প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠী নিয়ে ভাবতে হবে

সাধারণত ৫ থেকে ২৪ বছরকে প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের বয়স হিসেবে গণ্য করা হয়। স্বাভাবিকভাবে এই সময়কালে একজন মানুষের পড়াশোনার মধ্যে থাকার কথা। অথচ শিক্ষাকালীন এই বয়সের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২ কোটি ৬২ লাখের বেশি মানুষ গত বছর প্রাতিষ্ঠানিক কোনো লেখাপড়া গ্রহণ করেনি। যা এই বয়সী জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪১ শতাংশ। এসব মানুষের অনেকেই ঝরে পড়েছে, আবার অনেকে কখনোই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায়নি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে এই তথ্য।

মহামারীর সময়েও এত বেশিসংখ্যক মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে ছিল না বলে জানা যাচ্ছে। এক হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে থাকার এই হার ছিল ২৯ দশমিক ২৭। দেশে করোনা মহামারীর সময় দেড় বছরেরও বেশি সময়ে বন্ধ ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সে সময় প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ইউনিসেফের এক তথ্যে জানা যায়।

মহামারীর কারণে দেশের সব খাতই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা খাত। সংক্রমণ পরিস্থিতি যখন কম ভয়াবহ ছিল, এমন কি করোনা যখন নিয়ন্ত্রণে ছিল তখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সবই খোলা ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী পরপর দুই সপ্তাহ শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরে নেয়া হয়। সেই সঙ্গা অনুযায়ী যখন দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে ছিল তখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়নি। যার খেসারত দিতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

প্রশ্ন হচ্ছে, মহামারী শেষ হওয়ার পর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের চিত্র এত নাজুক কেন। অনেকে বলছেন, মহামারী ও অন্যান্য আর্থসামাজিক কারণে অনেক পরিবারই তাদের সন্তানদের পড়ানোর সামর্থ্য আর আগ্রহ দুটোই হারিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ কাজে নিয়োজিত হয়েছে। কেউবা বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে তবে তা যথেষ্ঠ প্রমাণিত হয়নি।

ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরানোর জন্য সরকারকে শিক্ষা খাতে আরও বিনিয়োগ করতে হবে। এ-সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি অনিয়ম-দুর্নীতির লাগাম টানাও জরুরি।

‘সম্পাদকীয়’ : আরও খবর

» গোবিন্দগঞ্জে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলের অভিযোগ আমলে নিন

» আত্রাই নদীর বালু লুট বন্ধ করুন

» ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মানুষ হত্যা: কঠোর ব্যবস্থা নিন

» অবৈধ ইটভাটা: প্রশাসনের দুর্বলতা ও পরিবেশের সংকট

» ফসলি জমি রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিন

» শেষ না হওয়া সেতু, শেষ না হওয়া ভোগান্তি

» সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে হামলা: আদি ও অকৃত্রিম ফ্যাসিবাদের জঘন্য রূপ

» পাহাড় কেটে কেন পানের বরজ?

» মতপ্রকাশের জন্য গ্রেপ্তার: গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়

» সাহাগোলা রেলওয়ে স্টেশনে জনবল সংকট দূর করুন

» চাঁদপুর সেচ প্রকল্প রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

সম্প্রতি