দেশের সড়কে চলাচলরত পুরোনো বাস ও ট্রাক জননিরাপত্তা, বায়ুদূষণ ও যানজটের অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, ২০ বছরের বেশি পুরোনো বাস এবং ২৫ বছরের বেশি পুরোনো ট্রাকের সংখ্যা ৮০ হাজারেরও বেশি। এসব যানবাহনের একটা বড় অংশ রংচটা, ফিটনেসবিহীন, ধোঁয়াযুক্ত এবং নানা যান্ত্রিক ত্রুটিতে ভরা। ফলে এগুলো শুধু পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য নয়, বরং সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও সরাসরি হুমকি।
অতীতেও সরকার এসব যানবাহন সড়ক থেকে অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর বাধা ও ধর্মঘটের হুমকির মুখে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। এবার অন্তর্বর্তী সরকার অভিযান চালিয়ে পুরোনো যান জব্দ ও ডাম্পিং করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা সময়োচিত। তবে এই উদ্যোগ যেন টেকসই হয়, সেজন্য বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।
পুরোনো যান উঠিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত যুক্তিসংগত হলেও এর বিকল্প কী হবে, সে প্রশ্নও সমান গুরুত্বপূর্ণ। মালিকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছেÑসরকার সহজ শর্তে নতুন যানবাহন কেনার জন্য ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিলেও এখনো বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো পরিপত্র জারি করেনি। পুরোনো গাড়ি স্ক্র্যাপ করার পর মালিকরা কীভাবে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিপূরণ পাবেন, সেই বিষয়েও স্পষ্টতা নেই। এমন পরিস্থিতিতে অভিযান পরিচালনা মালিক-শ্রমিকদের অসন্তোষ বাড়াতে পারে।
এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন সমন্বিত পরিকল্পনা। একদিকে যেমন সড়ক থেকে লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন তুলে দিতে হবে, অন্যদিকে মালিকদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ, স্ক্র্যাপ নীতিমালা এবং নতুন গাড়ি কেনায় প্রণোদনার মতো বাস্তবমুখী সহায়তা দিতে হবে। একই সঙ্গে পরিবহন খাতে দীর্ঘদিনের অনিয়ম, রুট পারমিট জটিলতা ও ফিটনেস জালিয়াতি রোধে প্রশাসনিক জবাবদিহি জোরদার করতে হবে।
সড়ক নিরাপত্তা, নাগরিক সেবা ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে পুরোনো যানবাহন অপসারণ অপরিহার্য। তবে এ উদ্যোগ শুধু অভিযানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে পরিবহন খাতকে কাঠামোগতভাবে সংস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দৃঢ়তা প্রয়োজন, তবে সেই সঙ্গে প্রয়োজন স্বচ্ছতা, বাস্তবতা ও অংশগ্রহণমূলক নীতিমালা। তবেই এ উদ্যোগ সফলতা পাবে এবং গণপরিবহন খাতে কাক্সিক্ষত শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
রোববার, ২০ জুলাই ২০২৫
দেশের সড়কে চলাচলরত পুরোনো বাস ও ট্রাক জননিরাপত্তা, বায়ুদূষণ ও যানজটের অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, ২০ বছরের বেশি পুরোনো বাস এবং ২৫ বছরের বেশি পুরোনো ট্রাকের সংখ্যা ৮০ হাজারেরও বেশি। এসব যানবাহনের একটা বড় অংশ রংচটা, ফিটনেসবিহীন, ধোঁয়াযুক্ত এবং নানা যান্ত্রিক ত্রুটিতে ভরা। ফলে এগুলো শুধু পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য নয়, বরং সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও সরাসরি হুমকি।
অতীতেও সরকার এসব যানবাহন সড়ক থেকে অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর বাধা ও ধর্মঘটের হুমকির মুখে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। এবার অন্তর্বর্তী সরকার অভিযান চালিয়ে পুরোনো যান জব্দ ও ডাম্পিং করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা সময়োচিত। তবে এই উদ্যোগ যেন টেকসই হয়, সেজন্য বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।
পুরোনো যান উঠিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত যুক্তিসংগত হলেও এর বিকল্প কী হবে, সে প্রশ্নও সমান গুরুত্বপূর্ণ। মালিকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছেÑসরকার সহজ শর্তে নতুন যানবাহন কেনার জন্য ঋণ দেয়ার ঘোষণা দিলেও এখনো বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো পরিপত্র জারি করেনি। পুরোনো গাড়ি স্ক্র্যাপ করার পর মালিকরা কীভাবে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিপূরণ পাবেন, সেই বিষয়েও স্পষ্টতা নেই। এমন পরিস্থিতিতে অভিযান পরিচালনা মালিক-শ্রমিকদের অসন্তোষ বাড়াতে পারে।
এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন সমন্বিত পরিকল্পনা। একদিকে যেমন সড়ক থেকে লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন তুলে দিতে হবে, অন্যদিকে মালিকদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ, স্ক্র্যাপ নীতিমালা এবং নতুন গাড়ি কেনায় প্রণোদনার মতো বাস্তবমুখী সহায়তা দিতে হবে। একই সঙ্গে পরিবহন খাতে দীর্ঘদিনের অনিয়ম, রুট পারমিট জটিলতা ও ফিটনেস জালিয়াতি রোধে প্রশাসনিক জবাবদিহি জোরদার করতে হবে।
সড়ক নিরাপত্তা, নাগরিক সেবা ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে পুরোনো যানবাহন অপসারণ অপরিহার্য। তবে এ উদ্যোগ শুধু অভিযানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে পরিবহন খাতকে কাঠামোগতভাবে সংস্কারের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দৃঢ়তা প্রয়োজন, তবে সেই সঙ্গে প্রয়োজন স্বচ্ছতা, বাস্তবতা ও অংশগ্রহণমূলক নীতিমালা। তবেই এ উদ্যোগ সফলতা পাবে এবং গণপরিবহন খাতে কাক্সিক্ষত শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।