বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট : কবে মিলবে স্বস্তি?

দেশের বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট কাটেনি। রাজধানীর খুচরা দোকানগুলোতে এক-দুটি ব্র্যান্ড ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানির তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতি সাধারণ ক্রেতাদের ভোগান্তি বাড়িয়েছে। যদিও ভোজ্যতেলের দাম প্রতি লিটারে আট টাকা বাড়ানো হয়েছে, তবুও সরবরাহ ঠিক হয়নি।

সয়াবিন তেলের মতো অত্যাবশ্যক পণ্যের সংকট সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলেছে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ক্রেতারা তেল কিনতে গিয়ে হতাশ হচ্ছেন। কিছু দোকানে একেবারেই তেল নেই। অন্যদিকে তেলের অভাবের সুযোগে কিছু জায়গায় খোলা তেল চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। রংপুরের কিছু এলাকায় প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩৮ টাকা বেশি।

সরবরাহ সংকটের কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানিকারক কোম্পানিগুলো সরবরাহে কৌশলী ভূমিকা নিচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে তেলের দাম বাড়ানো হলেও খুচরা বাজারে নতুন দাম অনুযায়ী সরবরাহ এখনো শুরু হয়নি। ডিলারদের কাছ থেকে খুচরা বিক্রেতারা যথেষ্ট তেল পাচ্ছেন না। ফলে সরবরাহ চেইনে অসঙ্গতি তৈরি হয়েছে।

সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক করতে এবং ক্রেতাদের জন্য স্বস্তি ফেরাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোকে দ্রুত নতুন দামের তেল বাজারে সরবরাহ করতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বাজারের সরবরাহ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অসাধু মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ডিলারদের সঙ্গে খুচরা বিক্রেতাদের সরাসরি যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে সরবরাহ চেইনে কোনো বিঘœ না ঘটে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ও সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে জনজীবনে হতাশা আরও বাড়বে। চালের বাজারে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দেশে আমনের ভরা মৌসুম চললেও চালের দাম কমার পরিবর্তে বাড়ছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে গত এক সপ্তাহে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। সরু চালের দাম কেজিতে বেড়েছে চার থেকে আট টাকা।

চালের দাম বৃদ্ধি নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষের জন্য এটি বড় সংকট। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদেরও বাজারে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এখনই সতর্ক হতে হবে।

সরকার, মিল মালিক ও ব্যবসায়ীদের সমন্বিত উদ্যোগ এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান দিতে পারে। চালের দাম স্থিতিশীল থাকলে তা শুধু ক্রেতাদের স্বস্তি দেবে না, বরং দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকেও নিশ্চিত করবে।

সম্প্রতি