নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগারের বেহাল অবস্থা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। অব্যবস্থাপনা, অর্থ সংকট ও দায়িত্বশীলদের অবহেলার কারণে প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বিশেষ করে কিশোরী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা হাইজেনিক কর্নার না থাকায় সমস্যাটি আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।
সংবাদ-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অধিকাংশ বিদ্যালয়ের শৌচাগার ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নষ্ট হয়ে থাকা পানির পাম্প, জরাজীর্ণ পানির লাইন, অকেজো ফ্লাশিং ব্যবস্থা এবং অপরিষ্কার পরিবেশ শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম কারণ। কিশোরী শিক্ষার্থীদের জরুরি প্রয়োজন মেটানোর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারাও একই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনেকেই অর্থ সংকটের কথা বললেও এটি একমাত্র কারণ নয়। শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করা বিদ্যালয় প্রশাসনের অন্যতম দায়িত্ব, যা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে উপেক্ষা করা হচ্ছে। সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার আশ্বাস থাকলেও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপের অভাব প্রকট। প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যদি সক্রিয় হতেন, তবে এত দীর্ঘদিন এ সমস্যা বিদ্যমান থাকতো না।
সরকারকে অবশ্যই প্রতিটি বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ও হাইজেনিক কর্ণার স্থাপনের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিদ্যালয়গুলোর পরিচালনা কমিটিকে বাধ্যতামূলকভাবে শৌচাগার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে হবে। যদি তারা এ বিষয়ে অবহেলা করে, তবে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে এবং অভিভাবকদেরও এ বিষয়ে সম্পৃক্ত করতে হবে।
শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদাগুলো উপেক্ষিত হলে তাদের ভবিষ্যৎও বাধাগ্রস্ত হবে। তাই বাগাতিপাড়া উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে শিক্ষার পরিবেশ আরও নাজুক হয়ে পড়বে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব করা।