alt

সম্পাদকীয়

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

: সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

দেশে বজ্রপাত এখন আর শুধু একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, এটি জনস্বাস্থ্যের একটি গুরুতর ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষ বজ্রপাতে প্রাণ হারান। মৃতদের অধিকাংশই কৃষক ও জেলে, যারা জীবিকার তাগিদে খোলা মাঠে বা জলাশয়ে কাজ করেন। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, কিশোরগঞ্জ ও গাইবান্ধার মতো জেলাগুলো বজ্রপাতপ্রবণ হওয়ায় সেখানকার জনগণ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।

বজ্রপাতের হার গত কয়েক বছরে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বায়ুম-লীয় পরিবর্তনের ফলে এই প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। ফলে আগাম সতর্কতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর আচরণগত পরিবর্তন এবং বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। এ ক্ষেত্রে শুধু পূর্বাভাস দেয়া যথেষ্ট নয়, সঠিক বার্তা সঠিক সময়ে জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়াই সবচেয়ে জরুরি।

সরকার ইতোমধ্যে বজ্রপাত প্রতিরোধে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যেমনÑলাইটনিং অ্যারেস্টার স্থাপন, আগাম পূর্বাভাস প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং জনসচেতনতা কর্মসূচি। কিন্তু অ্যারেস্টার বসানোর পর তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকেজো হয়ে পড়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পায়ে কাজ করার চেয়ে রাবারের জুতা পরা কৃষকদের বজ্রপাত থেকে বাঁচার সম্ভাবনা বেশি। সাশ্রয়ী কিন্তু কার্যকর এই পদ্ধতি গ্রহণে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, মাঠে বাবলা বা খেজুরগাছের মতো স্থানীয় গাছ লাগানো এবং গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণ করাও হতে পারে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।

হাইকোর্ট বজ্রপাত প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, যা একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। কিন্তু শুধু কমিটি গঠন নয়, তার কার্যকারিতা নির্ভর করবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সক্ষমতা, সমন্বয় এবং জবাবদিহিতার ওপর। জনজীবনের সুরক্ষা দিতে হলে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় অপরিহার্য।

বজ্রপাত নিয়ে সরকারি উদ্যোগগুলোকে বাস্তবভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত করতে না পারলে মৃত্যু হার কমবে না। বরং পরিকল্পনার নামে অর্থ অপচয়ের ঝুঁকি আরও বাড়বে। জীবন বাঁচানোই যেখানে মূল লক্ষ্য, সেখানে লোক দেখানো প্রকল্প নয়, চাই কার্যকর সমাধান।

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

tab

সম্পাদকীয়

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

দেশে বজ্রপাত এখন আর শুধু একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, এটি জনস্বাস্থ্যের একটি গুরুতর ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষ বজ্রপাতে প্রাণ হারান। মৃতদের অধিকাংশই কৃষক ও জেলে, যারা জীবিকার তাগিদে খোলা মাঠে বা জলাশয়ে কাজ করেন। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, কিশোরগঞ্জ ও গাইবান্ধার মতো জেলাগুলো বজ্রপাতপ্রবণ হওয়ায় সেখানকার জনগণ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।

বজ্রপাতের হার গত কয়েক বছরে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বায়ুম-লীয় পরিবর্তনের ফলে এই প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। ফলে আগাম সতর্কতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর আচরণগত পরিবর্তন এবং বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। এ ক্ষেত্রে শুধু পূর্বাভাস দেয়া যথেষ্ট নয়, সঠিক বার্তা সঠিক সময়ে জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়াই সবচেয়ে জরুরি।

সরকার ইতোমধ্যে বজ্রপাত প্রতিরোধে কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যেমনÑলাইটনিং অ্যারেস্টার স্থাপন, আগাম পূর্বাভাস প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং জনসচেতনতা কর্মসূচি। কিন্তু অ্যারেস্টার বসানোর পর তা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকেজো হয়ে পড়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পায়ে কাজ করার চেয়ে রাবারের জুতা পরা কৃষকদের বজ্রপাত থেকে বাঁচার সম্ভাবনা বেশি। সাশ্রয়ী কিন্তু কার্যকর এই পদ্ধতি গ্রহণে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, মাঠে বাবলা বা খেজুরগাছের মতো স্থানীয় গাছ লাগানো এবং গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণ করাও হতে পারে একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।

হাইকোর্ট বজ্রপাত প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, যা একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। কিন্তু শুধু কমিটি গঠন নয়, তার কার্যকারিতা নির্ভর করবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সক্ষমতা, সমন্বয় এবং জবাবদিহিতার ওপর। জনজীবনের সুরক্ষা দিতে হলে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় অপরিহার্য।

বজ্রপাত নিয়ে সরকারি উদ্যোগগুলোকে বাস্তবভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত করতে না পারলে মৃত্যু হার কমবে না। বরং পরিকল্পনার নামে অর্থ অপচয়ের ঝুঁকি আরও বাড়বে। জীবন বাঁচানোই যেখানে মূল লক্ষ্য, সেখানে লোক দেখানো প্রকল্প নয়, চাই কার্যকর সমাধান।

back to top