alt

সম্পাদকীয়

সিসা দূষণের ভয়াবহতার মুখে দেশের শিশুরা

: শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪

পরিবেশ দূষণের একটি অতি বিপজ্জনক ও উপেক্ষিত দিক হলো ভারী ধাতুর, বিশেষত সিসার অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সিসা দূষণের ফলে বাংলাদেশের শিশুদের সাড়ে তিন কোটিরও বেশি শিশুর রক্তে বিপজ্জনক মাত্রায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য আন্তঃর্জাতিক গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি সিসা উপস্থিতি শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ঢাকায় ৮০ শতাংশ এবং অন্যান্য চার জেলায় ৪০ শতাংশ শিশুর রক্তে বিপজ্জনক মাত্রায় সিসার উপস্থিতি মিলেছে। এটি একটি ভয়ানক চিত্র, যা দেশের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করে।

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের কারণে দেশে যেসব জায়গায় সিসা, আর্সেনিক, পারদ ও ক্যাডমিয়ামের মতো ভারী ধাতু পাওয়া যাচ্ছে, তার মধ্যে বাতাস, পানি, মাটি, খেলনা, খাবার এবং দৈনন্দিন ব্যবহার্য সামগ্রীও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের এ ধরনের দূষণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। ভারী ধাতুর প্রভাব শিশুদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের অপূরণীয় ক্ষতি করতে পারে। সিসা দূষণের শিকার শিশুরা ভবিষ্যতে শারীরিক ও মানসিক বিকাশে পিছিয়ে পড়তে পারে। এছাড়া গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এই দূষণ গর্ভস্থ শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছে, সিসা দূষণের উৎসগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং এই দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এখন জরুরি। আন্তঃর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষে ইউনিসেফের সঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় যে যৌথ কর্মশালার আয়োজন করেছে, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু শুধু এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না; এই সমস্যা মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপও প্রয়োজন। সরকারের উচিত সিসা দূষণ প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। এছাড়া সব ধরনের পণ্যের সিসামুক্ততা পরীক্ষা করা উচিত, বিশেষ করে শিশুদের খেলনা, রান্নাসামগ্রী, রং এবং খাদ্যসামগ্রীর ক্ষেত্রে এটা অত্যন্ত জরুরি।

এখনই ভারী ধাতুর দূষণ মোকাবিলায় সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের সুরক্ষার জন্য সিসামুক্ত ও স্বাস্থ্যবান্ধব একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য শিল্প খাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষত, যারা ভারী ধাতুর ব্যবহার বা সেগুলোর অবশিষ্টাংশ উন্মুক্তভাবে ফেলে পরিবেশ দূষণ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকা উচিত। এর পাশাপাশি বেসরকারি খাত, সামাজিক সংগঠন এবং স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় জনসচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। কারণ সচেতন জনগণই দূষণ প্রতিরোধে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।

বীজ আলুর বাড়তি দামে কৃষকের হতাশা

টেকসই স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক সংকট দূর করা জরুরি

সাময়িকী কবিতা

ফলে রাসায়নিক ব্যবহার : জনস্বাস্থ্যের প্রতি হুমকি

নারায়ণগঞ্জে লালন মেলা আয়োজনে বাধা, কেন?

গৌরীপুরের রেলস্টেশনের বেহাল দশা : পরিকল্পনার অভাবে হারাচ্ছে সম্ভাবনা

বোরো চাষে জলাবদ্ধতার সংকট : খুলনাঞ্চলে কৃষির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

