alt

সম্পাদকীয়

হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে দেরি কেন

: সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

নেত্রকোণার হাওরাঞ্চল মূলত বোরো ধানের ওপর নির্ভরশীল। প্রতি বছর আগাম বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে হাওরে ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু চলতি বছর বাঁধ নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শুরু না হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

চলতি বছর ১৯১টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের মাধ্যমে ১৪৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে পিআইসি গঠন প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ায় অনেক জায়গায় কাজ যথাসময়ে শুরু করা যায়নি। আবার বেশ কিছু ক্ষেত্রে পিআইসি সদস্যদের প্রভাবে বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলনের কারণে বাঁধগুলো এখন হুমকির মুখে। এতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধেও টিকে থাকার নিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরীসহ নেত্রকোণার বিভিন্ন হাওর এলাকার কৃষকরা ফসল রক্ষায় বাঁধের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু চলতি বছরের ধীরগতির কাজ এবং পূর্ববর্তী কয়েক বছরের অনিয়ম তাদের শঙ্কিত করেছে। বাঁধের কাজ শেষ না হলে কিংবা মাটির গর্তগুলো ভরাট না হলে আগাম বন্যায় ধানসহ অন্যান্য ফসল হানির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষক মোর্শেদ আলমের মতে, বাঁধের গর্তগুলো দ্রুত ভরাট না করলে পুরো জেলার ফসল ঝুঁকির মুখে পড়বে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং জেলা প্রশাসন অবশ্য বাঁধ নির্মাণকাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানাচ্ছে। তাদের দাবি, কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে। তবে এই আশ্বাস কৃষকদের মন থেকে শঙ্কা দূর করতে পারছে না। কারণ, গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, অনিয়ম এবং অবহেলার কারণে অনেক বাঁধই যথাযথভাবে নির্মাণ করা হয়নি।

হাওরাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি সুরক্ষিত রাখতে বাঁধ নির্মাণে সময়ানুবর্তিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলন বন্ধ করার জন্য কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। গর্তগুলো দ্রুত ভরাটের পাশাপাশি বাঁধের টেকসই নির্মাণে মানসম্মত উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রকৃত কৃষকদের পিআইসিতে সম্পৃক্ত করা এবং তাদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া।

নেত্রকোণার হাওরাঞ্চলের কৃষকদের উদ্বেগ দূর করতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। সময়মতো এবং সঠিকভাবে বাঁধ নির্মাণ না হলে কৃষকদের পাশাপাশি জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই এ কাজকে কেবল উন্নয়ন প্রকল্প নয়, বরং একটি কৃষি ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করা জরুরি।

কুষ্ঠ রোগ : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

জনবল সংকটে অচল আইসিইউ: জনস্বাস্থ্যের করুণ চিত্র

ঢাবি ও অধিভুক্ত সাত কলেজ : সমঝোতার পথেই সমাধান

নওগাঁয় মেনিনজাইটিস টিকা সংকট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিন

জলবায়ু সংকট : শিশুদের শিক্ষা জীবনের জন্য বড় হুমকি

সয়াবিন তেলের সংকট : বাজার ব্যবস্থার দুর্বলতার প্রতিচ্ছবি

ভালুকার খীরু নদীর দূষণ বন্ধ করুন

নির্ধারিত মূল্যে ধান সংগ্রহ করা যাচ্ছে না কেন

লালপুরে ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা

শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন

আমতলীর ভ্যাকসিন সংকট দূর করুন

অতিরিক্ত সেচ খরচ: কৃষকের জীবনযাত্রায় বোঝা

আমতলী পৌরসভায় সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলুন

অরক্ষিত রেলক্রসিং : সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি

সুন্দরবনে হরিণ শিকার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

পাহাড় রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণে ‘টম অ্যান্ড জেরি খেলা’র অবসান ঘটুক

শিক্ষার্থী আত্মহত্যার উদ্বেগজনক চিত্র

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি : শান্তির চেষ্টা কতটা সফল হবে?

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন সংস্কার করুন

বনাঞ্চলের ধ্বংসের দায় কার

নির্মাণ কাজের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত

খাল-বিল দখল : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

ইটভাটার দৌরাত্ম্যের লাগাম টেনে ধরতে হবে

আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা : গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী

বোয়ালখালী রেললাইন বাজার : জীবন ও নিরাপত্তার চরম সংকট

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুর্নীতি

আঠারোবাড়ী হাওরের সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

পাঠ্যবই বিতরণে বিলম্ব : শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আঘাত

কৃষিজমিতে কারখানা: ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

ওরস বন্ধ রাখাই কি একমাত্র সমাধান?

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা করুন

নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে গাফিলতি

ফসল রক্ষা বাঁধে অনিয়ম কাম্য নয়

রিওভাইরাস: আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

শুল্ক-কর এখন বাড়ানো কি জরুরি ছিল

নওগাঁর বর্জ্য পরিশোধনাগার প্রসঙ্গে

tab

সম্পাদকীয়

হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে দেরি কেন

সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

নেত্রকোণার হাওরাঞ্চল মূলত বোরো ধানের ওপর নির্ভরশীল। প্রতি বছর আগাম বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে হাওরে ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু চলতি বছর বাঁধ নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শুরু না হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

চলতি বছর ১৯১টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের মাধ্যমে ১৪৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে পিআইসি গঠন প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ায় অনেক জায়গায় কাজ যথাসময়ে শুরু করা যায়নি। আবার বেশ কিছু ক্ষেত্রে পিআইসি সদস্যদের প্রভাবে বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলনের কারণে বাঁধগুলো এখন হুমকির মুখে। এতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধেও টিকে থাকার নিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরীসহ নেত্রকোণার বিভিন্ন হাওর এলাকার কৃষকরা ফসল রক্ষায় বাঁধের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু চলতি বছরের ধীরগতির কাজ এবং পূর্ববর্তী কয়েক বছরের অনিয়ম তাদের শঙ্কিত করেছে। বাঁধের কাজ শেষ না হলে কিংবা মাটির গর্তগুলো ভরাট না হলে আগাম বন্যায় ধানসহ অন্যান্য ফসল হানির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষক মোর্শেদ আলমের মতে, বাঁধের গর্তগুলো দ্রুত ভরাট না করলে পুরো জেলার ফসল ঝুঁকির মুখে পড়বে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং জেলা প্রশাসন অবশ্য বাঁধ নির্মাণকাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানাচ্ছে। তাদের দাবি, কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে। তবে এই আশ্বাস কৃষকদের মন থেকে শঙ্কা দূর করতে পারছে না। কারণ, গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, অনিয়ম এবং অবহেলার কারণে অনেক বাঁধই যথাযথভাবে নির্মাণ করা হয়নি।

হাওরাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি সুরক্ষিত রাখতে বাঁধ নির্মাণে সময়ানুবর্তিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলন বন্ধ করার জন্য কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। গর্তগুলো দ্রুত ভরাটের পাশাপাশি বাঁধের টেকসই নির্মাণে মানসম্মত উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রকৃত কৃষকদের পিআইসিতে সম্পৃক্ত করা এবং তাদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া।

নেত্রকোণার হাওরাঞ্চলের কৃষকদের উদ্বেগ দূর করতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। সময়মতো এবং সঠিকভাবে বাঁধ নির্মাণ না হলে কৃষকদের পাশাপাশি জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই এ কাজকে কেবল উন্নয়ন প্রকল্প নয়, বরং একটি কৃষি ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করা জরুরি।

back to top