দেশে বজ্রপাত এখন আর শুধু একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, এটি জনস্বাস্থ্যের একটি গুরুতর ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষ বজ্রপাতে প্রাণ হারান। মৃতদের অধিকাংশই কৃষক ও জেলে, যারা জীবিকার তাগিদে খোলা মাঠে বা জলাশয়ে কাজ করেন। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, কিশোরগঞ্জ ও গাইবান্ধার মতো জেলাগুলো বজ্রপাতপ্রবণ হওয়ায় সেখানকার জনগণ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
বজ্রপাতের হার গত কয়েক বছরে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বায়ুম-লীয় পরিবর্তনের ফলে এই প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। ফলে আগাম সতর্কতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর আচরণগত পরিবর্তন এবং বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। এ ক্ষেত্রে শুধু পূর্বাভাস দেয়া যথেষ্ট নয়, সঠিক বার্তা সঠিক সময়ে জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়াই সবচেয়ে জরুরি।
সরকার ইতোমধ্যে বজ্রপাত প্রতিরোধে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যেমনÑলাইটনিং অ্যারেস্টার স্থাপন, আগাম পূর্বাভাস প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং জনসচেতনতা কর্মসূচি। কিন্তু অ্যারেস্টার বসানোর পর তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকেজো হয়ে পড়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পায়ে কাজ করার চেয়ে রাবারের জুতা পরা কৃষকদের বজ্রপাত থেকে বাঁচার সম্ভাবনা বেশি। সাশ্রয়ী কিন্তু কার্যকর এই পদ্ধতি গ্রহণে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, মাঠে বাবলা বা খেজুরগাছের মতো স্থানীয় গাছ লাগানো এবং গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণ করাও হতে পারে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।
হাইকোর্ট বজ্রপাত প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, যা একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। কিন্তু শুধু কমিটি গঠন নয়, তার কার্যকারিতা নির্ভর করবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সক্ষমতা, সমন্বয় এবং জবাবদিহিতার ওপর। জনজীবনের সুরক্ষা দিতে হলে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় অপরিহার্য।
বজ্রপাত নিয়ে সরকারি উদ্যোগগুলোকে বাস্তবভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত করতে না পারলে মৃত্যু হার কমবে না। বরং পরিকল্পনার নামে অর্থ অপচয়ের ঝুঁকি আরও বাড়বে। জীবন বাঁচানোই যেখানে মূল লক্ষ্য, সেখানে লোক দেখানো প্রকল্প নয়, চাই কার্যকর সমাধান।
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
দেশে বজ্রপাত এখন আর শুধু একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, এটি জনস্বাস্থ্যের একটি গুরুতর ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষ বজ্রপাতে প্রাণ হারান। মৃতদের অধিকাংশই কৃষক ও জেলে, যারা জীবিকার তাগিদে খোলা মাঠে বা জলাশয়ে কাজ করেন। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, কিশোরগঞ্জ ও গাইবান্ধার মতো জেলাগুলো বজ্রপাতপ্রবণ হওয়ায় সেখানকার জনগণ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
বজ্রপাতের হার গত কয়েক বছরে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বায়ুম-লীয় পরিবর্তনের ফলে এই প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। ফলে আগাম সতর্কতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর আচরণগত পরিবর্তন এবং বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। এ ক্ষেত্রে শুধু পূর্বাভাস দেয়া যথেষ্ট নয়, সঠিক বার্তা সঠিক সময়ে জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়াই সবচেয়ে জরুরি।
সরকার ইতোমধ্যে বজ্রপাত প্রতিরোধে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যেমনÑলাইটনিং অ্যারেস্টার স্থাপন, আগাম পূর্বাভাস প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং জনসচেতনতা কর্মসূচি। কিন্তু অ্যারেস্টার বসানোর পর তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকেজো হয়ে পড়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পায়ে কাজ করার চেয়ে রাবারের জুতা পরা কৃষকদের বজ্রপাত থেকে বাঁচার সম্ভাবনা বেশি। সাশ্রয়ী কিন্তু কার্যকর এই পদ্ধতি গ্রহণে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, মাঠে বাবলা বা খেজুরগাছের মতো স্থানীয় গাছ লাগানো এবং গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণ করাও হতে পারে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।
হাইকোর্ট বজ্রপাত প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, যা একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। কিন্তু শুধু কমিটি গঠন নয়, তার কার্যকারিতা নির্ভর করবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সক্ষমতা, সমন্বয় এবং জবাবদিহিতার ওপর। জনজীবনের সুরক্ষা দিতে হলে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় অপরিহার্য।
বজ্রপাত নিয়ে সরকারি উদ্যোগগুলোকে বাস্তবভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত করতে না পারলে মৃত্যু হার কমবে না। বরং পরিকল্পনার নামে অর্থ অপচয়ের ঝুঁকি আরও বাড়বে। জীবন বাঁচানোই যেখানে মূল লক্ষ্য, সেখানে লোক দেখানো প্রকল্প নয়, চাই কার্যকর সমাধান।