alt

opinion » editorial

সচেতনতামূলক পদক্ষেপে বাল্যবিবাহ নিরোধ : আশা এবং করণীয়

: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বাল্যবিবাহের উচ্চহারের কারণে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রায়ই বাধাগ্রস্ত হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেয়ার ফলে বাল্যবিবাহ ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) পরিচালিত এ গবেষণায় টিপিং পয়েন্ট কর্মসূচির কার্যকারিতা তুলে ধরা হয়েছে। এ গবেষণায় বোঝা যায় যে, বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক কুসংস্কার প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট এবং দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

টিপিং পয়েন্ট কর্মসূচি মূলত কিশোর-কিশোরী এবং তাদের অভিভাবকদের সচেতন করার মাধ্যমে সামাজিক প্রবণতা পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ৫১টি গ্রামে এই কর্মসূচি কার্যকরীভাবে পরিচালিত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কর্মসূচির অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেছে, তাদের বাল্যবিবাহের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। বিশেষত ৩৬ থেকে ৪০টি অধিবেশনে অংশ নেয়া কিশোরীদের মধ্যে ঝুঁকি ৪৯ থেকে ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।

এ কর্মসূচির কার্যক্রমের মধ্যে ছিল অধিকারভিত্তিক প্রশিক্ষণ, দলভিত্তিক সংলাপ, কিশোরীদের সংগঠিত করা এবং সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করা। এসব উদ্যোগ শুধু বাল্যবিবাহ প্রতিরোধেই নয়, বরং কিশোরীদের ক্ষমতায়ন এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতেও সহায়ক হয়েছে।

গবেষণা থেকে জানা যায়, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে টিপিং পয়েন্ট কার্যক্রম পুরোপুরি পরিকল্পনামাফিক বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তাই এর সম্ভাব্য ইতিবাচক প্রভাব পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়নি। একই সঙ্গে এই ধরনের উদ্যোগের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মূল্যায়ন এবং এর ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি।

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে টেলিভিশন প্রোগ্রাম এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। যদিও টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলোর প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ এবং বিনোদনের অভাবের কারণে দর্শকদের আগ্রহ কম ছিল, তবুও বিনোদনমূলক শিক্ষার মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর সম্ভাবনা অটুট। এক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।

বাল্যবিবাহের উচ্চহার অনেকাংশে সামাজিক প্রবণতার ফল। পরিবারগুলো প্রায়ই অন্যের সিদ্ধান্ত দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই চক্র ভাঙার জন্য সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি কঠোর আইন প্রয়োগ এবং কিশোর-কিশোরীদের ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।

সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব নয়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, যা সঠিক দিকনির্দেশনা এবং টেকসই উদ্যোগের মাধ্যমে সম্ভব। টিপিং পয়েন্ট কর্মসূচি আমাদের একটি দৃষ্টান্ত দিয়েছে, তবে আরও অনেক দূর এগোতে হবে।

বাংলাদেশের মতো দেশে বাল্যবিবাহের মতো কুসংস্কার প্রতিরোধে সচেতনতা এবং ক্ষমতায়নের কার্যক্রম অপরিহার্য। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল আমাদের আশান্বিত করে। তবে এই উদ্যোগগুলোর ধারাবাহিকতা এবং সম্প্রসারণ নিশ্চিত করতে আমাদের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

বয়স্ক ভাতা পেতে আর কত অপেক্ষা

ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

tab

opinion » editorial

সচেতনতামূলক পদক্ষেপে বাল্যবিবাহ নিরোধ : আশা এবং করণীয়

শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বাল্যবিবাহের উচ্চহারের কারণে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রায়ই বাধাগ্রস্ত হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেয়ার ফলে বাল্যবিবাহ ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) পরিচালিত এ গবেষণায় টিপিং পয়েন্ট কর্মসূচির কার্যকারিতা তুলে ধরা হয়েছে। এ গবেষণায় বোঝা যায় যে, বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক কুসংস্কার প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট এবং দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

টিপিং পয়েন্ট কর্মসূচি মূলত কিশোর-কিশোরী এবং তাদের অভিভাবকদের সচেতন করার মাধ্যমে সামাজিক প্রবণতা পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করে। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ৫১টি গ্রামে এই কর্মসূচি কার্যকরীভাবে পরিচালিত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কর্মসূচির অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেছে, তাদের বাল্যবিবাহের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। বিশেষত ৩৬ থেকে ৪০টি অধিবেশনে অংশ নেয়া কিশোরীদের মধ্যে ঝুঁকি ৪৯ থেকে ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।

এ কর্মসূচির কার্যক্রমের মধ্যে ছিল অধিকারভিত্তিক প্রশিক্ষণ, দলভিত্তিক সংলাপ, কিশোরীদের সংগঠিত করা এবং সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করা। এসব উদ্যোগ শুধু বাল্যবিবাহ প্রতিরোধেই নয়, বরং কিশোরীদের ক্ষমতায়ন এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতেও সহায়ক হয়েছে।

গবেষণা থেকে জানা যায়, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে টিপিং পয়েন্ট কার্যক্রম পুরোপুরি পরিকল্পনামাফিক বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তাই এর সম্ভাব্য ইতিবাচক প্রভাব পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়নি। একই সঙ্গে এই ধরনের উদ্যোগের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মূল্যায়ন এবং এর ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি।

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে টেলিভিশন প্রোগ্রাম এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। যদিও টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলোর প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ এবং বিনোদনের অভাবের কারণে দর্শকদের আগ্রহ কম ছিল, তবুও বিনোদনমূলক শিক্ষার মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর সম্ভাবনা অটুট। এক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।

বাল্যবিবাহের উচ্চহার অনেকাংশে সামাজিক প্রবণতার ফল। পরিবারগুলো প্রায়ই অন্যের সিদ্ধান্ত দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই চক্র ভাঙার জন্য সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি কঠোর আইন প্রয়োগ এবং কিশোর-কিশোরীদের ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।

সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব নয়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, যা সঠিক দিকনির্দেশনা এবং টেকসই উদ্যোগের মাধ্যমে সম্ভব। টিপিং পয়েন্ট কর্মসূচি আমাদের একটি দৃষ্টান্ত দিয়েছে, তবে আরও অনেক দূর এগোতে হবে।

বাংলাদেশের মতো দেশে বাল্যবিবাহের মতো কুসংস্কার প্রতিরোধে সচেতনতা এবং ক্ষমতায়নের কার্যক্রম অপরিহার্য। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল আমাদের আশান্বিত করে। তবে এই উদ্যোগগুলোর ধারাবাহিকতা এবং সম্প্রসারণ নিশ্চিত করতে আমাদের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

back to top