পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু দেশের কিছু এলাকায় এই পানিই জীবনহানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দুধপাতিলা ও ডিহিকৃষ্ণপুর গ্রামে আর্সেনিক দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থা শুধু স্থানীয় সমস্যা নয়, বরং জাতীয় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য এক বড় ধরনের সতর্ক সংকেত।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানবসৃষ্ট দূষণের কারণে পানির উৎসগুলো ক্রমাগত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কৃষিজমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, জলাশয়ে বিষপ্রয়োগ এবং ভূগর্ভস্থ পানির অনিয়ন্ত্রিত উত্তোলন এ দূষণকে আরও তীব্র করছে। ২০০৩ সালের এক সমীক্ষা বলছে, তখন দেশের প্রায় ২৯ শতাংশ নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গিয়েছিল। ২০ বছর পর সেই হার কমে ১৪ শতাংশে এলেও আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের সংখ্যা এখনো ৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি।
আর্সেনিক সমস্যার একটি বড় কারণ হলো পর্যাপ্ত ও হালনাগাদ তথ্যের অভাব। জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে আক্রান্ত মানুষের কোনো স্পষ্ট পরিসংখ্যান নেই। প্রাযুক্তিক সমাধান, স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ এবং প্রশিক্ষণ ছাড়া এই সমস্যার কার্যকর মোকাবিলা সম্ভব নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবস্থাপনায় আমাদের আরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। খনিজসমৃদ্ধ গভীর স্তরের পানিকে বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে চিহ্নিত করে তা ব্যবহারের দিকে যেতে হবে। স্থানীয় জলাধারগুলোকে পরিশোধনের উপযোগী করে তুলতে হবে। একই সঙ্গে দরকার বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফলকে নীতিনির্ধারণে গুরুত্ব দেয়া।
এই পরিস্থিতিতে জরুরি কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। সব নলকূপ পরীক্ষা করে মানদ- অনুযায়ী শ্রেণীবিন্যাস করতে হবে। আর্সেনিক আক্রান্ত এলাকাগুলোতে নতুন আর্সেনিকমুক্ত পানির উৎস স্থাপন। আক্রান্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য জেলা পর্যায়ে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
আর্সেনিক দূষণ একটি নীরব সংকট। এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি ও প্রাণঘাতী। বিষয়টিকে যদি যথাযথ গুরুত্ব দেয়া না হয়, তবে অদূর ভবিষ্যতে দেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করবে। তাই দ্রুত এবং সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়া এখন সময়ের দাবি।
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু দেশের কিছু এলাকায় এই পানিই জীবনহানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দুধপাতিলা ও ডিহিকৃষ্ণপুর গ্রামে আর্সেনিক দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থা শুধু স্থানীয় সমস্যা নয়, বরং জাতীয় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য এক বড় ধরনের সতর্ক সংকেত।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানবসৃষ্ট দূষণের কারণে পানির উৎসগুলো ক্রমাগত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। কৃষিজমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, জলাশয়ে বিষপ্রয়োগ এবং ভূগর্ভস্থ পানির অনিয়ন্ত্রিত উত্তোলন এ দূষণকে আরও তীব্র করছে। ২০০৩ সালের এক সমীক্ষা বলছে, তখন দেশের প্রায় ২৯ শতাংশ নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গিয়েছিল। ২০ বছর পর সেই হার কমে ১৪ শতাংশে এলেও আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের সংখ্যা এখনো ৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি।
আর্সেনিক সমস্যার একটি বড় কারণ হলো পর্যাপ্ত ও হালনাগাদ তথ্যের অভাব। জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে আক্রান্ত মানুষের কোনো স্পষ্ট পরিসংখ্যান নেই। প্রাযুক্তিক সমাধান, স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ এবং প্রশিক্ষণ ছাড়া এই সমস্যার কার্যকর মোকাবিলা সম্ভব নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবস্থাপনায় আমাদের আরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। খনিজসমৃদ্ধ গভীর স্তরের পানিকে বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে চিহ্নিত করে তা ব্যবহারের দিকে যেতে হবে। স্থানীয় জলাধারগুলোকে পরিশোধনের উপযোগী করে তুলতে হবে। একই সঙ্গে দরকার বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফলকে নীতিনির্ধারণে গুরুত্ব দেয়া।
এই পরিস্থিতিতে জরুরি কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। সব নলকূপ পরীক্ষা করে মানদ- অনুযায়ী শ্রেণীবিন্যাস করতে হবে। আর্সেনিক আক্রান্ত এলাকাগুলোতে নতুন আর্সেনিকমুক্ত পানির উৎস স্থাপন। আক্রান্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য জেলা পর্যায়ে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
আর্সেনিক দূষণ একটি নীরব সংকট। এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি ও প্রাণঘাতী। বিষয়টিকে যদি যথাযথ গুরুত্ব দেয়া না হয়, তবে অদূর ভবিষ্যতে দেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করবে। তাই দ্রুত এবং সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়া এখন সময়ের দাবি।