alt

সম্পাদকীয়

অরাজকতা বন্ধ হোক, শান্তি ফিরুক

: মঙ্গলবার, ০৬ আগস্ট ২০২৪

বিক্ষোভ-আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ছিল দেশ। আন্দোলনের শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে। শিক্ষার্থীদের শুরু করা সেই আন্দোলন রুদ্র রূপে আবির্ভূত হল। আন্দোলনে অংশ নিল সর্বস্তরের মানুষ। দাবি এসে ঠেকল এক দফায়- সরকারের পদত্যাগ। আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাসীন সরকার প্রধান পদত্যাগ করলেন, দেশ ছাড়লেন।

গতকাল মানুষের ঢল নেমেছিল ঢাকায়। বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে এই আন্দোলনে সর্বশেষ যে দাবিটি প্রধান হয়ে উঠেছিল, সরকারের পদত্যাগ, সেটা পূরণ হয়েছে। এখন আমরা চাই, সব সংঘাত-সংঘর্ষের অবসান ঘটুক। দেশে শান্তি ফিরুক।

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, ‘আপনারা সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা রাখেন। আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আস্থা রাখেন। আমি সমস্ত দায়দায়িত্ব নিচ্ছি। আপনাদের জান-মাল এবং আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনারা আশাহত হবেন না। ইনশাল্লাহ, আপনাদের যত দাবি আছে, সে দাবিগুলো আমরা পূরণ করব। এবং দেশে একটা শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে নিয়ে আসব।”

আমরা আশা করব, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার এই প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে।

সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছেন, “দয়া করে আর এই ভাংচুর, হত্যা, মারামারি, সংঘর্ষ এগুলো থেকে বিরত হন। মারামারি করে, এই সংঘাতের মাধ্যমে আমরা আর কিছু অ্যাচিভ করতে পারবো না, আর কিছু আমরা পাবো না। সুতরাং দয়া করে আপনারা সমস্ত ধ্বংসযজ্ঞ, সমস্ত অরাজকতা, সমস্ত সংঘর্ষ থেকে বিরত হন।”

দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, সেনাপ্রধানের বক্তব্যের পরও দেশের বিভিন্ন স্থানে অরাজকতা সংঘঠিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় থানা হামলার ঘটনা ঘটেছে। অনেকের বাসায় হামলা হয়েছে, আগুন দেওয়া হয়েছে। লুটপাটের মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাও ঘটেছে। লুঠতরাজ সনাতনী ব্যবস্থারই প্রতিফলন। এখন এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। এ দেশের শান্তিপ্রিয় কোনো মানুষ এর কোনোটাই চায় না।

একটি অন্তবর্তী সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করার কথা বলেছেন সেনাপ্রধান।

আমরা বলতে চাই, দেশে যে ধরনের সরকারই দায়িত্ব নিক না কেন বা এখন যারা দায়িত্বে আছেন তাদেরকে বুঝতে হবে যে, এই আন্দোলনের সূত্রপাত কোনো রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে হয়নি। এবং এর নেতৃত্ব কোনো রাজনৈতিক দল দেয়নি।

এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এবং এর নেতৃত্ব শিক্ষার্থীরাই দিয়েছে। কাজেই তাদের মনের কথাটা বুঝতে হবে, তাদের দাবিগুলো আমলে নিতে হবে, তাদেরকে আস্থায় নিতে হবে। কেবল প্রতিষ্ঠিত বা সনাতনী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা। করা যাবে বলে আমাদের মনে হয় না।

এই শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দাবি উঠেছিল। এবং তারা রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের কথাও বলেছিল। এর অর্ন্তনিহিত অর্থ সংশ্লিষ্টদেরকে অনুধাবন করতে হবে। যতটুক বোঝা যাচ্ছে, কোনো সনাতনী দলের ওপর নতুন প্রজন্ম ও বেশিরভাগ মানুষের আস্থা নেই।

সুতরাং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে আস্থায় নিতে হবে, তাদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা মনে করি, তারাই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় অংশীজন এবং নেতৃত্বটা তারাই দিয়েছে। সনাতনী ব্যবস্থায় দেশের উদ্ভূত সংকটের সমাধান হবে না।

সেনাপ্রধান বলেছেন, সব ঘটনা, সব হত্যাকা-ের বিচার হবে।

আমরাও বলতে চাই, সম্প্রতি দেশে যেসব হত্যাকা- হয়েছে, ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে তার প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হোক। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি মানুষ ন্যায়বিচার পাক। আর এজন্য প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করতে হবে। সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

