নেত্রকোণার হাওরাঞ্চল মূলত বোরো ধানের ওপর নির্ভরশীল। প্রতি বছর আগাম বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে হাওরে ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু চলতি বছর বাঁধ নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শুরু না হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
চলতি বছর ১৯১টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের মাধ্যমে ১৪৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে পিআইসি গঠন প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ায় অনেক জায়গায় কাজ যথাসময়ে শুরু করা যায়নি। আবার বেশ কিছু ক্ষেত্রে পিআইসি সদস্যদের প্রভাবে বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলনের কারণে বাঁধগুলো এখন হুমকির মুখে। এতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধেও টিকে থাকার নিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরীসহ নেত্রকোণার বিভিন্ন হাওর এলাকার কৃষকরা ফসল রক্ষায় বাঁধের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু চলতি বছরের ধীরগতির কাজ এবং পূর্ববর্তী কয়েক বছরের অনিয়ম তাদের শঙ্কিত করেছে। বাঁধের কাজ শেষ না হলে কিংবা মাটির গর্তগুলো ভরাট না হলে আগাম বন্যায় ধানসহ অন্যান্য ফসল হানির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষক মোর্শেদ আলমের মতে, বাঁধের গর্তগুলো দ্রুত ভরাট না করলে পুরো জেলার ফসল ঝুঁকির মুখে পড়বে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং জেলা প্রশাসন অবশ্য বাঁধ নির্মাণকাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানাচ্ছে। তাদের দাবি, কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে। তবে এই আশ্বাস কৃষকদের মন থেকে শঙ্কা দূর করতে পারছে না। কারণ, গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, অনিয়ম এবং অবহেলার কারণে অনেক বাঁধই যথাযথভাবে নির্মাণ করা হয়নি।
হাওরাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি সুরক্ষিত রাখতে বাঁধ নির্মাণে সময়ানুবর্তিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলন বন্ধ করার জন্য কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। গর্তগুলো দ্রুত ভরাটের পাশাপাশি বাঁধের টেকসই নির্মাণে মানসম্মত উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রকৃত কৃষকদের পিআইসিতে সম্পৃক্ত করা এবং তাদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া।
নেত্রকোণার হাওরাঞ্চলের কৃষকদের উদ্বেগ দূর করতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। সময়মতো এবং সঠিকভাবে বাঁধ নির্মাণ না হলে কৃষকদের পাশাপাশি জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই এ কাজকে কেবল উন্নয়ন প্রকল্প নয়, বরং একটি কৃষি ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করা জরুরি।
সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
নেত্রকোণার হাওরাঞ্চল মূলত বোরো ধানের ওপর নির্ভরশীল। প্রতি বছর আগাম বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে হাওরে ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু চলতি বছর বাঁধ নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শুরু না হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
চলতি বছর ১৯১টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের মাধ্যমে ১৪৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে পিআইসি গঠন প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ায় অনেক জায়গায় কাজ যথাসময়ে শুরু করা যায়নি। আবার বেশ কিছু ক্ষেত্রে পিআইসি সদস্যদের প্রভাবে বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলনের কারণে বাঁধগুলো এখন হুমকির মুখে। এতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধেও টিকে থাকার নিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরীসহ নেত্রকোণার বিভিন্ন হাওর এলাকার কৃষকরা ফসল রক্ষায় বাঁধের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু চলতি বছরের ধীরগতির কাজ এবং পূর্ববর্তী কয়েক বছরের অনিয়ম তাদের শঙ্কিত করেছে। বাঁধের কাজ শেষ না হলে কিংবা মাটির গর্তগুলো ভরাট না হলে আগাম বন্যায় ধানসহ অন্যান্য ফসল হানির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষক মোর্শেদ আলমের মতে, বাঁধের গর্তগুলো দ্রুত ভরাট না করলে পুরো জেলার ফসল ঝুঁকির মুখে পড়বে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং জেলা প্রশাসন অবশ্য বাঁধ নির্মাণকাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানাচ্ছে। তাদের দাবি, কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হবে। তবে এই আশ্বাস কৃষকদের মন থেকে শঙ্কা দূর করতে পারছে না। কারণ, গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, অনিয়ম এবং অবহেলার কারণে অনেক বাঁধই যথাযথভাবে নির্মাণ করা হয়নি।
হাওরাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি সুরক্ষিত রাখতে বাঁধ নির্মাণে সময়ানুবর্তিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। বাঁধের কাছ থেকে মাটি উত্তোলন বন্ধ করার জন্য কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। গর্তগুলো দ্রুত ভরাটের পাশাপাশি বাঁধের টেকসই নির্মাণে মানসম্মত উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রকৃত কৃষকদের পিআইসিতে সম্পৃক্ত করা এবং তাদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া।
নেত্রকোণার হাওরাঞ্চলের কৃষকদের উদ্বেগ দূর করতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। সময়মতো এবং সঠিকভাবে বাঁধ নির্মাণ না হলে কৃষকদের পাশাপাশি জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে। তাই এ কাজকে কেবল উন্নয়ন প্রকল্প নয়, বরং একটি কৃষি ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করা জরুরি।