দেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা এখন ৮৩ লাখে পৌঁছেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ মাদকাসক্ত। ২০১৮ সালের তুলনায় এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ কতটা কার্যকর সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের ৩২টি সীমান্তবর্তী জেলা দিয়ে নানা উৎস থেকে মাদক প্রবেশ করছে। গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল, গোল্ডেন ক্রিসেন্ট বা ভারত-মিয়ানমার সংযোগপথ থেকে ইয়াবা, ফেনসিডিল, ক্রিস্টাল মেথের এত মারাত্মক মাদক দেশে অনুপ্রবেশ করছে। অথচ চিহ্নিত ১০৪টি ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত পয়েন্টে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা এখনো যথেষ্ট নয়।
মাদক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি স্পষ্ট। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সময় শুধু ছোট খুচরা ব্যবসায়ী বা মাদকসেবীদের আটক করে; কিন্তু বড় মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারদের ধরতে ব্যর্থ হয়। এমনকি বিচারিক প্রক্রিয়াও প্রশ্নবিদ্ধ। ২০২৪ সালে হওয়া মাদক মামলার অর্ধেকেই সব আসামি খালাস পেয়েছেন।
মাদক শুধু আইনশৃঙ্খলা নয়, জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্যও বড় হুমকি। জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রতি বছর মাদকের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাদক শুধু জীবন ধ্বংস করছে না, বৈধ অর্থনীতির বাইরে গিয়ে অপরাধ অর্থনীতিকে পুষ্ট করছে। এছাড়া মাদকাসক্তির ফলে তরুণ সমাজ কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে, এবং চিকিৎসায় রাষ্ট্র ও সমাজের বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে।
চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রেও ঘাটতি প্রকট। সরকারি পর্যায়ে মাত্র ২৭৯ জনকে একসঙ্গে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা বেশি, কিন্তু সেগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সরকার ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি বিভাগীয় মাদক নিরাময় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে, যা প্রশংসনীয়, তবে যথাসময়ে ও কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।
মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইকে শুধু পুলিশি ব্যবস্থা দিয়ে রোধ করা সম্ভব নয়। এ সংকট মোকাবেলায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং নাগরিক সচেতনতার সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। পাশাপাশি সীমান্ত নজরদারি জোরদার করা, বিচারিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করা এবং তরুণদের জন্য ইতিবাচক বিকল্প কার্যক্রম নিশ্চিত করা জরুরি।
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
দেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা এখন ৮৩ লাখে পৌঁছেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ মাদকাসক্ত। ২০১৮ সালের তুলনায় এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ কতটা কার্যকর সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের ৩২টি সীমান্তবর্তী জেলা দিয়ে নানা উৎস থেকে মাদক প্রবেশ করছে। গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল, গোল্ডেন ক্রিসেন্ট বা ভারত-মিয়ানমার সংযোগপথ থেকে ইয়াবা, ফেনসিডিল, ক্রিস্টাল মেথের এত মারাত্মক মাদক দেশে অনুপ্রবেশ করছে। অথচ চিহ্নিত ১০৪টি ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত পয়েন্টে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা এখনো যথেষ্ট নয়।
মাদক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি স্পষ্ট। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সময় শুধু ছোট খুচরা ব্যবসায়ী বা মাদকসেবীদের আটক করে; কিন্তু বড় মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারদের ধরতে ব্যর্থ হয়। এমনকি বিচারিক প্রক্রিয়াও প্রশ্নবিদ্ধ। ২০২৪ সালে হওয়া মাদক মামলার অর্ধেকেই সব আসামি খালাস পেয়েছেন।
মাদক শুধু আইনশৃঙ্খলা নয়, জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্যও বড় হুমকি। জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রতি বছর মাদকের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাদক শুধু জীবন ধ্বংস করছে না, বৈধ অর্থনীতির বাইরে গিয়ে অপরাধ অর্থনীতিকে পুষ্ট করছে। এছাড়া মাদকাসক্তির ফলে তরুণ সমাজ কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে, এবং চিকিৎসায় রাষ্ট্র ও সমাজের বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে।
চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রেও ঘাটতি প্রকট। সরকারি পর্যায়ে মাত্র ২৭৯ জনকে একসঙ্গে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা বেশি, কিন্তু সেগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সরকার ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি বিভাগীয় মাদক নিরাময় কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে, যা প্রশংসনীয়, তবে যথাসময়ে ও কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।
মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইকে শুধু পুলিশি ব্যবস্থা দিয়ে রোধ করা সম্ভব নয়। এ সংকট মোকাবেলায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং নাগরিক সচেতনতার সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। পাশাপাশি সীমান্ত নজরদারি জোরদার করা, বিচারিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করা এবং তরুণদের জন্য ইতিবাচক বিকল্প কার্যক্রম নিশ্চিত করা জরুরি।