alt

সম্পাদকীয়

লামায় শ্রমিক অপহরণ : প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা

: সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মুরুংঝিরি এলাকায় রাবারবাগানের ২৬ জন শ্রমিকের অপহরণ এবং পরবর্তীতে মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের মুক্তি দেশের পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এই ঘটনা কেবল একটি বিচ্ছিন্ন অপরাধ নয়, বরং একটি সংঘবদ্ধ চক্রের কার্যক্রমের সুস্পষ্ট প্রমাণ, যারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই অপহরণকারী চক্রটি চলতি বছরের শুরু থেকেই সক্রিয়। এই চক্র জানুয়ারি মাসে সরই ইউনিয়নে তামাক খেত থেকে শ্রমিকদেরও একইভাবে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, পার্বত্য এলাকার এমন দুর্গম স্থানে কীভাবে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র এতদিন ধরে নির্বিঘেœ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারল। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা কেন এতদিন এই চক্রের কার্যক্রম ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে? অপহরণের পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উদ্ধার অভিযান সত্ত্বেও শ্রমিকদের মুক্তিপণের মাধ্যমেই আসতে হয়েছে, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে।

লামার মতো দুর্গম পার্বত্য এলাকা অপরাধীদের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেয় ঠিকই, কিন্তু এটি কোনোভাবেই প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অজুহাত হতে পারে না। রাবারবাগান ও তামাক খেতের শ্রমিকরা এই অঞ্চলের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে এলাকার উন্নয়ন ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, তা দূর করতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চক্রের একাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে শুধু গ্রেপ্তারেই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; এ ধরনের অপরাধের মূল কারণÑদারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, এবং পার্বত্য অঞ্চলের সীমিত নজরদারি মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমন্বয় করে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো, পাহাড়ি এলাকায় নিয়মিত টহল দেয়া এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

লামার এই অপহরণ সংকট শুধু আইনশৃঙ্খলার বিষয় নয়, এটি একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটও বটে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই ঘটনাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর কৌশল গ্রহণ করা। শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও এলাকার শান্তি ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি।

গণরোষের নামে নৃশংসতা : কোথায় সমাধান?

গাছের জীবন রক্ষায় এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

প্রকাশ্যে ধূমপান, মবের সংস্কৃতি এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বয়ান

চট্টগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

রেলওয়ের তেল চুরি ও কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা

মহাসড়কে নিরাপত্তাহীনতা ও পুলিশের দায়িত্বে শৈথিল্য

দেওয়ানগঞ্জ ডাম্পিং স্টেশন প্রকল্প : দায়িত্বহীনতার প্রতিচ্ছবি

রেলপথে নিরাপত্তাহীনতা : চুরি ও অব্যবস্থাপনার দুষ্টচক্র

সবজি সংরক্ষণে হিমাগার : কৃষকদের বাঁচানোর জরুরি পদক্ষেপ

অমর একুশে

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় উদাসীনতা কাম্য নয়

আইনশৃঙ্খলার অবনতি : নাগরিক নিরাপত্তা কোথায়?

বাগাতিপাড়ার বিদ্যালয়গুলোর শৌচাগার সংকট দূর করুন

হাসপাতালগুলোতে জনবল সংকট দূর করুন

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় উদাসীনতা কাম্য নয়

নতুন পাঠ্যবই বিতরণে ধীরগতি : শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে

সরকারি জমি রক্ষায় উদাসীনতা কাম্য নয়

সার বিপণনে অনিয়মের অভিযোগ, ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতার অভিশাপ : পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন ও দুর্ভোগ

সেতুর জন্য আর কত অপেক্ষা

শবে বরাত: আত্মশুদ্ধির এক মহিমান্বিত রাত

অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই সংকট : ব্যর্থতার দায় কার?

মাদারীপুর পৌরসভায় ডাম্পিং স্টেশন কবে হবে

বায়ুদূষণ : আর উপেক্ষা করা যায় না

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাঁকড়া শিকার : সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে

যৌতুকের বলি : বৈশাখীর নির্মম পরিণতি ও আমাদের করণীয়

কেশবপুরে ওএমএস কর্মসূচির সংকট

শিক্ষক সংকট : প্রাথমিক শিক্ষার চ্যালেঞ্জ

নদীভাঙনের শিকার শিক্ষার্থীরা কোথায় যাবে?

আবারও অপহরণের ঘটনা : সমাধান কী

সারের কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে

ভোটার তালিকা হালনাগাদ : কিছু প্রশ্ন

চায়নাদুয়ারী ও কারেন্টজাল ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিন

পাহাড়-টিলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

জলমহাল দখল : জেলেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

tab

সম্পাদকীয়

লামায় শ্রমিক অপহরণ : প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের মুরুংঝিরি এলাকায় রাবারবাগানের ২৬ জন শ্রমিকের অপহরণ এবং পরবর্তীতে মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের মুক্তি দেশের পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এই ঘটনা কেবল একটি বিচ্ছিন্ন অপরাধ নয়, বরং একটি সংঘবদ্ধ চক্রের কার্যক্রমের সুস্পষ্ট প্রমাণ, যারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই অপহরণকারী চক্রটি চলতি বছরের শুরু থেকেই সক্রিয়। এই চক্র জানুয়ারি মাসে সরই ইউনিয়নে তামাক খেত থেকে শ্রমিকদেরও একইভাবে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, পার্বত্য এলাকার এমন দুর্গম স্থানে কীভাবে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র এতদিন ধরে নির্বিঘেœ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারল। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা কেন এতদিন এই চক্রের কার্যক্রম ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে? অপহরণের পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উদ্ধার অভিযান সত্ত্বেও শ্রমিকদের মুক্তিপণের মাধ্যমেই আসতে হয়েছে, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে।

লামার মতো দুর্গম পার্বত্য এলাকা অপরাধীদের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেয় ঠিকই, কিন্তু এটি কোনোভাবেই প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অজুহাত হতে পারে না। রাবারবাগান ও তামাক খেতের শ্রমিকরা এই অঞ্চলের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে এলাকার উন্নয়ন ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, তা দূর করতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চক্রের একাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে শুধু গ্রেপ্তারেই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; এ ধরনের অপরাধের মূল কারণÑদারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, এবং পার্বত্য অঞ্চলের সীমিত নজরদারি মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমন্বয় করে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো, পাহাড়ি এলাকায় নিয়মিত টহল দেয়া এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

লামার এই অপহরণ সংকট শুধু আইনশৃঙ্খলার বিষয় নয়, এটি একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটও বটে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই ঘটনাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর কৌশল গ্রহণ করা। শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও এলাকার শান্তি ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি।

back to top