alt

সম্পাদকীয়

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

: মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

দেশের পূর্বাঞ্চলের এক অনুপম প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট আজ নিঃশব্দে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী এই সংরক্ষিত বনাঞ্চল একসময় ১,১৫২ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত ছিল, বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৩৫ বর্গকিলোমিটারে।

পাথারিয়ার চিরসবুজ অরণ্য শুধু বনজ সম্পদের আধার নয়, এটি ছিল এশিয়ার অন্যতম জীববৈচিত্র্য হটস্পট ইন্দো-বার্মা অঞ্চলের অংশ। এখানে বাস করত বাঘ, গ-ার, বুনো মোষ, এশীয় হাতি, সজারু, উল্লুক, ফেরেট ব্যাজার, বাঁশ ভাল্লুকসহ বহু বিপন্ন প্রাণী। আজ তাদের অধিকাংশই বিলুপ্তির মুখে। খাদ্য ও নিরাপদ আবাসস্থলের অভাবে যে কয়টি প্রাণী এখনও টিকে আছে, তারাও ক্রমাগত লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।

বনের ক্ষয়ের কারণ সুস্পষ্টÑ মানুষের আগ্রাসন, প্রভাবশালী মহলের দখলদারিত্ব, বনজ সম্পদের লুণ্ঠন, এবং বন বিভাগের গাফিলতি। হাজার হাজার একর বনভূমি দখল, আগুন দিয়ে বন ধ্বংস, সরকারি গাছপালা সাবাড়ের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠলেও কার্যকর কোনো রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা দেখা যায়নি।

পাথারিয়া পাহাড়ে বিগত দশকগুলোতে বন বিভাগ যে কৃত্রিম বনায়নের উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রাণীদের জন্য বিপরীত ফল বয়ে এনেছে। স্থানীয় প্রাকৃতিক গাছ ও ফলজ উদ্ভিদ কেটে ফেলার ফলে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে, আবাস হারিয়ে প্রাণীরা আরও গভীর সংকটে পড়েছে। আবার সীমান্তবর্তী বনাঞ্চলে শিকারিদের অনুপ্রবেশ এবং বন বিভাগের নীরবতা প্রশ্ন তোলে তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে।

পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্টকে সম্পূর্ণভাবে মানুষ ও দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। অবশিষ্ট প্রাকৃতিক বনাঞ্চলকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করতে হবে। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সুরক্ষায় বনের ভেতর কৃত্রিম বনায়নের পরিবর্তে স্থানীয় প্রজাতির উদ্ভিদ রোপণ ও প্রাকৃতিক পুনর্জীবনের ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় সীমানা পর্যবেক্ষণ বাড়িয়ে শিকার প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বন রক্ষায় প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক সদিচ্ছা। দখলদারদের আইনের আওতায় এনে বন দখলকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পাথারিয়া পাহাড় শুধু বড়লেখা কিংবা মৌলভীবাজারের নয়, এটি আমাদের জাতীয় পরিবেশ ঐতিহ্যের অংশ।

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

tab

সম্পাদকীয়

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

দেশের পূর্বাঞ্চলের এক অনুপম প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট আজ নিঃশব্দে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী এই সংরক্ষিত বনাঞ্চল একসময় ১,১৫২ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত ছিল, বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৩৫ বর্গকিলোমিটারে।

পাথারিয়ার চিরসবুজ অরণ্য শুধু বনজ সম্পদের আধার নয়, এটি ছিল এশিয়ার অন্যতম জীববৈচিত্র্য হটস্পট ইন্দো-বার্মা অঞ্চলের অংশ। এখানে বাস করত বাঘ, গ-ার, বুনো মোষ, এশীয় হাতি, সজারু, উল্লুক, ফেরেট ব্যাজার, বাঁশ ভাল্লুকসহ বহু বিপন্ন প্রাণী। আজ তাদের অধিকাংশই বিলুপ্তির মুখে। খাদ্য ও নিরাপদ আবাসস্থলের অভাবে যে কয়টি প্রাণী এখনও টিকে আছে, তারাও ক্রমাগত লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।

বনের ক্ষয়ের কারণ সুস্পষ্টÑ মানুষের আগ্রাসন, প্রভাবশালী মহলের দখলদারিত্ব, বনজ সম্পদের লুণ্ঠন, এবং বন বিভাগের গাফিলতি। হাজার হাজার একর বনভূমি দখল, আগুন দিয়ে বন ধ্বংস, সরকারি গাছপালা সাবাড়ের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠলেও কার্যকর কোনো রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা দেখা যায়নি।

পাথারিয়া পাহাড়ে বিগত দশকগুলোতে বন বিভাগ যে কৃত্রিম বনায়নের উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রাণীদের জন্য বিপরীত ফল বয়ে এনেছে। স্থানীয় প্রাকৃতিক গাছ ও ফলজ উদ্ভিদ কেটে ফেলার ফলে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে, আবাস হারিয়ে প্রাণীরা আরও গভীর সংকটে পড়েছে। আবার সীমান্তবর্তী বনাঞ্চলে শিকারিদের অনুপ্রবেশ এবং বন বিভাগের নীরবতা প্রশ্ন তোলে তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে।

পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্টকে সম্পূর্ণভাবে মানুষ ও দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে। অবশিষ্ট প্রাকৃতিক বনাঞ্চলকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করতে হবে। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সুরক্ষায় বনের ভেতর কৃত্রিম বনায়নের পরিবর্তে স্থানীয় প্রজাতির উদ্ভিদ রোপণ ও প্রাকৃতিক পুনর্জীবনের ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় সীমানা পর্যবেক্ষণ বাড়িয়ে শিকার প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বন রক্ষায় প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক সদিচ্ছা। দখলদারদের আইনের আওতায় এনে বন দখলকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পাথারিয়া পাহাড় শুধু বড়লেখা কিংবা মৌলভীবাজারের নয়, এটি আমাদের জাতীয় পরিবেশ ঐতিহ্যের অংশ।

back to top