিবার সকালে সারাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এটির উৎপত্তিস্থল ছিল লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থেকে আট কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর-পূর্বে। ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬। গত ২৫ বছরে দেশের ভেতরে যেকটি ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছিল, তার মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। এর আগে ১৯৯৮ সালের মে মাসে সিলেটের বড়লেখায় ৫ দশমিক ৮ মাত্রার একটি ভূকম্পন সৃষ্টি হয়।

শনিবারের ভূমিকম্পে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও কয়েক জায়গায় ভবনে ফাটল দেখা গেছে। তবে বড় ধরনের ভূমিকম্প যদি হয়, তাহলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। দেশে যেসব স্থাপনা গড়ে তোলা হয় তার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিল্ডিং কোড মানা হয় না। বড় ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে হলে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড মেনে চলতে হবে। ভবনের উচ্চতা ও লোডের হিসাব অনুযায়ী শক্ত ভিত দেয়া, রি-ইনফোর্সড কংক্রিট ব্যবহার, পাশের বাড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্বে বাড়ি নির্মাণ, গ্যাস ও বিদুৎ লাইন নিরাপদভাবে স্থাপন করার মতো নিয়মগুলো মানতে হবে। কেউ যেন নরম মাটি ও গর্ততে ভবন নির্মাণ না করতে পারে সেক্ষেত্রে নজরদারি বাড়াতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংস্কার করতে হবে। আর সংস্কার করা না গেলে ভেঙে ফেলতে হবে।

ভূমিকম্প হলে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তাই ভূমিকম্প হলে কী কী করণীয় সেসব সম্পর্কে মানুষের ভেতর সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। শনিবার ভূমিকম্প শুরু হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা ছোটাছুটি শুরু করেন। মাস্টারদা সূর্য সেন হলের দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ভূমিকম্পের সময় একটি পোশাক কারখানায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কারখানা থেকে তাড়াহুড়া করে বের হওয়ার সময় পদপিষ্ট হয়ে অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন।

যদি মানুষের মাঝে যথেষ্ট সচেতনতা থাকতে, তাহলে এসব দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে যে ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, দেশে যদি বড় ধরনের ভূমিকম্প হয় তাহলে আতঙ্কটা আরও বড় আকারে দেখা দেবে। তাই মানুষকে সচেতন করতে পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। এক্ষেত্রে স্কুলভিত্তিক নানা কর্মশালার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো যায়। প্রতিটি কমিউনিটিতে প্রচার চালাতে হবে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

লক্ষ্মীপুরসহ চলতি বছরে দেশে আরও যেকটি ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছে, তা আমাদের গভীর ভূত্বকের মধ্যে। গভীর ভূত্বক এলাকাগুলোতে শক্তিশালী না হলেও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পও আমাদের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের নতুন উৎসস্থলগুলো চিহ্নিত করার ব্যবস্থা দ্রুত নিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্পের উৎসস্থল চিহ্নিত করতে পারলে; সেসব এলাকার ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনশীল করে নির্মাণ করার নির্দেশ দেয়া যাবে। সেই সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলোর লোকবল ও পর্যাপ্ত উদ্ধার যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রাখা যাবে।

back to top