দেশে শান্তি ফেরাতে হলে সবাইকে বুঝতে হবে, তাদেরও দায়িত্ব আছে। কেউ প্রতিশোধ নেওয়ার পথ ধরলে শান্তি সুদূরপরাহত হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নিলে শান্তির স্বপ্ন অধরা রয়ে যাবে। আইনকে আইনের মতো থাকতে হবে এবং তার মতো চলতে দিতে হবে। মানুষকে ধৈর্য ধরতে হবে, অপেক্ষা করতে হবে। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ক্ষোভ প্রশমন এই সময় অত্যন্ত জরুরি। দায়িত্বশীলদেরকে এই কাজ করতে হবে নিষ্ঠার সঙ্গে।

আমরা আশা করব, প্রতিটি মানুষ যার যার জায়গা থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করবে। তাহলেই হয়তো শান্তির দেখা মিলবে।

কৃষিজমিতে কারখানা: ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

ওরস বন্ধ রাখাই কি একমাত্র সমাধান?

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করুন

নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে গাফিলতি

ফসল রক্ষা বাঁধে অনিয়ম কাম্য নয়

রিওভাইরাস: আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

শুল্ক-কর এখন বাড়ানো কি জরুরি ছিল

নওগাঁর বর্জ্য পরিশোধনাগার প্রসঙ্গে

সড়ক দুর্ঘটনা : বেপরোয়া গতি আর অব্যবস্থাপনার মাশুল

সংরক্ষিত বনের গাছ রক্ষায় উদাসীনতার অভিযোগ আমলে নিন

চালের দাম বাড়ছে: সংকট আরও বাড়ার আগেই ব্যবস্থা নিন

বারইখালী ও বহরবুনিয়ার মানুষের দুর্ভোগ কবে দূর হবে

রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি : সমাধান কোথায়?

সময়ের সমীকরণে বেকারত্বের নতুন চিত্র

বরুড়ায় খালের দুর্দশা

টেকনাফে অপহরণ: স্থানীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ ও সমাধানের প্রয়োজনীয়তা

স্কুল মাঠে মাটি কাটার অভিযোগ

কিশোর গ্যাং : আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতা ও সামাজিক সংকট

বই বিতরণে স্বচ্ছতা প্রয়োজন

পরিবেশ রক্ষায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করুন

হাসপাতালের লোকবল সংকট দূর করুন

প্রাথমিক শিক্ষা : উন্নত জাতি গঠনে অপরিহার্য ভিত্তি

খেলার মাঠে কারখানা : পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের বিপদ

শীতের তীব্রতা : বিপন্ন মানুষ এবং সরকারের কর্তব্য

বনে কেন করাতকল

গণপিটুনির দুঃসহ চিত্র

কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক নিরাপত্তা

নববর্ষে মানবিক ও সমতার বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার

পরিযায়ী পাখি রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

প্রবাসী কর্মীদের স্বাস্থ্য সমস্যা : সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে

অবৈধ ইটভাটার কারণে পরিবেশ ও কৃষির বিপর্যয়

পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন জরুরি

নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়কে ময়লার ভাগাড়

ভরা মৌসুমে বেড়েছে চালের দাম : বাজারে অস্থিরতা, গ্রাহকরা বিপাকে

ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতিতে আগুন : দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা?

সচিবালয়ে আগুন : সুষ্ঠু তদন্ত হোক

tab

সম্পাদকীয়

অরাজকতা বন্ধ হোক, শান্তি ফিরুক

মঙ্গলবার, ০৬ আগস্ট ২০২৪

বিক্ষোভ-আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ছিল দেশ। আন্দোলনের শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে। শিক্ষার্থীদের শুরু করা সেই আন্দোলন রুদ্র রূপে আবির্ভূত হল। আন্দোলনে অংশ নিল সর্বস্তরের মানুষ। দাবি এসে ঠেকল এক দফায়- সরকারের পদত্যাগ। আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাসীন সরকার প্রধান পদত্যাগ করলেন, দেশ ছাড়লেন।

গতকাল মানুষের ঢল নেমেছিল ঢাকায়। বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে এই আন্দোলনে সর্বশেষ যে দাবিটি প্রধান হয়ে উঠেছিল, সরকারের পদত্যাগ, সেটা পূরণ হয়েছে। এখন আমরা চাই, সব সংঘাত-সংঘর্ষের অবসান ঘটুক। দেশে শান্তি ফিরুক।

