এ বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশে অতিদারিদ্র্যের কাতারে সামিল হতে পারে আরও ৩০ লাখ মানুষ। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে অতিদারিদ্র্যের হার ৯.৩ শতাংশে পৌঁছাবে এবং জাতীয় দারিদ্র্য হার বেড়ে ২২.৯ শতাংশে উন্নীত হওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছে। দেশের কোনো কোনো বিশ্লেষকও বলছেন দারিদ্র্য পরিস্থিতি ‘নাজুক’ হয়ে উঠছে।
দেশের মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। শ্রমবাজার দুর্বল হয়ে পড়েছে। ধীর হয়ে গেছে সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকা-। বৈশ্বিক মহামারী নোভেল করোনা ভাইরাসের পর থেকেই এই প্রবণতা দেখা দিয়েছে।
মূল্যস্ফীতি টানা তিন বছরের বেশি সময় ধরে মজুরি বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে গেছে, ফলে সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় ক্রমাগত কমছে। একই সঙ্গে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়া, অনানুষ্ঠানিক খাতের অনিরাপদ কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগের স্থবিরতা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী এমন পরিস্থিতিতে আছে যেখানে সামান্য ‘টোকা’ দিলেই তারা দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়ে যায়। অর্থাৎ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অসুস্থতা, কিংবা সামান্য আয় কমার ধাক্কায় কোটি কোটি মানুষ জীবিকার চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শুধু জাতীয় দারিদ্র্যই নয়, অতিদারিদ্র্যের হারও বাড়ছে। দিনে ২.১৫ ডলারের কম আয়ে জীবনযাপন করতে হচ্ছেÑ এমন মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১ কোটি ৫৮ লাখে দাঁড়াতে পারে। আর দরিদ্রের মোট সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ৩ কোটি ৯০ লাখে।
গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশ দারিদ্র্য নিরসনে বিশ্বে অনুকরণীয় ছিল, আজ সেই অগ্রগতি বিপরীতমুখী ঝুঁকিতে পড়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতির যে বর্ণনা এতদিন প্রচলিত ছিল, তার মধ্যে ফাঁকফোকর রয়েছে। অনেকেই কাগজে-কলমে দারিদ্র্যের বাইরে মনে হলেও বাস্তবে তারা চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন।
অর্থনীতিবিদদের মতে, চলতি বছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৩ শতাংশে নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে। একদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, অন্যদিকে বিনিয়োগ স্থবিরতা এবং শ্রমবাজারের দুর্বলতাÑ সমষ্টিগতভাবে অর্থনীতিতে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ কী। বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন বাজেটে দুর্নীতি ও অপচয় রোধ, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের প্রসার এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। গরিব ও নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বজায় রাখতে সরাসরি সহায়তা বাড়াতে হবে।
অর্থনীতিতে আস্থা ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, এবং অর্থনৈতিক কর্মকা-ে গতি আনাই এখন সবচেয়ে জরুরি।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: দেশে ইমিল্যাবের স্মার্ট হোম সিকিউরিটি ক্যামেরা আনলো সেলেক্সট্রা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: সিনেমা, গেম ও স্ট্রিমিংয়ে বাড়ছে এইআই-নির্ভর সাইবার হুমকি
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: বাংলাদেশের বাজারে নতুন স্মার্টফোন হেলিও ৫৫