রইচপুর খালে সেতু নির্মাণে আর কত অপেক্ষা

ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সল্যুশন ডিজাইন’ ২০২১ সালে সাতক্ষীরার রইচপুর খালের সেতু নির্মাণ কাজের দায়িত্ব নেয়। কথা ছিল ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে তারা সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করবে। কিন্তু ৩ বছরে তারা ৩টি পিলার ঢালাই ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজের অগ্রগতির জন্য বার বার ঠিকাদারকে তাগাদা দিলেও তিনি তোয়াক্কাই করছেন না।

রইচপুর খালের ওপর আগে পুরনো একটি সেতু ছিল। সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। তখন জনগণের যাতায়াত-যোগাযোগ সুবিধা দেয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে সরকার পুরনো সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়। ৫০ মিটরি দৈর্ঘ্যরে সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় সাড়ে ৪ কোটি টাকা। ৩ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি সেতুটি। কবে নাগাদ সেতুর কাজ শেষ হবে সেটাও কেউ জানে না।

জনগণ যাতায়াতের বিকল্প হিসেবে খালের ওপর বাঁশ-কাঠ দিয়ে সাঁকো তৈরি করেছে। সাঁকো দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এ সেতু পার হয়েই সাতক্ষীরা শহরে আসতে হয় ঘোনা, শিবপুর, আগড়দাড়ী ও আলিপুর ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষকে। শহরে আসার অন্য কোনো যাতয়াত মাধ্যম নেই। মানুষ অসুস্থ হলে বা কোথাও আগুন লাগলে অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের সেবাও মেলে না। ৩ বছরে ধরে অপেক্ষা করেও এলাকার মানুষের ভাগ্যে আজও কেন সেতু মেলেনি, সে প্রশ্ন আমরা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে রাখতে চাই।

সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের হদিস নাকি পাচ্ছে না সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ‘এলজিইডি’। তবে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী দাবি করছেন সেতুর ৩০-৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারকে ৬ মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেছেন।

সেতু নির্মাণ কাজে কালক্ষেপণ করার ঘটনা শুধু সাতক্ষীরায় ঘটেছে তা না। দেশে বিভিন্ন এলাকায় সরকারের সেতু বা অবকাঠামো নির্মাণ কাজে এসব অনিয়ম সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। কিছু অসাধু প্রকল্প কর্মকর্তা ও ঠিকাদার মিলে এসব অনিয়ম করে থাকেন। কিন্তু নির্মাণ কাজে বিলম্ব হলে প্রকল্পের খরচ বেড়ে যায়। এতে রাষ্ট্রের টাকা অপচয় হয়। অন্যদিকে জনগণের ভোগান্তিরও শেষ থাকে না।

রইচপুর খালের সেতুর অভাবে সেখানকার হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তাই সেতু নির্মাণ কাজে যেন আর দেরি না করা হয়, এটা আমরাও আশা করব। রইচপুর খালে সেতু নির্মাণ হচ্ছে, সেখানকার মানুষ সাবলিলভাবে যাতায়াত-যোগাযোগ করতে পারছে এটাই আমরা দেখতে চাই।

‘সম্পাদকীয়’ : আরও খবর

» গোবিন্দগঞ্জে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলের অভিযোগ আমলে নিন

» আত্রাই নদীর বালু লুট বন্ধ করুন

» ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মানুষ হত্যা: কঠোর ব্যবস্থা নিন

» অবৈধ ইটভাটা: প্রশাসনের দুর্বলতা ও পরিবেশের সংকট

» ফসলি জমি রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিন

» শেষ না হওয়া সেতু, শেষ না হওয়া ভোগান্তি

» সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে হামলা: আদি ও অকৃত্রিম ফ্যাসিবাদের জঘন্য রূপ

» পাহাড় কেটে কেন পানের বরজ?

» মতপ্রকাশের জন্য গ্রেপ্তার: গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়

» সাহাগোলা রেলওয়ে স্টেশনে জনবল সংকট দূর করুন

» চাঁদপুর সেচ প্রকল্প রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

সম্প্রতি