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, ‘আপনারা সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা রাখেন। আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আস্থা রাখেন। আমি সমস্ত দায়দায়িত্ব নিচ্ছি। আপনাদের জান-মাল এবং আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনারা আশাহত হবেন না। ইনশাল্লাহ, আপনাদের যত দাবি আছে, সে দাবিগুলো আমরা পূরণ করব। এবং দেশে একটা শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে নিয়ে আসব।”

আমরা আশা করব, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার এই প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে।

সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছেন, “দয়া করে আর এই ভাংচুর, হত্যা, মারামারি, সংঘর্ষ এগুলো থেকে বিরত হন। মারামারি করে, এই সংঘাতের মাধ্যমে আমরা আর কিছু অ্যাচিভ করতে পারবো না, আর কিছু আমরা পাবো না। সুতরাং দয়া করে আপনারা সমস্ত ধ্বংসযজ্ঞ, সমস্ত অরাজকতা, সমস্ত সংঘর্ষ থেকে বিরত হন।”

দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, সেনাপ্রধানের বক্তব্যের পরও দেশের বিভিন্ন স্থানে অরাজকতা সংঘঠিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় থানা হামলার ঘটনা ঘটেছে। অনেকের বাসায় হামলা হয়েছে, আগুন দেওয়া হয়েছে। লুটপাটের মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাও ঘটেছে। লুঠতরাজ সনাতনী ব্যবস্থারই প্রতিফলন। এখন এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। এ দেশের শান্তিপ্রিয় কোনো মানুষ এর কোনোটাই চায় না।

একটি অন্তবর্তী সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করার কথা বলেছেন সেনাপ্রধান।

আমরা বলতে চাই, দেশে যে ধরনের সরকারই দায়িত্ব নিক না কেন বা এখন যারা দায়িত্বে আছেন তাদেরকে বুঝতে হবে যে, এই আন্দোলনের সূত্রপাত কোনো রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে হয়নি। এবং এর নেতৃত্ব কোনো রাজনৈতিক দল দেয়নি।

এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এবং এর নেতৃত্ব শিক্ষার্থীরাই দিয়েছে। কাজেই তাদের মনের কথাটা বুঝতে হবে, তাদের দাবিগুলো আমলে নিতে হবে, তাদেরকে আস্থায় নিতে হবে। কেবল প্রতিষ্ঠিত বা সনাতনী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা। করা যাবে বলে আমাদের মনে হয় না।

এই শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দাবি উঠেছিল। এবং তারা রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের কথাও বলেছিল। এর অর্ন্তনিহিত অর্থ সংশ্লিষ্টদেরকে অনুধাবন করতে হবে। যতটুক বোঝা যাচ্ছে, কোনো সনাতনী দলের ওপর নতুন প্রজন্ম ও বেশিরভাগ মানুষের আস্থা নেই।

সুতরাং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে আস্থায় নিতে হবে, তাদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা মনে করি, তারাই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় অংশীজন এবং নেতৃত্বটা তারাই দিয়েছে। সনাতনী ব্যবস্থায় দেশের উদ্ভূত সংকটের সমাধান হবে না।

সেনাপ্রধান বলেছেন, সব ঘটনা, সব হত্যাকা-ের বিচার হবে।

আমরাও বলতে চাই, সম্প্রতি দেশে যেসব হত্যাকা- হয়েছে, ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে তার প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হোক। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি মানুষ ন্যায়বিচার পাক। আর এজন্য প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করতে হবে। সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

দেশে শান্তি ফেরাতে হলে সবাইকে বুঝতে হবে, তাদেরও দায়িত্ব আছে। কেউ প্রতিশোধ নেওয়ার পথ ধরলে শান্তি সুদূরপরাহত হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নিলে শান্তির স্বপ্ন অধরা রয়ে যাবে। আইনকে আইনের মতো থাকতে হবে এবং তার মতো চলতে দিতে হবে। মানুষকে ধৈর্য ধরতে হবে, অপেক্ষা করতে হবে। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ক্ষোভ প্রশমন এই সময় অত্যন্ত জরুরি। দায়িত্বশীলদেরকে এই কাজ করতে হবে নিষ্ঠার সঙ্গে।

আমরা আশা করব, প্রতিটি মানুষ যার যার জায়গা থেকে দায়িত্বশীল আচরণ করবে। তাহলেই হয়তো শান্তির দেখা মিলবে।

back to top