অযত্ন-অবহেলায় বেহাল রায়পুর উপজেলা প্রশাসন শিশুপার্ক

আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় অবহেলা কাম্য নয়

জলমহালে লোনা পানি, কৃষকের অপূরণীয় ক্ষতি

খাদ্যগুদামে অনিয়ম কাম্য নয়

বেআইনিভাবে নদীর মাটি কাটা বন্ধ করুন

শহরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা : টেকসই সমাধান কী

সেতু নির্মাণে অবহেলা কাম্য নয়

পোশাক শ্রমিকদেরকে কেনো বারবার পথে নামতে হচ্ছে

চট্টগ্রাম নগরীর পয়োনিষ্কাশনের পথে বাধা দূর করুন

নদীভাঙনের শিকার মানুষের পাশে দাঁড়ান

বদরখালীতে প্যারাবন নিধন: প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

প্রশ্নবিদ্ধ ইঁদুর নিধন অভিযান

নদী খননে সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকতে হবে

ভালুকার বনাঞ্চল রক্ষায় জরুরি ব্যবস্থা প্রয়োজন

অটোরিকশা ও সিএনজির দখলে আঞ্চলিক মহাসড়ক

বলুহর বাঁওড় নিয়ে মৎস্যজীবীদের অভিযোগ আমলে নিন

যুক্তরাষ্ট্রে চালকের আসনে ট্রাম্প

জলাবদ্ধতা থেকে ডুমুরিয়াবাসীকে উদ্ধার করুন

বীজ ও সার নিয়ে আলুচাষিদের উদ্বেগ দূর করুন

কারিগরি শিক্ষায় নজর দিন

নাটক বন্ধে জোরজবরদস্তি : এই অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে

কৃষিপণ্য পরিবহনে রেল ব্যবহারের সুবিধা আরও বাড়াতে হবে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি কি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণের বাইরে ¬চলে যাচ্ছে

পাখির বাসস্থান সংরক্ষণে চাই সামাজিক উদ্যোগ

আবারও রক্ত ঝরল পাহাড়ে

খেলনায় সিসা : শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি দূর করতে সম্মিলিত প্রয়াস চালাতে হবে

আইন হাতে তুলে নেওয়ার অপসংস্কৃতির অবসান হোক

বর্জ্যে বিপন্ন করতোয়া

নারী ফুটবলের মুকুটে আরেকটি পালক

tab

সম্পাদকীয়

সিসা দূষণের ভয়াবহতার মুখে দেশের শিশুরা

শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪

পরিবেশ দূষণের একটি অতি বিপজ্জনক ও উপেক্ষিত দিক হলো ভারী ধাতুর, বিশেষত সিসার অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সিসা দূষণের ফলে বাংলাদেশের শিশুদের সাড়ে তিন কোটিরও বেশি শিশুর রক্তে বিপজ্জনক মাত্রায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য আন্তঃর্জাতিক গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি সিসা উপস্থিতি শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ঢাকায় ৮০ শতাংশ এবং অন্যান্য চার জেলায় ৪০ শতাংশ শিশুর রক্তে বিপজ্জনক মাত্রায় সিসার উপস্থিতি মিলেছে। এটি একটি ভয়ানক চিত্র, যা দেশের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করে।

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের কারণে দেশে যেসব জায়গায় সিসা, আর্সেনিক, পারদ ও ক্যাডমিয়ামের মতো ভারী ধাতু পাওয়া যাচ্ছে, তার মধ্যে বাতাস, পানি, মাটি, খেলনা, খাবার এবং দৈনন্দিন ব্যবহার্য সামগ্রীও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের এ ধরনের দূষণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। ভারী ধাতুর প্রভাব শিশুদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের অপূরণীয় ক্ষতি করতে পারে। সিসা দূষণের শিকার শিশুরা ভবিষ্যতে শারীরিক ও মানসিক বিকাশে পিছিয়ে পড়তে পারে। এছাড়া গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এই দূষণ গর্ভস্থ শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছে, সিসা দূষণের উৎসগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং এই দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এখন জরুরি। আন্তঃর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষে ইউনিসেফের সঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় যে যৌথ কর্মশালার আয়োজন করেছে, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু শুধু এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না; এই সমস্যা মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপও প্রয়োজন। সরকারের উচিত সিসা দূষণ প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। এছাড়া সব ধরনের পণ্যের সিসামুক্ততা পরীক্ষা করা উচিত, বিশেষ করে শিশুদের খেলনা, রান্নাসামগ্রী, রং এবং খাদ্যসামগ্রীর ক্ষেত্রে এটা অত্যন্ত জরুরি।

এখনই ভারী ধাতুর দূষণ মোকাবিলায় সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের সুরক্ষার জন্য সিসামুক্ত ও স্বাস্থ্যবান্ধব একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য শিল্প খাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষত, যারা ভারী ধাতুর ব্যবহার বা সেগুলোর অবশিষ্টাংশ উন্মুক্তভাবে ফেলে পরিবেশ দূষণ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকা উচিত। এর পাশাপাশি বেসরকারি খাত, সামাজিক সংগঠন এবং স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় জনসচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। কারণ সচেতন জনগণই দূষণ প্রতিরোধে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।

back to top