দেশে নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবারকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে খাদ্য পণ্য বিতরণ করা হয়। সঠিক মাপে এবং যারা প্রকৃত সুবিধাভোগী তাদের মাঝে পণ্য বিতরণের কথা। কিন্তু পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানায় টিসিবির পণ্য বিতরণের ক্ষেত্রে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। সেখানে টিসিবির পণ্য ওজনে কম দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।
শুধু ওজনে পণ্য কম দেয়া হচ্ছে তা নয়, প্রকৃত কার্ডধারীদের পণ্য না দিয়ে দেয়া হচ্ছে ডিলারের পরিচিতজনদের। ফলে পণ্য না পেয়ে বিমর্ষ মুখে ঘরে ফিরছেন অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
অভিযোগ উঠেছে, ডিলার সুবিধাভোগীদের কাছে পণ্য বিতরণের সময় ওজনে ৫ কেজি চালে ৭শ গ্রাম, ১ কেজি চিনিতে ১২০ গ্রাম, ২ কেজি মসুরের ডালে ২শ গ্রাম কম দিয়েছেন। তিনি নিয়মের কোনো তোয়াক্কা না করে তার খেয়াল-খুশিমতো পরিচিতজনদের ও ইউনিয়নের সদস্যদের পণ্য দিচ্ছেন। আর ফ্যামিলি কার্ডধারীরা পণ্য নিতে এলে তার কাছে টিসিবির কোনো পণ্য নেই বলে বিদায় করে দিচ্ছেন।
ইউনিয়নে উপকারভোগী কার্ডধারীর সংখ্যা ২০৩৩ জন। এদের মধ্যে বহু কার্ডধারী সরকারের এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শুধু চেয়ারম্যান ও ইউএনওর সঠিক তদারকির অভাবেÑএমন অভিযোগ করেছেন সুবিধাবঞ্চিত বহু ফ্যামিলি কার্ডধারী।
শুধু যে পঞ্চগড়ে টিসিবির পণ্য বিতরণ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা না। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। গরিবদের প্রাপ্য সুবিধাগুলো দেয়া হয় সচ্ছল ব্যক্তিদের। আর না হয় চাল বা অন্য পণ্য বিতরণে ওজনে কম দেয়া হয়।
ক্ষমতার ছায়াতলে থাকার কারণে বহু সচ্ছল মানুষও সরকারি বহু সুবিধা পায়। ভিজিডির চাল, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও বয়স্ক ভাতার সুবিধা গরিবদের জন্য দিয়েছিল সরকার। কিন্তু এগুলোতে ভাগ বসিয়েছে সচ্ছল লোকেরা।
আমরা বলতে চাই, পঞ্চগড়ে টিসিবির পণ্যে ওজনে কম দেয়ার অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আমলে নিতে হবে। তদন্ত সাপেক্ষে ডিলারের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ফ্যামিলি কার্ডধারীরা যাতে টিসিবির পণ্য পায় তারও ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে সরকার যে উদ্দেশে নিম্নœ আয়ের মানুষদের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে উদ্যোগ নিয়েছে তা ভেস্তে যাবে।