রাজধানী আদাবর ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাংয়ের তা-ব একটি গভীর সামাজিক সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। আদাবরের মেহেদীবাগে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকাবাসীর ওপর সংঘবদ্ধ হামলা এবং কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকায় অস্ত্রের মহড়া ও ককটেল বিস্ফোরণ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির করুণ দশার উদাহরণ। এসব ঘটনা কেবল শারীরিক আঘাতেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি সমাজের শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, এবং নৈতিক কাঠামোকে আঘাত করছে।
কিশোর গ্যাংয়ের প্রসারকে রাজনৈতিক মদদপ্রাপ্তির একটি কুৎসিত দৃষ্টান্ত বলা যেতে পারে। আদাবরের ঘটনার পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও তাদের অনুগামীদের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে, কুমিল্লায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা অতীতে আওয়ামী লীগের একাংশের সহযোগিতা পেয়েছে, আর এখন তারা বিএনপির সঙ্গে মিশে অপরাধ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সহযোগিতা ও আশ্রয়ে অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সমাজে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে এবং সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
কিশোর গ্যাং দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা হতাশাজনক। আদাবর ও কুমিল্লার ঘটনায় পুলিশের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং গ্যাং দমনে বিশেষ অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেয়া হলেও এসব উদ্যোগের কার্যকারিতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। পুলিশের এই ব্যর্থতা শুধু বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করছে না, বরং জনসাধারণের আস্থা হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
কিশোর গ্যাংয়ের উত্থানের কারণগুলো চিহ্নিত করা জরুরি। পারিবারিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করে সমস্যার শিকড় নির্ধারণ করতে হবে। কিশোরদের সঠিক পথনির্দেশনা দিতে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অপরিহার্য।
কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া অপরিহার্য। আইন প্রয়োগে কঠোরতার বিকল্প নেই। বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধীদের কোনো ধরনের রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া দেয়া হলে তা বন্ধ করতে হবে। দলীয় পরিচয় বিবেচনা না করে অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে।
যারা অপরাধ থেকে সরে আসতে চায় তাদের জন্য পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরি করা জরুরি। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, কাউন্সেলিং সেবা এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সমাজে পুনঃস্থাপন করা যেতে পারে।
কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত একটি বহুমুখী সমস্যা। এটি শুধু আইনশৃঙ্খলার সংকট নয়; এটি আমাদের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়েরও প্রতিফলন। সমস্যার সমাধানে একটি সমন্বিত, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। পরিবার, সমাজ, রাজনীতি এবং প্রশাসনের সম্মিলিত উদ্যোগই পারে কিশোরদের অপরাধের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে।
সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫
রাজধানী আদাবর ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাংয়ের তা-ব একটি গভীর সামাজিক সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। আদাবরের মেহেদীবাগে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকাবাসীর ওপর সংঘবদ্ধ হামলা এবং কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকায় অস্ত্রের মহড়া ও ককটেল বিস্ফোরণ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির করুণ দশার উদাহরণ। এসব ঘটনা কেবল শারীরিক আঘাতেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি সমাজের শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, এবং নৈতিক কাঠামোকে আঘাত করছে।
কিশোর গ্যাংয়ের প্রসারকে রাজনৈতিক মদদপ্রাপ্তির একটি কুৎসিত দৃষ্টান্ত বলা যেতে পারে। আদাবরের ঘটনার পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও তাদের অনুগামীদের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে, কুমিল্লায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা অতীতে আওয়ামী লীগের একাংশের সহযোগিতা পেয়েছে, আর এখন তারা বিএনপির সঙ্গে মিশে অপরাধ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের সহযোগিতা ও আশ্রয়ে অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সমাজে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে এবং সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
কিশোর গ্যাং দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা হতাশাজনক। আদাবর ও কুমিল্লার ঘটনায় পুলিশের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, অপরাধীদের গ্রেপ্তার এবং গ্যাং দমনে বিশেষ অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেয়া হলেও এসব উদ্যোগের কার্যকারিতা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। পুলিশের এই ব্যর্থতা শুধু বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করছে না, বরং জনসাধারণের আস্থা হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
কিশোর গ্যাংয়ের উত্থানের কারণগুলো চিহ্নিত করা জরুরি। পারিবারিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করে সমস্যার শিকড় নির্ধারণ করতে হবে। কিশোরদের সঠিক পথনির্দেশনা দিতে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অপরিহার্য।
কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া অপরিহার্য। আইন প্রয়োগে কঠোরতার বিকল্প নেই। বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। অপরাধীদের কোনো ধরনের রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া দেয়া হলে তা বন্ধ করতে হবে। দলীয় পরিচয় বিবেচনা না করে অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে।
যারা অপরাধ থেকে সরে আসতে চায় তাদের জন্য পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরি করা জরুরি। মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, কাউন্সেলিং সেবা এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের সমাজে পুনঃস্থাপন করা যেতে পারে।
কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত একটি বহুমুখী সমস্যা। এটি শুধু আইনশৃঙ্খলার সংকট নয়; এটি আমাদের সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়েরও প্রতিফলন। সমস্যার সমাধানে একটি সমন্বিত, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। পরিবার, সমাজ, রাজনীতি এবং প্রশাসনের সম্মিলিত উদ্যোগই পারে কিশোরদের অপরাধের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে।