alt

সম্পাদকীয়

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

: শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

নিরপেক্ষ ও নৈতিক সাংবাদিকতার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৫১ সালের ১৭ মে আত্মপ্রকাশ করেছিল ‘সংবাদ’। প্রথম সংখ্যার সম্পাদকীয়তে ঘোষিত হয়েছিল এক অনাড়ম্বর প্রত্যয়Ñ“নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সকল অবস্থায় সত্য প্রকাশ করাই আমাদের আদর্শ।”

আজ, সেই যাত্রার ৭৪ বছর অতিক্রম করে সংবাদ পা রাখল পঁচাত্তরে। বাংলাদেশের গণমাধ্যম ইতিহাসে এটি নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই দীর্ঘ পথচলায় সংবাদকে মোকাবিলা করতে হয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা ও সংকট। আমাদের দেশে সংবাদমাধ্যমের টিকে থাকা কখনোই সহজ ছিল নাÑআজও নয়। নানান চ্যালেঞ্জের ভেতর দিয়েই পত্রিকাগুলোকে এগিয়ে যেতে হয়, আর সংবাদ বরাবরই সেই প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রামী মনোভাব নিয়ে পথ চলেছে।

প্রকাশের এক বছরের মাথায়, অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে ‘সংবাদ’ ১৯৫২ সালে মুসলিম লীগের হাতে চলে যায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের পরাজয়ের পর মালিকানা পরিবর্তন হলে সংবাদ নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পায়, শুরু হয় পুনর্জন্মের ইতিহাস।

ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ‘সংবাদ’ শুরু থেকেই রেখেছে স্পষ্ট ও বলিষ্ঠ অবস্থান। ১৯৬৪ সালে সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংস হামলার সময়ে সংবাদ-এর শিরোনাম ছিলÑ“শান্তির স্বপক্ষে রুখিয়া দাঁড়াও”Ñযা শুধু সাহসী সাংবাদিকতার নিদর্শনই নয়, ছিল এক মানবিক প্রতিবাদ। এমনকি মুসলিম লীগের মালিকানাতেও সংবাদ অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থানে একটুও ছাড় দেয়নি।

দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সংবাদ ছিল সরব ও সোচ্চার। বাঙালির মুক্তির প্রত্যাশা, যন্ত্রণার দিনলিপি এবং গণতন্ত্রের দাবি বারবার প্রতিধ্বনিত হয়েছে এই পত্রিকার পাতায়। ১৯৭১ সালের ৮ মার্চ সংবাদ-এর ব্যানারে ছাপা হয়েছিল ঐতিহাসিক ঘোষণাÑ“এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”।

এই নির্ভীক অবস্থানের মূল্যও দিতে হয়েছে সংবাদ-কে। একাত্তরের ২৮ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী সংবাদ অফিস জ্বালিয়ে দেয়। আগুনে প্রাণ হারান বরেণ্য সাংবাদিক শহীদ সাবের। বন্ধ হয়ে যায় পত্রিকার প্রকাশনা। পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশেও সংবাদ-এর প্রকাশনায় বাধা এসেছে, কিন্তু প্রতিবারই পত্রিকাটি নতুনভাবে জেগে উঠেছে, ফিরে এসেছে দায়িত্ব ও দায়বোধের দীপ্ত অঙ্গীকার নিয়ে।

সাত দশকের অধিক সময় ধরে সংবাদ-এর অবিচল টিকে থাকা শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নয়, বরং এটি আমাদের গণমাধ্যম ও মুক্ত চিন্তার চর্চার ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধ, মানবতা, গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান, এবং দলনিরপেক্ষভাবে সংবাদ ও মত প্রকাশÑএই নীতিকে আমরা অতীতেও লালন করেছি, আজও করছি, আগামীতেও করব।

আমাদের লক্ষ্য এখনও একইÑদলনিরপেক্ষভাবে সংবাদ পরিবেশন করা। আর আদর্শÑসব পরিস্থিতিতেই সত্য প্রকাশ করা।

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

tab

সম্পাদকীয়

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

নিরপেক্ষ ও নৈতিক সাংবাদিকতার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৫১ সালের ১৭ মে আত্মপ্রকাশ করেছিল ‘সংবাদ’। প্রথম সংখ্যার সম্পাদকীয়তে ঘোষিত হয়েছিল এক অনাড়ম্বর প্রত্যয়Ñ“নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সকল অবস্থায় সত্য প্রকাশ করাই আমাদের আদর্শ।”

আজ, সেই যাত্রার ৭৪ বছর অতিক্রম করে সংবাদ পা রাখল পঁচাত্তরে। বাংলাদেশের গণমাধ্যম ইতিহাসে এটি নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই দীর্ঘ পথচলায় সংবাদকে মোকাবিলা করতে হয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা ও সংকট। আমাদের দেশে সংবাদমাধ্যমের টিকে থাকা কখনোই সহজ ছিল নাÑআজও নয়। নানান চ্যালেঞ্জের ভেতর দিয়েই পত্রিকাগুলোকে এগিয়ে যেতে হয়, আর সংবাদ বরাবরই সেই প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রামী মনোভাব নিয়ে পথ চলেছে।

প্রকাশের এক বছরের মাথায়, অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে ‘সংবাদ’ ১৯৫২ সালে মুসলিম লীগের হাতে চলে যায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের পরাজয়ের পর মালিকানা পরিবর্তন হলে সংবাদ নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পায়, শুরু হয় পুনর্জন্মের ইতিহাস।

ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ‘সংবাদ’ শুরু থেকেই রেখেছে স্পষ্ট ও বলিষ্ঠ অবস্থান। ১৯৬৪ সালে সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংস হামলার সময়ে সংবাদ-এর শিরোনাম ছিলÑ“শান্তির স্বপক্ষে রুখিয়া দাঁড়াও”Ñযা শুধু সাহসী সাংবাদিকতার নিদর্শনই নয়, ছিল এক মানবিক প্রতিবাদ। এমনকি মুসলিম লীগের মালিকানাতেও সংবাদ অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থানে একটুও ছাড় দেয়নি।

দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সংবাদ ছিল সরব ও সোচ্চার। বাঙালির মুক্তির প্রত্যাশা, যন্ত্রণার দিনলিপি এবং গণতন্ত্রের দাবি বারবার প্রতিধ্বনিত হয়েছে এই পত্রিকার পাতায়। ১৯৭১ সালের ৮ মার্চ সংবাদ-এর ব্যানারে ছাপা হয়েছিল ঐতিহাসিক ঘোষণাÑ“এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”।

এই নির্ভীক অবস্থানের মূল্যও দিতে হয়েছে সংবাদ-কে। একাত্তরের ২৮ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী সংবাদ অফিস জ্বালিয়ে দেয়। আগুনে প্রাণ হারান বরেণ্য সাংবাদিক শহীদ সাবের। বন্ধ হয়ে যায় পত্রিকার প্রকাশনা। পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশেও সংবাদ-এর প্রকাশনায় বাধা এসেছে, কিন্তু প্রতিবারই পত্রিকাটি নতুনভাবে জেগে উঠেছে, ফিরে এসেছে দায়িত্ব ও দায়বোধের দীপ্ত অঙ্গীকার নিয়ে।

সাত দশকের অধিক সময় ধরে সংবাদ-এর অবিচল টিকে থাকা শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নয়, বরং এটি আমাদের গণমাধ্যম ও মুক্ত চিন্তার চর্চার ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধ, মানবতা, গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান, এবং দলনিরপেক্ষভাবে সংবাদ ও মত প্রকাশÑএই নীতিকে আমরা অতীতেও লালন করেছি, আজও করছি, আগামীতেও করব।

আমাদের লক্ষ্য এখনও একইÑদলনিরপেক্ষভাবে সংবাদ পরিবেশন করা। আর আদর্শÑসব পরিস্থিতিতেই সত্য প্রকাশ করা।

back to top